বাইক রিভিউ, চলে আসলাম আজকে আমর বাইকের সাথে কাটানো কিছু সুন্দর মূহুর্ত শেয়ার করতে, Hero Hunk 150(সিংগেল ডিস্ক)
আমি ফাহিম হোসেন তপু।একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করছি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। ছোট বেলা থেকে আমার সপ্ন ছিলো একটি সুন্দর বাইক কিনবো। সামনে দিয়ে বাইক গেলে তাকিয়ে থাকতাম আর ভাবতাম আমি ও একদিন সুন্দর একটা বাইক কিনবো। বাইকের ব্যাপারে খুঁটিনাটি দেখা শুরু করি ইন্টারনেটে। আমর ডিপ্লোমা শেষের পর কিছু টাকা পাই কলেজ থেকে তখনই মূলত বাইক কিনবো ফাইনাল করি এবং বাসায় জানাই।বাসার সবাই পজেটিভ রেস্পন্স দেয়। আব্বু,আম্মু,ভাইয়া,আপু সবার কন্ট্রিবিউটে কিনে ফেলি হিরো হাংক। যার ক্রয় মূল্য ছিলো ১৬৫০০০ টাকা। আগে থেকেই নজর ছিলো বাইকটার উপর।
এবার আশি মূল আলোচনায়, এই বাইক ছিলো আমরা প্রথম বাইক যেহেতু আগে থেকে আমি বাইক চালাতে পারতাম তাই তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। বাইকের কন্ট্রোলিং এক কথায় অসাধারণ। আর বাইকটির মাস্কুলার লুক দেখে আমি এর প্রেমে পরি। আমি গত দুই বছরে বাইকটি দিয়ে রাইড করেছে ১্০০০+ কিঃমিঃ কোনো রকম সমস্যা ছাড়া। প্রথম দিকে মাইলেজ পেতাম ৩৩-৩৫ কিন্তু ৫০০০কিঃমিঃ এর পর মাইলেজ পাচ্ছি ৩৭-৪০ (সিটিতে)। আমার ঢাকার বাহিরে তেমন যাওয়া না হলেও ঢাকার মধ্যে প্রচুর ঘুরা ঘুরি করেছি। এই ১০,০০০+ কিলোমিটারে আমি শুধু একবার সামনের ব্রেক প্যাড এবং ইঞ্জিন অয়েল ছাড়া আর কিছু পরিবর্তন করার প্রয়োজন পরেনি।আমি যদিও টপ স্পিড তুলতে পছন্দ করিনা তবুও আমি এই হাংক দিয়ে ১১০পর্যন্ত স্পিড তুলতে সক্ষম হয়েছি।বাইকটির রেডি পিকাপ কম থাকলেও এর ভাইব্রেশন খুবি নগ্ন যা লং রাইডের জন্য উপযোগী। যদিও এর পিছনের চাকায় ১০০ সেকশন টায়ার ব্যাবহার করার কারনে কিছুটা স্কিড হয় কিন্তু কিছু দিন ব্যাবহারে ব্রেক কন্ট্রোলে চলে আশে।
ব্রেকিং সিস্টেমটা ভাল লেগেছে, ব্রেকটা মোটরসাইকেল এর যতই ভাল থাকুক, সব কিছু নির্ভর করে বাইক চালকের দক্ষতার উপর। চালক তার নিজের দক্ষতা দিয়ে যে কোন সময়ে নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে আসতে পারে। তবে হিরো হাংক এর ব্রেক অনেক ভাল ও নিরাপদ। কিন্তু অতিরিক্ত শক্তভাবে ডিস্ক ব্রেক না করাই ভাল। এই মোটরসাইকেল এর সাসপেনশনটির কাজ গুলো আমার ভাল লেগেছে। এটি যে কোন রাস্তায় অনেক ভালো ফিডব্যাক দেয় । তাই এটি নিয়ে আমার কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু টায়ার নিয়ে একটি কথা না বললেই নয়, এটি হলো বাইকটিতে শক্ত ভাবে ব্রেক করলে স্লিপ খায়। এটা কি কারনে হয় আমার জানা নেই। হয়ত টায়ার বা টায়ায়ের গ্রিপ ভাল না। তবে নিজ দক্ষতা অনুযায়ী বাইক চালানো উচিৎ বলে মনে করি। এ বাইকটির সুইচ গুলো দেখতে অসাধারণ। এগুলো খুব ভাল ও মজবুত। রাতে হেড লাইট থেকেও আমি যথেষ্ট আলো পাই এবং উচ্চ গতিতেও সমস্যা হয় না। হাই গতিতে লো বিমে নিজের সুবিধা মত সেট করে নিলে নিরাপদ পথচলা নিশ্চিত হয়।
বাইকটির সিটিং পজিশন অনেক ভাল, যা অন্যান্য ১৫০ সিসি বাইকের তুলনায় বড়। হ্যান্ডেলবারটি ভাল হওয়ার কারনে সিটে বসে আরামের সাথে চালানো যায়। এতে আমার কোন ক্লান্তি আসে না। খুব সহজেই আমি দীর্ঘক্ষণ বাইক চালাতে পারি। তবে লুকিং গ্লাস দুটি নিয়ে আমি তেমন সন্তুষ্ট না। কারণ এর ডিজাইন ও কোয়ালিটি আমার কাছে নিম্নমানের মনে হয়েছে। অন্যদিকে পিছনের টেল লাইট এলইডি যা আমার কাছে ভালই লাগে। এর পিলিয়ন সিটটি অনেক কম্ফোর্টেবল যার ফলে রাইডিং এর সময় পিলিয়ন বা রাইডার এর কোনো সমস্যা হয় না। এবার আসি ইঞ্জিনের ব্যাপারে আমি যদিও তেমন বুঝি না তবে প্রথম দিকে ইঞ্জিন বেশ গরম হতো যখন মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করতাম কিন্তু টেকনোসিন্থিটিকে ইঞ্জিন অয়েল দেওয়ার পর হিটিং ইসুটা একেবারে চলে যায়। অভারঅল এই বাজেটে বাজারের সেরা বাইক বলাই যায়।
বাজারে অনেক রকম বাইক আছে এক একটা বাইক এক এক দিক থেকে সেরা। সব কোম্পানি চায় তাদের বাইকটা বাজারে সেরা হোক। সুতরাং কোনো বাইক খারাপ না আপনি যদি ঠিক ঠাক যত্ন নিতে পারেন দেখবেন প্রতিটি বাইক আপনাকে ভালো ফিডব্যাক দিবে।আশা আছে বাইকটি নিয়ে আরো অনেকগুলো দিন পার করবো। সবাই আমর জন্য দোয়া করবেন আর সাবধানে বাইক চালাবেন।
হ্যাপিবাইকিং, সবাই সবসময় হেলমেট পড়ে বাইক রাইড করবেন।
(বিঃদ্রঃ আমি আমার মতামত প্রকাশ করেছি সবার সাথে না-ও মিলতে পারে সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)
লিখেছেন- ফাহিম হোসেন তপু