160 to 165 সেগমেন্টে বাজারে যখন রাজত্ব করে আসছে টেক্কা, কিং এবং কুইনরা ঠিক তখনই আমরা নিয়ে এসেছি আপনাদের সামনে এমন একটি বাইক যা হতে পারে Game Changer. কথা বলছিলাম Benelli 165s এর।
ব্রান্ড অরিজিন বা একটা কোম্পানি কতদিন যাবত Sustain করছে সেটি একটি মোটরসাইকেল কোম্পানির Reliability নির্দেশ করে। মোটরসাইকেল প্রস্তুত করা যতটা চ্যালেঞ্জ তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন সময়ের সাথে নিজেদের প্রযুক্তি ডেভেলপ, Product এর সঠিক R&D এবং দিনের পর দিন মানোন্নয়ন করে যাওয়া। যে জিনিসটি আমরা সবচেয়ে বেশি দেখতে পাই জাপানিজ কোম্পানিগুলোর মধ্যে।
তবে বেনেলিও এই জায়গায় নিজেদের শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে। বিশ্বের one of the oldest মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক হিসেবে বেনেলিকে বিবেচনা করা হয় যারা তাদের যাত্রা শুরু করে ১৯১১ সালে। বাংলাদেশে সিসি লিমিটেশনের কারনে 165s ই হচ্ছে বেনেলির হাইয়েস্ট সেগমেন্টের বাইক। তবে ন্যাকেড, ফুল-ফেয়ার্ড, ক্যাফে-রেসার মিলিয়ে বেনেলির হায়ার সেগমেন্টের বাইকগুলো বিশ্বের প্রায় ৮০ টিরও বেশি দেশে ব্যবহৃত হয়। TNT 1130 Roadster হচ্ছে তাদের হাইয়েস্ট সেগমেন্টের বাইক তবে ২৫০ এবং ৫০০ সিসি সেগমেন্টেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছে তারা।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১৬০ এবং ১৬৫সিসি হচ্ছে সবচেয়ে প্রতিযোগীতামূলক মোটরসাইকেল সেগমেন্ট। প্রায় সকল নামি-দামী মোটরসাইকেল কোম্পানিগুলো এই সেগমেন্টে তাদের বাইক লঞ্চ করছে। এই সেগমেন্টের বাইকগুলোর ইঞ্জিন পারফর্মেন্স প্রায় একই রকম হয়ে থাকে। বেনেলি তাদের নিজস্ব ইঞ্জিনের জন্য বিশ্বব্যাপী বেশ প্রসিদ্ধ। যার ব্যতিক্রম হয়নি Benelli 165s বাইকটির ক্ষেত্রেও।
According to the company, this engine can produce 18 Bhp maximum power which is the highest in this segment. তবে আমরা টিম দেশি বাইকার হাতে কলমে এই টর্ক কিংবা BHP তে বিশ্বাসী নই। আমরা বাইকটি টেস্ট করেছিলাম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে, সূর্যোদয়ের সময় চারদিক যখন নিস্তব্ধ তখন বাইকটির গর্জন আমাদের মেনে নিতে বাধ্য করে, This machine is very powerful, it was more than we expected and something very special।
এর গিয়ার শিফটিং এতটাই স্মুথ এন্ড লাইট, অনেকেই হয়তো বা ভেবে বসবে এই কারিশমা স্লিপার ক্লাচের কিন্তু আসলে তা নয়। বাইকটিতে Wet Multi-plate ক্লাচ ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এর গিয়ার সিফটিং এবং ক্লাচ এনগেজমেন্ট বেশ স্মুথ মনে হয়েছে আমাদের কাছে।
আর বাইকটির পজিটিভ দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি দিক হচ্ছে এর সাসপেন্সনের কার্যকারিতা। সামনের Up-side Down এবং পিছনের Swingarm মনোশক সাসপেন্সন আমাদের যথেষ্ট ফিডব্যাক দিয়েছে। বিশেষকরে হাইওয়েতে এর পারফর্মেন্স ছিল দারুন। এছাড়া পাহাড়ি রাস্তায় এবং অফ-রোডেও এর ফিডব্যাক প্রশংসনীয় ছিল।
তবে নিরাশ করেছে এর হেডলাইট, যার আলো একেবারে কম, হাইওয়ে রাইডে অবশ্যই এডিশনাল ফগলাইট দরকার হবে। তবে হেডলাইটটি দেখতে অনেকটা KTM Super Duke এর মতই। যার ফলে সামনে থেকে বাইকটি বেশ Attractive দেখায়। তবে বাইকটির টেল লাইট এবং সাইড LED ইন্ডিকেটর লাইটগুলো বেশ উজ্জ্বল আলো দেয়।
সিঙ্গেল রাইডের জন্য বাইকটি পারফেক্ট হলেও এর পিলিওন সিটটি নিরাশ করেছে আমাদের। পিলিওন সিটটি তুলোনামূলক ছোট। লং ট্যুরে পিলিওনসহ রাইড করলে সমস্যা ফেস করতে পারেন।
বাইকটির সীট হাইট কম তাই সামনা সামনি দেখে বুঝতে হবে বাইটি আপনার জন্য কতটা মানানসই। ৫ ফিট ৭ ইঞ্চি কিংবা এর এর নিচের রাইডারদের জন্য বাইকটি পারফেক্ট। এর বেশি হাইট হলে, বাইকটিতে হটাত বসে খুব একটা ইনজয় করবেন না। যদিও রাইডের সময় আপনি এর সাথে নিজেকে সুন্দর মানিয়ে নিতে পারবেন।
160 t0 165cc সেগমেন্টে এই বাইকটির acceleration is one of the best. বাইকটি ৯,৫০০ আরপিএম-এ লক করা থাকে। এই অবস্থায় আমরা বাইকটির টপ-স্পীড পেয়েছি ১৩৯ km/H. এভারেজ স্পীডে বাইকটি স্ট্যাবল থাকলেও হাই-স্পীডে বাইকটিকে কিছুটা হালকা মনে হয়েছে। তবে হাই-স্পীডে এর ব্রেকিং যথার্থ ফিডব্যাক দিয়েছে আমাদের।
RPM যদি আনলক করা হয়, তাহলে এটি প্রিমিয়াম সেগমেন্টের MT15 এবং Honda CB Exmotion কেও বিট করবে এমনটাই আশা করছি আমরা।
জানিনা বেনেলি কেন তাদের কোম্পানির লোগো এবং এই বাইকটির কয়েক জায়গায় সিংহের ছবি স্টিকারিং করেছে কিন্তু তাদের ১৬৫ সিসি’র এই নেকেড স্পোর্টস বাইকটি রাইড করার সময় আমরা খুব ভাল ভাবে বুঝতে পেরেছি এর 4 Valve, triple spark ignition এবং লিকুইড কুলড এই ইঞ্জিনটি সিংহের মতই গর্জন করে। হাই রেভ করলেই এটি আপনাকে বুঝিয়ে দেবে এর শক্তি আর ক্ষমতা। এই মেশিনটি আপনাকে এমন এক ধরনের ফীল দেবে যা হয়তো আপনি এই সেগমেন্টে কল্পনাও করেননি।
একটি পাওয়ারফুল ইঞ্জিনকে নিয়ন্ত্রন করা জন্য দরকার শক্তিশালী ব্রেকিং। আমরা আগেই মেনশন করেছি বাইকটির পিছনে যথেষ্ট Effort দিয়েছে বেনেলির রিসার্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট টিম। বাইকটির ব্যালেন্সে কোন ঘাটতি রাখেনি তারা। সামনে পিছনে ডিস্ক ব্রেকে দুটি শক্তিশালী ক্যালিপার নিশ্চিত করেছে এই সেগমেন্টের অন্যতম সেরা ব্রেকিং। Advanced ব্রেকিং ফিচার হিসেবে এটিতে থাকছে CBS. তবে ফ্রন্ট এবং রেয়ার হুইলে ১০০/৮০-১৭ এবং ১৩০/৭০-১৭ সেকশনের করডিয়াল ব্রান্ডের টায়ারগুলো ভেজা রাস্তায় খুব একটা ভাল পারফর্ম করে না।
পাওয়ারফুল ইঞ্জিন এবং ব্রেকিংয়ের মতই এর সাসপেন্সনের পারফর্মেন্সও প্রশংসনীয়। সামনে এবং পিছনের সাসপেন্সন দুটি নিশ্চিত করে রাইডারের কম্ফোর্ট এবং একই সাথে বাইকটির ব্যালেন্সেও এটি যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। সামনের USD সাসপেন্সনের সাথে একটি Reflector লক্ষ্য করবেন, যা দ্বারা বাইকটিকে সাইড থেকেও নোটিস করা যাবে। এছাড়া এটিতে যোগ করা হয়েছে সাইড স্ট্যান্ড সেন্সর। স্ট্যান্ড না উঠালে বাইকটি স্টার্ট নেবে না। এই ফিচারটি অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে এবং যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা করবে।
Fuel Injection system এবং Triple spark ignition এর কারনে বাইকটি থেকে ভাল মাইলেজ পেয়েছি আমরা। সিটি এবং হাইওয়ে মিলিয়ে এর এভারেজ মাইলেজ আমরা পেয়েছি ৪১ কিমি/লি। তবে একেক জন রাইডারের চালানোর ধরন অনুপাতে এই মাইলেজ উঠা-নামা করতে পারে। হাই RPM এ রাইড করলে এই মাইলেজ কিছুটা কমে আসবে এবং আইডল RPM এ বাইকটি রাইড করলে বেশ ভাল মাইলেজ পাবেন। ঢাকা সিটিতে এর মাইলেজ আমরা পেয়েছিলাম ৩৮ কিমি/লি।
পিলিওন সিটটি ছোট হলেও রাইডারের সিটটি বেশ লম্বা। এলুমিনিয়াম পাইপ হ্যান্ডেলবারটি আপ-রাইজড এবং ক্লোজ। যে কোন হাইটের রাইডার, এর সাইড প্যানেলের সাথে সুন্দর এডজাস্ট হয়ে যাবে। সিটিং এবং রাইডিং পজিশনটি Ergonomic হওয়ার কারনে লং ট্যুরের সময় খুব একটা ক্লান্তি অনুভব করবেন না।
বাইকটির ডিজাইনও বেশ Attractive. ফুয়েল ট্যাংকের সাথে Extended কিটটি খুব Stylish ভাবে ডিজাইন করা। এর সাথে চোখে পড়বে এর LED হেডল্যাম্প ইউনিটটি, যেটি বেশ চমৎকার। এছাড়া বাইকটির বেশকিছু যায়গায় স্টিকারিং করেছে বেনেলি। ইঞ্জিন কাওল এবং ফ্রোন্ট এক্সটেনশন কিটে স্টিকারিংগুলো চোখে পরবে আপনাদের। এছাড়া ফুয়েল ট্যাংকে বেনেলি লগো এবং বেশ কিছু যায়গায় সিংহের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
হয়তোবা অনেকেই জানতে চাবেন বাইকটির build quality এবং longevity কি রকম। বাইকের প্রতিটি অংশই মজবুত ভাবে তৈরী করা। প্রায় ২ হাজার কিমি চালিয়ে আমাদের মনে হয়েছে বাইকটি দীর্ঘদিন ভাল সার্ভিস দেবে। এর ফুয়েল ট্যাংক এবং সাইড প্যানেল বেশ ভালমানের ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরী করা হয়েছে।
The instrument cluster is pretty large and informative. ড্যাশবোর্ডটি ছোট হলেও দিনের বেলাতেও বেশ ভাল্ভাবেই দেখতে পারবেন। এটিতে Speedometer, Trip meter, Odometer, Gear Indicator, Fuel Gauge সহ আরও বেশকিছু প্রয়োজনীয় ফিচারস রয়েছে। তবে এর ফাংশন সুইচটি হ্যান্ডেলবারে মাউন্ট করা হয়েছে।
বাজেটের মধ্যে Benelli 165s আপনাকে দেবে একটি পাওয়ারফুল ইঞ্জিন, Proper ব্রেকিং, stylish look, comfortable riding এবং Advanced features. And overall, it’s value for money. বাইকটির বর্তমান বাজারমূল্য নির্ধারন করা হয়েছে ২২৫,০০০ টাকা।
তবে বাইকটির LED হেডলাইটটি expected ফিডব্যাক দেয়নি। বাংলাদেশে বেনেলি এর Authorized Distributor aftab automobiles ltd কে বলব, বাইকারদের জন্য এই বাইকটির বেশি বেশি টেস্ট রাইডের ব্যবস্থা করে দিতে।
একটি টেস্ট রাইডে বাইকাররা জানতে চায় একটি বাইকের Actual performance সম্পর্কে। তাই আমরা চেষ্টা করেছি রিভিউটি ফিচার ভিত্তিক না করে performance এ ফোকাস দেয়ার জন্য। আমরা চেষ্টা করেছি বাইকটির Actual পার্ফরমেন্স আপনাদের সামনে তুলে ধরতে। যারা এই বাজেটের মধ্যে একটি পাওয়ারফুল নেকেড স্পোর্টস বাইক কেনার কথা ভাবছেন তারা এই বাইকটিকে পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন।
লিভ ফ্রি, রাইড সেফ ./.
- Hero Hunk DD ১৭০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ ( লিখেছেন- শান্ত) - এপ্রিল ২, ২০২৪
- Hero Hunk ১০,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ফাহিম হোসেন তপু) - মার্চ ১১, ২০২৪
- Hero Hunk ৪২,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ইফাজ আহমেদ) - মার্চ ১০, ২০২৪
You must be logged in to post a comment.