Yamaha Fazer ২৪ হাজার কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- সীমান্ত মহন্ত)

আমি সীমান্ত,

ইয়ামাহা ফেজার ভি ২ বাইকটি আমার স্বপ্ন ছিল। স্বপ্নটি 2 বছর আগেই পূরণ হয়ে গিয়েছিল ।২ বছরে বাইকটি আমি টোটাল ২৪ হাজার কিলোমিটার রাইড করেছি। অফরোড, অনরোড, হিল কম বেশি সব রাস্তাতেই চালিয়েছি।বাইকটি ২ বছরের রাইডিং অভিজ্ঞতা থেকে নিজস্ব কিছু মতামত শেয়ার করছি।

প্রথমত, বাইকের লুকস্ এর কথা বলতে গেলে এককথায় অসাধারণ। বাইকটি ফুল ফেয়ার্ড একটি স্পোর্টস বাইকের মতোই লুকস্ নিয়ে গ্রো করা।তবুও পছন্দের বিষয় টি সম্পূর্ণ নিজস্ব।

ব্রেক ইন পিরিয়ড, একটি বাইকের ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করা অত্যন্ত জরুরী ।জন্মের পর একটি শিশুকে হাটা চলার জন্য টানা হিছড়া করা যেমন ক্ষতি ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন না করা বাইকের জন্য একই রকম ক্ষতি। নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পারা,বন্ধু দের পাল্লায় পড়ে টপ স্পিড চেক করতে যাওয়া,এসব এরাতে ২৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাইক টি বাবার কাছে ছেড়ে দিয়েছিলাম, ঊনি ২৫০০ কিলোমিটার রাইড শেষে বাইকটি আমার কাছে হস্তান্তর করে দেয়, তাহলে বুঝতেই পারছেন শখের বাইকটার জন্য কতটুকু স্যাকরিফাইজ করেছিলাম। কম্ফোর্ট, কম্ফোর্টের কথা বলতে গেলে ২ লক্ষ ৭৫হাজার টাকা বাজেটের মধ্যে বাংলাদেশের সেরা বাইক।

বাইকটি নিয়ে একটানা ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত রাইড করেছি, কম্ফোর্টের দিক দিয়ে বিন্দু পরিমাণ মনে সন্দেহ জাগে নাই। হাইওয়েতে এক্সিলারেশন, হাইওয়ে তে এক্সিলারেশন/ রেডি পিকআপ একটু কম, বাইক নিয়ে কি ভাই চাঁদে যাবেন,বাইক তো নিজের প্রয়োজনে নিজের মতো করে ব্যবহার করি, রেডি পিকআপ একটু কম, ১০০+ স্পিড এর পর আর কি চান।

মাইলেজ,টপ স্পিড, ২৪ হাজার কিলোমিটার চলার পর ও এখনো টপ ১২০ কিলোমিটার/ঘন্টা পাই । যা আমার জন্য যথেষ্ট, হাইওয়ে তে চলার সময় রেডি পিকআপ রেসপন্স টা একটু বাড়ানোর জন্য ১ টা রেসিং প্লাগ ব্যবহার করি। আর মাইলেজ এর বিষয়টি অসাধারণ লেগেছে। ১৫০ সি সি বাইকে কখনো ৪৫ কিমি এর নিচে মাইলেজ পাই নাই। ব্রেকিং, এক কথায় অসাধারণ, ব্রেকিং নিয়ে মোটামুটি সন্তুষ্ট আছি। হয়তো ব্রেকিং/কন্ট্রোল এর জন্যই এই সিরিজের বাইকটি এতো জনপ্রিয় হয়েছে। ইন্জিন পারফরমেন্স অনেক ভালো, ২৪ হাজার রাইডিং করে প্লাগ,ব্রেক প্যাড, মবিল ফিল্টার, এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন এছাড়া বড়ো কোনো সমস্যায় পড়িনাই।

অসুবিধা: বাইকের পার্সের দাম অন্যান্য বাইকের তুলনায় একটু বেশি। সার্ভিসের জন্য লোকাল পয়েন্ট গুলো তে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। নিম্ন মানের সিয়েট টায়ার ব্যবহারের কারনে ১৭হাজার কিলোমিটারে টায়ার পরিবর্তন করতে হয়েছে। ইয়ামাহা সার্ভিস সেন্টারে পার্সের দাম বেশি ধরা হয়েছিল,তুলনামূলক সার্ভিসে সন্তুষ্ট ছিলাম না। অফরোড অনরোডে যথেষ্ট সাপোর্ট পেয়েছি, ইনিশিয়াল পাওয়ার কম হওয়ায় হিলের রাইডিং টা একটু বিরক্তিকর মনে হয়েছিল।

 

লিখেছেন- সীমান্ত মহন্ত