আপনার মোটরসাইকেলে অধিক মাইলেজ পেতে যা করণীয়

বাইক কেনার সময় একটা বিষয় প্রায় সকল ক্রেতাকে ভাবিয়ে তোলে এবং একটা প্রশ্ন সবার মনে উঁকি দেয়। সেই প্রশ্নটি হলো এই বাইকটি লিটারে কত যায় অর্থাৎ প্রতি লিটার তেলে বাইকটি কতটুকু পথ অতিক্রম করতে পারে বা বাইকটির মাইলেজ কেমন। একটি বাইকে ভালো মাইলেজ পাওয়ার অনেক উপায় আছে এটি বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। আমরা এখানে এমনিই কিছু বিষয় জানবো।

বাইকের মাইলেজ নির্ভর করে সিসি এর উপর। অর্থাৎ ১৫০ সিসি বাইকে আপনি আপনি যে মাইলেজ পাবেন ১০০ সিসি এর বাইকে আপনি তার চেয়ে বেশি মাইলেজ পাবেন আবার ৮০ সিসি এর বাইকে ১০০ সিসি এর চেয়ে বেশি মাইলেজ পাবেন। সুতারং দেখা যাচ্ছে যে সিসি যত কমে মাইলেজ তত বাড়ে।

ভালো মাইলেজ পাওয়ার জন্য নিদৃষ্ট সময় পর পর আপনার বাইকের চাকা গুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করুন। কারন অনেক সময় বাইকের বেয়ারিং এ কাঁদা ঢুকে বা বেয়ারিং ভেংগে গিয়ে চাকার গতি কমিয়ে দিতে পারে। অনেক সময় ব্রেক খুব টাইট হওয়ায় ব্রেক চাকার সাথে লেগে থাকে ফলে গতি কমে যায়। এ কারনে নিদৃষ্ট সময় পর পর আপনার বাইকের চাকা গুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করুন।

আপনার বাইকের একটি অতি গুরুত্বপূর্ন জিনিস হলো কার্বোরেটর, কার্বোরেটরে ময়লা জমে অনেক সময় ফ্লট বোল নিডল এবং জেটে ধুলাবালি জমে এর ফলে মাইলেজ কমে যায় এবং জ্বালানি বেশি লাগে। তাই যথাসম্ভব কার্বোরেটর পরিষ্কার রাখতে হবে তাই আমাদের এই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

আপনার বাইকের রিং পিস্টোনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, রিং পিস্টোন ক্ষয় হলে বা দুর্বল হয়ে গেলে জ্বালানি বেশি খরচ হয়। তাই রিং পিস্টোনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বাইকের ভাল্ব যদি ময়লা হয় তাহলে এয়ার ফিল্টার বুজে যেতে পারে, তাই যথাসম্ভব ভাল্ব পরিষ্কার রাখতে হবে।

বাইকের চেন যদি খুব টাইট থাকে তাহলে চাকা জ্যাম হয়ে যায় এবং চাকা জ্যাম হওয়ার কারনে মাইলেজ কমে যায় ফলে জ্বালানি বেশি লাগে। এর ফলে আরও কিছু সমস্যা দেখা যায় যেমন চাকার বেয়ারিং ভেঙ্গে যেতে পারে এবং অতিরিক্ত টাইট থাকলে চলন্ত অবস্থায় চেন ছিড়ে গিয়ে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পাড়ে। তাই আপনি আপনার বাইকের ম্যনুয়াল দেখে সে অনুযায়ী চেইনটি টাইট করে রাখুন এবং চেইনে ভালো লুব্রিকেন্ট ব্যাবহার করুন।

ক্লাচপ্লেট যদি ঠিকঠাক না থাকে তাহলে ইঞ্জিনের জ্বালানি খরচ বেড়ে যায়। ক্লাচ প্লেট যদি ঠিকঠাক না থাকে ইঞ্জিন যথাযথভাবে কাজ করে না এবং ইঞ্জিনের উপর চাপ বেড়ে যায়।

Check bike tyre pump

বাইকের দুই টায়ারেই যেন কোম্পানী কতৃক ঠিক করে দেওয়া এয়ার প্রেশার থাকে, এয়ার প্রেশার এর কম বেশির ফলে জ্বালানি খরচ বেশি হয়। প্রতি ১৫ দিন পর পর এয়ার প্রেশার চেক করুন।

বাইক স্টার্ট করার প্রথম ৪০০ মিটার পর্যন্ত যথাসম্ভব আস্তে আস্তে যেতে হয়, স্টার্ট করার পর পর যদি একবারে গতি বাড়ানো হয় তাহলে জ্বালানি বেশি খরচ হয়। আবার বাইকের ম্যানুয়াল বুকে যে গিয়ার চেঞ্জ স্পিড দেওয়া আছে সেই স্পিডে গিয়ার চেঞ্জ করলে ভালো মাইলেজ পাওয়া যায়।

ব্রেক ও ক্লাচ যতটা সম্ভব কম ব্যাবহার করলে জ্বালানি খরচ কমে যায়। স্পিড কমানোর ক্ষেত্রে ক্লাচ পুল না করে পরবর্তি গিয়ার ব্যাবহার করুন এতে ব্রেক ও ক্লাচের ব্যাবহার কমে যায়।

কোম্পানী কতৃক নির্ধারিত ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করুন এবং জেনে নিন যে আপনার বাইকের জ্বালানি হিসেবে কোনটি ব্যাবহার করা উচিত। ভালো স্পার্ক প্লাগ ব্যাবহার করুন। এতে আপনার জ্বালানি খরচ কমে যাবে এবং বেশি মাইলেজ পাবেন।

তাছাড়া ভেজাল তেল, খারাপ ইঞ্জিন অয়েল আপনার বাইকটির মাইলেজ কমিয়ে দেয় তাই যতটা সম্ভব ভালো ইঞ্জিন অয়েল ও জ্বালানি ব্যাবহার করুন বেশি মাইলেজ পাওয়ার জন্য। অনেক সময় বিভিন্ন ছিদ্র দিয়ে তেল পরে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সবশেষে, সিগন্যালে যদি স্টার্ট বন্ধ করে না রাখা, বারবার ব্রেক করা, ব্রেক করে আবার সাথে সাথে স্পিড বাড়ানো এগুলো করার কারনে আপনার বাইকের মাইলেজ কমে যায়। তাই এগুলো খেয়াল রাখুন এবং বেশি মাইলেজ উপভোগ করুন।

মন্তব্য করুন