ঈদের আগেই বাড়তে পারে মোটরসাইকেলের দাম

নতুন বাজেট ২০১৯-২০ কার্যকর হওয়ার ফলে ঈদের আগেই বাড়তে পারে সকল মোটরসাইকেলের দাম। বাজেটের প্রভাব পড়বে কমিউটার থেকে স্পোর্টস সকল ধরনের বাইকের উপর। সূত্র মতে, সম্পূরক কর বৃদ্ধির ফলে সংযোজিত মোটরসাইকেলগুলোর উপর সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। শুধু তাই নয় নতুন ভাবে কর সংযোজন করা হয়েছে মোটরসাইকেল নিবন্ধন ব্যয়ের উপরও। বেশি দামে মোটরসাইকেল কেনার পর রেজিস্ট্রেশনের সময়ও খরচ কিছুটা বেড়ে যাচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।

প্রস্তাবিত বাজেটে টু-হুইলার পণ্যের উপর ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয় সকল পরিবেশকদের (ডিলার) কমিশনের উপর ১৫ শতাংশ কর নির্ধারিত হয়েছে। এ ছাড়াও মোটরসাইকেল নিবন্ধন ও মালিকানা পরিবর্তনে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

একটি কোম্পানি যদি তাদের পরিবেশককে বাইক প্রতি ৫ হাজার টাকা কমিশন দিয়ে থাকে এবং করের নিয়ম অনুযায়ী ১৫ শতাংশ হারে ৭১৭ টাকা ভ্যাট প্রদান করতে হয়। আমদানীকারকের উপর ৫ শতাংশ ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে ১ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেলের উপর অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা এবং উচ্চমূল্যের যেমন ৫ লক্ষ টাকার একটি মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে তা গিয়ে দাঁড়াবে ২৫ হাজার টাকায়। যার ফলে মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি এর প্রভাব পড়বে এর প্রবৃদ্ধিতে।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে CKD (Completely Knocked Down) আমদানিকৃত মোটরসাইকেলের উপর শুল্ক ৪৫% থেকে কমিয়ে তা ২০ শতাংশ করা হয়েছিল এবং সিসি ভেদে বাইকের দাম ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত কমে যায়। কিন্তু চলমান অর্থবছরে এই অতিরিক্ত শুল্ক আরপের ফলে সকল ধরনের মোটরসাইকেলের দাম বৃদ্ধি পাবে বলাই যায়।

এ ছাড়াও প্রস্তাবিত বাজেটে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, থ্রি হুইলার, অ্যাম্বুলেন্স ও স্কুলবাস ছাড়া সব গাড়ির নিবন্ধন, রুট পারমিট, ফিটনেস সনদ, মালিকানা সনদ গ্রহণ ও নবায়নকালে পরিশোধিত ফি বা মাশুলের ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়। বর্তমানে ১০০ সিসির বেশি একটি মোটরসাইকেলের নিবন্ধন ব্যয় মোট ২১ হাজার ২৭৩ টাকা। এর মধ্যে নিবন্ধন মাশুল (করসহ) ৬ হাজার ৪৪০ টাকা, ডিজিটাল নিবন্ধন সনদ বাবদ ৫৫৫ টাকা, নম্বরপ্লেটের দাম ২ হাজার ২৬০, পরিদর্শন মাশুল ৫১৮ এবং সড়ক কর বা রোড ট্যাক্স বাবদ ১১ হাজার ৫০০ টাকা রয়েছে। নতুন করের কারণে সব মিলিয়ে ১ হাজার টাকার মতো খরচ বাড়বে।

উল্লেখ্য যে, এর আগে দেড় লাখ টাকার মোটরসাইকেলে নিবন্ধন ব্যয়ের পরিমাণ ছিল মোট দামের ১৩ শতাংশের মতো। এখন মোটরসাইকেলের দাম কমে লাখ টাকার নিচে নামায় নিবন্ধন ব্যয় মোট দামের ২২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

আর যে সব কোম্পানী CBU (Completely Build Up) আকারে বাইক আমদানী করে দেশে বিক্রি করে, সেসব বাইকের দাম প্রায় একই থাকবে। কিন্তু ডিলার বা পরিবেশককে তার কমিশনের ১৫% ভ্যাট অবশ্যই প্রদান করতে হবে। তাই সংযোজিত হয়ে দেশে আসা বাইকগুলোরও দাম কিছুটা বাড়তে পারে।

সব মিলিয়ে এই ভ্যাটের পরিমাণ বৃদ্ধির ভার নিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। চলতি বছরে বাজেট পাশ হলে এখনো সব কোম্পানী তা কার্যকর করেনি, তবে আশা করা যাচ্ছে পবিত্র ঈদুল আযহার আগেই মোটরসাইকেল কোম্পানীগুলো তাদের বিভিন্ন মডেলের বাইকগুলোর দাম বাড়িয়ে দেবে।

Related Posts

error: Content is protected !!