যে আবিষ্কারের উপর ভর করে এগিয়ে যাচ্ছে মানবসভ্যতা এবং যার আবিষ্কার মানুষের জীবনকে করেছে গতিশীল। সেই টি হলো চাকা। এই চাকার কারণেই তৈরি হয়েছে আধুনিক ইঞ্জিন আর আরামদায়ক সব যানবাহন। আমরা সব সময় দইু চাকা নিয়ে কথা বলি । চেষ্টা করি , যারা আমাদের মত দইু চাকায় ভর করে ঘুরে বেড়ায়, তাদের সাহায্য হয় এমন তথ্য দিতে। সেই সূত্র ধরেই আজ আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু,মোটরসাইকেলের টায়ার সিলেন্ট বা টায়ার জেল।
আজ আলোচনা করবো,
১) টায়ার সিলেন্ট কি?
২) টায়ার সিলেন্ট কেন ব্যবহার করবেন?
৩) এটি ব্যবহারের সাইড ইফেক্ট।
৪) এটি ব্যবহার করা উচিত কি না?
৫) বাংলাদেশে যে সব টায়ার ছিলেন পাওয়া যায় তার একটি লিস্ট।
৬) সাবধানতা।
১) টায়ার সিলেন্ট কি?
আমরা সকলেই জানি যে , টায়ার সাধারণ দইু ধরনের হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে টিউব টায়ার এবং অন্যটি হচ্ছে টিউবলেস টায়ার। দিন দিন টিউবলেস টায়ারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে আর প্রায় সকল মটোরসাইকেলেই ইদানিং টিউবলেস টায়ার দেখা যাচ্ছে। কারণ, টিউবলেস টায়ার যেমন রিপেয়ার করা সহজ, তেমনি টায়ার সিলেন্ট ব্যবহারের কারনে এতে বাড়তি এডভান্টেজ পাওয়া যায়। টায়ার সিলেন্ট মলূত একটি রাসায়নিক সংমিশ্রণ যেখানে মলূ উপাদান হচ্ছে লিকুইড এন্ড রাবার পার্টিকেল। বাতাসের অতিরিক্ত চাপ পেলেই এটি ওটোমেটিক জমাট বাঁধে এবং লিকেজ জায়গাটিকে সীল করে দেয়। টায়ার সিলেন্ট সাধারণত ৪-৬ মিলিমিটার পর্যন্ত লিকেজ অটোমেটিক রিপেয়ার করতে পারে। তবে এর চেয়ে বেশি হলে ক্ষত হলে সেক্ষেত্রে টায়ার সিলেন্ট কাজ করবে না। টায়ার জেল কোম্পানি গুলো ক্লেইম করে , এটি সাধারণত ৫০-৬০টি পর্যন্ত লিকেজ সারাতে সক্ষম। মনে রাখবেন, একটা ভাল মানের টায়ার জেল সাধারণত ১ বছর পর্যন্ত আপনাকে সাপোর্ট দেয়, এরপর সেটির কার্যকারীতা কমে যাবে। তাই আপনাকে নতুন করে আবার ইন্সটল করতে হবে ।
২) টায়ার সিলেন্ট কেন ব্যবহার করবেন?
রাস্তায় যখন হঠাৎ টায়ার পানচার হয় তখন আমরা খুব অসহায় ও বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ি। আর এই সমস্যা সমাধানের জন্যই মলূত টায়ার সিলেন্টের আবিষ্কার। “Prevention is better cure” ঠিক তেমনি অনাকাংখিত টায়ার পানচার রোধ করতেই আমরা টায়ার সিলেন্ট ব্যবহার করে থাকি ।
এছাড়াও এটি ব্যবহারে আরো কিছু কারণ হলোঃ
- টায়ার জেল ব্যবহার করার পরেও পানচার হওয়ার পার্সেন্টেজ অনেক কম যায়।
-
টায়ার বার্স্ট হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমিয়ে দেয়।
-
জেলের কারণে নজেল মোটামুটি সীল হয়ে থাকে, তাই টায়ার প্রেসার বা নির্দিষ্ট PSI ঠিক থাকে।
* টায়ার সালেন্ট পরোক্ষভাবে টায়ারের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করে।
- টায়ার জেলের ব্যবহারে অনেক সময় দুষ্কৃতিকারীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
-
টায়ার সিলেন্ট ব্যবহারে বাইকের রিম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে বাঁচে।
৩) এটি ব্যবহারের সাইড ইফেক্ট
নিউটনের সূত্র অনুযায়ী প্রতিটি ক্রিয়ার একটি বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই সূত্র ধরে বলা যায়, যে জিনিসের সুবিধা আছে সে জিনিসের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। টায়ার সিলেন্ট ব্যবহারে অনেকগুলো সুবিধা থাকলেও এটি ব্যবহারের কিছু সাইড ইফেক্ট আছে।
সাইড ইফেক্ট গুলো হলো:
- টায়ারের ওয়েট কিছুটা বাড়ে যার কারণে একটা বাইকের টপ স্পীড গেইন করতে একটু কষ্ট হতে পাড়ে।
-
ভাল মানের টায়ার জেল ব্যাবহার না করলে সেটা টায়ারের ভিতরে জমে যেতে পারে, যার কারণে ব্যালেন্সের ঘাটতি হতে পারে।
-
জেলের কারণে নজেল মোটামটিু সীল হয়ে যায়, তার কারণে একচুয়াল টায়ার প্রেসারের পরিমাপ করা যায় না।
আসলে হ্যাসেল ফ্রী রাইডিং এর জন্যে টায়ার জেল ব্যবহারে কোনো বিকল্প নেই।
৪) টায়ারে জেল ব্যবহার করা উচিত কি না?
মনে করুন, আপনি আপনার নতুন টায়ারে জেল ব্যবহার করলেন না। রাস্তায় হঠাত আপনার টায়ার পানচার হল, সে ক্ষেত্রে আপনাকে বাইকটি রিপেয়ার সেন্টার পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে, ঠেলে কিংবা ওই অবস্থায় বাইকটি চালিয়ে। এতে করে রিমের সাথে লেগে আপনার টায়ারের ভিতরে ক্ষত হতে পারে। লিক সারালেন কিন্তু আলটিমেটলি আপনার টায়ারটির ক্ষতি হল। আবার আপনি নাইট রাইড করছেন, হটাৎ আপনার টায়ার লিক হলো কিন্তু আসে পাশে ঘোর অন্ধকার ও নির্জনতা। কোনো সার্ভিস সেন্টারও খোলা নেই। সেক্ষেত্রে বিপদের মাত্রা টা একটু ভেবে দেখুন।
এটি ব্যবহারের উপকারিতা ও সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে আমাদের মতে, নতুন টায়ার ইন্সটল করার পর পরই টায়ার জেল ব্যবহার করা উত্তম।
৫) বাংলাদেশের যেসব টায়ার ছিলেন পাওয়া যায় তার লিস্ট:
৬) সাবধানতা:
- টায়ারের ইন্টারনাল ড্যামেজ বা ক্ষত হলে সেই টায়ারে আর জেল ব্যবহার না করাই উচিত। এতে টায়ারের টেম্পার কমে যায়।
-
একটি টায়ারের অবশ্যই আইডল এক বতল জেল ব্যবহার করা উচিত। এতে করে এর কার্যকারিতা অনেক বেড়ে যায়।
-
এক বছরের বেশি সময় একটি জেল ব্যবহার করা উচিত না। এই সময়কালে এই জেল থেকে সবথেকে বেশি ফিডব্যাক পাওয়া যায়।
-
নিম্নমানের টায়ার জেল ব্যবহারে কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যায় না, পক্ষান্তরে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আশাকরি, উপরোক্ত লেখাটি থেকে টায়ার জেল বা টায়ার সিলেন্ট সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা আপনারা লাভ করেছেন।
- SMK TITAN CARBON হেলমেটের ইউজার রিভিউ - অক্টোবর ১৩, ২০২৪
- SMK Stellar এর রিভিউ দিয়েছেন দেওয়ান সোহান - সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪
- গতকাল লঞ্চ হলো”Petronas Sprinta Ride Safe” ক্যাম্পেইন - সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪
You must be logged in to post a comment.