মোটরবাইক চালিয়ে মক্কার পথে বাংলাদেশের ২ তরুণ

বাংলাদেশের দুই তরুণ বাইক নিয়ে মক্কার পথে যাত্রা করেছেন। দীর্ঘ দুই মাস বাইক চালিয়ে তারা সৌদি আরবে পৌঁছাবেন। পবিত্র ওমরা শেষে দেশে ফিরবেন।

এই দুই তরুণের নাম আবু সাঈদ ও মাসদাক চৌধুরী। ছোটবেলা থেকেই তাদের ঘোরার নেশা। দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ানোতে তাদের প্রথম পছন্দ স্থলপথ। ফেনীর ছেলে সাঈদ এবং চট্টগ্রামের ছেলে মাসদাক দুজনই প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন।

গত ৫ ডিসেম্বর বাইক নিয়ে তারা পুণ্যভূমি সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। যাত্রাপথে ভারত-পাকিস্তান হয়ে এরপর ইরান-দুবাই অতিক্রম করে তারা সৌদি আরবে পৌঁছাবেন।

আবু সাঈদ জানান, বাংলাদেশের বেনাপোল বর্ডার দিয়ে তারা দেশ ত্যাগ করেছেন। এরপর ভারতের কলকাতা, বেনারস, অমৃতসর, পাঞ্জাব হয়ে তারা ওয়াগাহ সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানের লাহোরে প্রবেশ করেছেন।

এই মুহূর্তে ‘ওভারল্যান্ড মুসাফির’ নামের দুজনের এই দলটি পাকিস্তানের লাহোর পেরিয়ে করাচিতে অবস্থান করছেন। এরপর তারা বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে পাকিস্তান-ইরানের সীমান্ত এলাকা তাফতান বর্ডার দিয়ে ইরানে প্রবেশ করবেন।

এরপর তারা যাবেন আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত সাত স্বাধীন রাষ্ট্রের ফেডারেশন সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায়। সেখান থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৃহত্তম শহর দুবাই হয়ে সৌদি আরবে প্রবেশ করবেন।

দুর্দান্ত এই যাত্রাপথের বর্ণনা দিতে গিয়ে তারা জানান, প্রায় সারাদিনই তারা বাইক চালান। রাস্তায় ঘনকুয়াশার কারণে কোথাও কোথাও দিনের বেলায় তাদের বিরতি দিতে হয়। এভাবে কখনো দিনে, কখনো রাতে মাইলের পর মাইল পাহাড়-উপত্যকা পাড়ি দিচ্ছেন তারা। জনপদের পর জনপদ পার হচ্ছেন।

দুমাসে প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তারা সৌদি আরব পৌঁছাবেন।

ওমরার জন্য স্থলপথে বেছে নেয়ার কারণ কী জানতে চাইলে টিমের সদস্য মাসদাক চৌধুরী জানান, ছোটবেলা থেকেই বাইক চালাতে পছন্দ করেন তিনি। মাসদাক মনে করেন, বাইকে ভ্রমণে এক ধরনের স্বাধীনতা আছে। যেখানে খুশি থামা যায়। যেভাবে ইচ্ছা দর্শনীয় স্থানগুলো নিজের মতো করে দেখা যায়। বাংলাদেশ থেকে যেতে যেতে অনেক জনপদ, পাহাড়-উপত্যকা, দেশ-শহর-নগর, সীমান্ত ও প্রকৃতি দেখতে দেখতে পথ পাড়ি দিচ্ছেন তারা। এ আনন্দ অমূল্য।

২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা ৬ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন। এখন তারা পাকিস্তানের করাচিতে আছেন। পাকিস্তান সরকারের অনুমতিপত্র আদায় সংক্রান্ত কাজে এখানে তারা সপ্তাহখানেক অবস্থান করবেন। কাগজপত্র হাতে পেলে পাকিস্তান-ইরান সীমান্ত তাফতান বর্ডার দিয়ে ইরান প্রবেশ করে দুবাইয়ের দিকে এগোবেন বলে জানিয়েছেন টিমের অপর সদস্য সাঈদ।

সাঈদ-মাসদাকের এই সফরে অর্থায়ন করে সহযোগিতা করছে ‘রয়েল এন্টারপ্রাইজ, এমআরএফ টায়ার, আইফিক্সিট বিডি ও এমটি হেলমেটস বাংলাদেশ’ নামের ৪টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

 

সূত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ