“নিরাপদ সড়ক চাই” এই দাবিতে বাইকারদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন

গত ২৯ জুলাই (রোববার) কর্মিটোলায় জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী (মিডিয়ায় পাওয়া তথ্য মতে) নিহত এবং ৮-১০ জন আহত হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন। মানববন্ধন, রাস্তা ঘাটে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ, ড্রাইভিং লাইসেন্স চেকিং ইত্যাদি নানান উদ্দ্যোগ নিজেদের কাঁথে তুলে নেয় শিক্ষার্থিরা। নির্দিষ্ট লেনে গাড়ি চলাচল এবং এমার্জেন্সী লেন ফাঁকা রাখা ইত্যাদি নানান বিষয় বাস্তবায়নের চেষ্টা করে তারা। সোশাল মিডিয়া জুড়ে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে ওঠে। ৯ দফা দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলতে থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

দাবিগুলো হচ্ছে— ১. বেপরোয়া চালককে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে, ২. নৌপরিবহনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, ৩. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে, ৪. প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে, ৫. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে, ৬. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে, ৭. শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে, ৮. রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধ করতে হবে, ৯. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।

বেপরয়া বাস-ট্রাক চালকদের জন্য রাস্তা-ঘাটে সব থেকে বেশি দূর্ভোগ পোহাতে হয় মোটরসাইকেল চালকদের। প্রতিদিন খবরের কাগজে ভেসে আসে এই সব সড়ক দূর্ঘটনার তথ্য। নিড়াপদ সড়ক সব শ্রেনীর মানুষের চাওয়া। তবে সব থেকে বেশি দরকার মোটরসাইকেলিস্টদের জন্য।

ইতোঃপূর্বে বাইকাররা সোশাল মিডিয়ায় নানান ধরনের সচেতনতামূলক কাজ করে আসছিল। বাইকারদের হেলমেট পরিধানে উৎসাহিত করা, লং জার্নিতে সেফটি গার্ড ব্যবহার করা ইত্যাদি নানান কিছু। কিন্তু নিরাপদ সড়কের দাবি থাকলেও রাস্তা-ঘাটে নিয়ম-কানুনের কোন উন্নতি পরিলক্ষিত হয়নি।

ছাত্র-ছাত্রীদের এই দাবিতে সম্মতিজ্ঞাপন করে, “নিরাপদ সড়ক চাই”-এই দাবীতে গতকাল রোজ শুক্রবার (৩ আগষ্ট, ২০১৮) বাইকাররা একত্রিত হয় মানিক মিয়া এভিনিউতে। অনেকেই সতস্ফুর্তভাবে এতে অংশগ্রহণ করে। বেলা ১০ টায় রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সকলে একত্রিত হয়  এবং ডাবল ফাইলে শৃঙ্খলা মেনে মোটরসাইকেল র‍্যালী করে সমবেত হয় প্রেস ক্লাবের সামনে।

“নিরাপদ সড়ক চাই”-এর চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের ডাকে মানববন্ধনের সাথে অংশীদারিত্ব করেন বাইকাররা। ব্যানার, ফেস্টুনে লেখা দাবীগুলো ছিল সচেতনতামূলক বাণী।

বাইকারদের প্রত্যাশা সরকার অতিশীঘ্রই দেশের রাস্তা-ঘাটে নিয়মনীতিকে আরো জোরদার করবে এবং বেপরয়া, আনফীট যানবাহনকে আইনের আওয়তায় নিয়ে আসবে।