কীভাবে বিকাশের মাধ্যমে BRTA ফি প্রদান করবেন?

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ যেন এক নতুন পথে চলছে ধীরে ধীরে সব কিছু ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে, যেন ঘরে বসেই দুনিয়া হাতের মুঠোয়। আমরা এই মহামারী করোনাকালীন সময়ে দেখেছি অনলাইন এর কাজ করার মাধ্যমে কিভাবে ঘরে বসেই জরুরী সেবা গুলো পাওয়া যাচ্ছে। আমরা যারা বাইক চালাই বা শুধু বাইকই নয় আমাদের ব্যাক্তিগত গাড়ির কাজের জন্য আমাদের BRTA যেতে হয়। আমরা অনেকেই এই BRTA এর কথা শুনলে ভয় পেয়ে যাই কেননা অধিক সময়, ভীড় এবং দালালদের পাতা ফাঁদ। তাই এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি তাদের বিভিন্ন কাজের ফি প্রদানের জন্য বিভিন্ন অনলাইন ব্যাংকিং সেবাকে যুক্ত করেছে। আজকে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে BRTA ফি বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করা যায়।

প্রথমে আমাদের BRTA সার্ভিস পোর্টাল ওয়েবসাইটে ঢুকতে হবে এবং লগ ইন করতে হবে। যদি লগ ইন করা না থাকে তাহলে ই-মেইল এবং আপনার মোবাইল নাম্বার দিয়ে একাউন্ট খুলে লগ ইন করতে হবে। তারপর আপনি দেখতে পারবেন বিভিন্ন ফি জমা দেয়ার অপশন রয়েছে যেমনঃ গাড়ির লাইসেন্স, মালিকানা নিবন্ধন, ট্যাক্স টোকেন নবায়ন সহ আরো অনেক কিছু।

এছাড়া এই ওয়েব পোর্টালে আরো অনেক প্রয়োজনীয় কাজ ও তথ্য পেয়ে যাবেন যেমনঃ

  • মোটরযান নিবন্ধন
  • মালিকানা পরিবর্তন
  • ডিজিটাল রেজিষ্ট্রেশন সার্টিফিকেট
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন
  • মোটরযান ফিটনেস ইস্যু ও নবায়ন
  • ট্যাক্স টোকেন ইস্যু ও নবায়ন
  • রুট পারমিট ইস্যু ও নবায়ন

এবার জেনে নেয়া যাক কিভাবে বিকাশের মাধ্যমে এসব কাজের জন্য ফি প্রদান করবেন। তার জন্য এই ওয়েব পোর্টালে অবশ্যই একাউন্ট থাকতে হবে। আপনি যে সার্ভিসের জন্য ফি প্রদান করবেন যেমন মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন ফি প্রদান করতে প্রথমে আপনাকে নিবন্ধন অপশনে প্রবেশ করে আপনার সকল তথ্যাদি দিয়ে সকল ফর্ম পূরণের কার্যক্রম সম্পন্ন করে সর্বশেষে পেমেন্ট অপশনে যেতে হবে। পেমেন্ট এ গেলেই দেখতে পারবেন বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ডে পেমেন্টের অপশন আছে যেমনঃ ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড, ডেবিট কার্ডসহ অন্যান্য। এছাড়া ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং এবং বিকাশ এর অপশন ও থাকবে। বিকাশ পেমেন্ট সবচেয়ে সহজ সবার জন্য।

বিকাশ অপশনে ক্লিক করে আপনার বিকাশ নাম্বার চাইবে, তারপর নাম্বার দেয়া শেষে আপনার ফি এর সমপরিমান টাকা লিখুন এবং পেমেন্ট করুন। এর পরে আপনার বিকাশ নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে যেটি আপনার ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড হিসেবে কাজ করবে। সেটি বিকাশে দিয়ে আপনার গোপন পিন নম্বর দিলেই পেমেন্ট সম্পন্ন হবে এবং ফিরতি এসএমএস এ ট্রাঞ্জেকশন নাম্বার আসবে।

সার্ভিস চার্জঃ সার্ভিস পোর্টালে পেমেন্ট বিকাশ করলে পেমেন্টের পরিমানের উপর ১.৫% হারে চার্জ প্রযোজ্য হবে এবং ট্যাক্স টোকেন সেবা শুধুমাত্র বিকাশ গ্রাহকগন পেয়ে থাকবেন। এছাড়া BRTA এর পার্টনার বিকাশ যারা ট্যাক্স টোকেন প্রিন্ট করতে পারে এবং গ্রাহকদের হোম ডেলিভারি দিতে পারে। তাই এখন ঘরে বসেই অনলাইনে ট্যাক্স টোকেন করা যায় এবং এর জন্য কোথাও যেতে হয় না এবং তা বিকাশ কুরিয়ারের মাধ্যমে ডেলিভারি দিয়ে থাকে। হোম ডেলিভারি নেয়ার জন্য কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানকে ৩৫টাকা চার্জ দিতে হবে। ডেলিভারি সার্ভিসটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান লজিস্টিক কোম্পানি “ই-কুরিয়ার” থেকে পরিচালিত হবে।

অনলাইনে এসব সুবিধার জন্য কিছু শর্তাবলি আছেঃ

  • যেকোনো সেবার ফি বিকাশ করার জন্য বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টালে একাউন্ট থাকতে হবে।
  • যে সকল বিকাশ গ্রাহকের সক্রিয় একাউন্ট স্ট্যাটাস এবং পর্যাপ্ত ব্যালেন্স আছে, শুধুমাত্র তারাই বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টালে পেমেন্ট করতে পারবেন।
  • অনলাইন সেবার জন্য পেমেন্টের পরিমাণের উপর ১.৫% হারে সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য হবে।
  • ট্যাক্স টোকেন হোম ডেলিভারি নিতে কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ টাকা চার্জ দিতে হবে।
  • হোম ডেলিভারির সময় যদি দেখেন ট্যাক্স টোকেনটির কোনো প্রকার ড্যামেজ হয়েছে তাহলে আপনি ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানের কাছে টোকেনটি ফেরত পাঠাতে পারবেন। নতুন করে প্রিন্ট করে টোকেন পাঠানো হবে আপনার কাছে। এতে আরও ৩-৪ দিন সময় লাগবে।
  • বিকাশ পেমেন্টের মাধ্যমে লেনদেন করার পর যদি বিআরটিএ আপনার পেমেন্ট গ্রহণ করে এবং সার্ভিস পোর্টালের লেনদেন হিস্টোরিতে লেনদেনটি দেখায়, তাহলে আর পেমেন্ট বাতিল করার এবং রিফান্ড নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
  • যদি আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে পেমেন্ট হয়ে যায় কিন্তু বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টালের লেনদেন হিস্টোরিতে লেনদেনটি দেখতে না পান, তাহলে চিন্তার কিছু নেই। আপনার পেমেন্ট অটোম্যাটিক বাতিল হয়ে যাবে এবং আপনি রিফান্ড পেয়ে যাবেন।