H Power CRZ 165 ফার্স্ট রাইড রিভিউ (সাধ্যের মধ্যে একটি স্পোর্টস বাইক)

আমাদের দেশে সিসি লিমিট থাকায় কম সংখ্যক ফুল ফেয়ারড স্পোর্টস বাইক পাওয়া যায়। জাপানী ব্রান্ডের আর সি.বি.ইউ (কমপ্লিটলী বিল্ট আপ) আকারে বাংলাদেশে আসলে ভ্যাট ট্যাক্সের কারণে দাম হয়ে যায় অনেক বেশি। আর তাই সাধ্যের মধ্যে একটি ফুল ফেয়ারড স্পোর্টস বাইক পাওয়া যায় হাতে গোনা কয়েকটি।

Loncin GP-এর পর বাংলাদেশি ব্রান্ড H Power Motors Co Ltd. ২ লাখ টাকার মধ্যে বাজারে নিয়ে এল আর একটি ফুল ফেয়ারড মোটরসাইকেল যেটি কিছু দিন আগে থাইল্যান্ড থেকে কিছু সংখ্যক আমদানী করা হয়েছিল এবং বেশ সাড়া ফেলেছিল অল্প সময়ে।

GPX Demon GR150 নামের সেই বাইকটি থাইল্যান্ড থেকে ইম্পোর্ট করা হয়েছিল বাংলাদেশে। বাইকটির ফ্রন্ট ডিজাইন ছিল অনেকটা Ducati Panigale এর মত। বাইকটির দাম ছিল ৩ লাখ টাকা। ইন্টারনেটে সার্চ করলে বিভিন্ন দেশে এই বাইকটির জনপ্রিয়তা বোঝা যায়। অন্যান্য দেশের অনেক বাইকারই এতে ডুকাটির স্টিকার ব্যবহার করে এবং হঠাৎ দেখে অনেকেই নাকি বেশ হতবম্ভ হয়ে যায়। বিশেষ করে যাদের হাইট ৫ ফিট ৬ ইঞ্চি’র নিচে তারা এই বাইকটির খুব ফ্যান হয়ে থাকে।

GPX Demon

ঠিক একই বাইকটি বাংলাদেশে CRZ নামে রি-ব্রান্ডিং করেছে H Power Motor Co Ltd. এবং বাইকটির দাম নির্ধারিত হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মাত্র।

এই দাম প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে সোশাল মিডিয়াতে কিছুটা উদ্দ্যেগ এবং কৌতুহল দেখা গিয়েছে। তাহলে কি H Power CRZ এর মধ্যে মানের কোন ঘাটতি রয়েছে? এটা কি GPX Demon-এর কপি?

আসলে তা নয়, মূলত GP Motor (থাইল্যান্ডে) এবং H power (বাংলাদেশে) উভয় কোম্পানী চাইনিজ নামকরা ব্রান্ড লংসিন থেকে CKD আকারে বাইকের যন্ত্রাংশ ইম্পোর্ট করে এবং নিজ নিজ দেশে এসেম্বল করে। তাই জিপি মটর থাইল্যান্ড থেকে পুনরায় সি.বি.ইউ আকারে বাইকটি আমদানী করতে খরচ অনেক বেড়ে যায়। অন্য দিকে ডিরেক্ট লংসিন থেকে CKD আকারে ইম্পোর্ট করায় বাইকটি কম মূল্যে মার্কেটে ছাড়তে পারছে H Power Co Ltd.

বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৬৫ সিসি’র এয়ারকুল ইঞ্জিন যা ১৪.১ Bhp ম্যাক্স পাওয়ার এবং ১৩.৫ Nm টর্ক উৎপন্ন করতে পারে। এতে থাকছে 6 স্পীড গিয়ার বক্স।

ফ্রন্ট ইন্ড ডিজাইন বেশ শার্প এবং লুকরেটিভ। সামনে টুইন এল,ই,ডি হেডল্যাম্প ব্যবহার করা হয়েছে। ড্যাসবোর্ডটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল। ৩টি কালার অপশন পাবেন এতে। প্রয়োজনীয় সব ফিচার যেমন স্পীডোমিটার, ওডোমিটার, টেকোমিটার, ফুয়েল গজ, গিয়ার ইন্ডিকেটর, ট্রিপমিটার, ক্লোক ইত্যাদ রয়েছে। শুধু তাই নয় মোবাইল চার্জ করার জন্য পাবেন একটি USB পোর্ট।

ফুয়েল ট্যাংকটি আকারে ছোট হলেও ১০.৫ লিটার পর্যন্ত ফুয়েল ধারণ করতে পারে। বাহির থেকে বাইকটিকে বেশ শক্তিশালী মনে হয়েছে। বিল্ট ইন কোয়ালিটি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট।

বাইকটি আকারে খানিকটা ছোট। ৫’৮’’ এর নিচের রাইডারদের জন্য উপযোগী বলে মনে হয়েছে। এর সিট হাইট ৭৮০ মিলিমিটার এবং চাকার রীমের সাইজ ১৪ ইঞ্চি। সামনে ১২০/৭০ এবং পেছনে ১৪০/৭০ সাইজের টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে।

CRZ 165 এর ওজন ১৩০ কেজি। এর সামনে এবং পেছনে ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে।

এর চেসিসে ট্রেলিস ফ্রেম রয়েছে যা এতে বাড়তি সৌন্দর্য্য দান করেছে। সামনে আপ সাইড ডাইউন এবং পেছনে মনোশক সাসপেনশন রয়েছে।

Exhaust-টি একেবারে ইউনিকভাবে ডিজাইন করা। স্পোর্ট ক্লিপ হ্যান্ডেল্বার হলেও বাইকটি আকারে ছোট হওয়ায় রাইডার বাড়তি কম্ফোর্ট পায়। এর এক্সিলারেশন, ব্রেকিং দেখে এটিকে একটি পারফর্মেন্স ওরিয়েন্টেড মোটরসাইকেল মনে হয়েছে।

বাইকটির ব্যবহারকারীদের কাছে জানা গেছে সিটি এবং হাইওয়ে মিলে এর মাইলেজ পাওয়া যায় ৩৫ কিঃমিঃ লিটার। আমরা চেষ্টা করব বাইকটির একটি টেস্ট রাইড রিভিউ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হওয়ার। এটি চালিয়ে মনে হয়েছে এর টপস্পীড অবশ্যই ১৪০ কিঃমিঃ/ঘন্টার এর কম হবে না।

ঠিক এই বাইকটির একটি ন্যাকেট ইডিশন বাজারে এনেছে কোম্পানীটি এবং যেটির নামকরণ করেছে CRF 150.

তবে দুইটির ইঞ্জিন আলাদা। CRF-এ ব্যবহার করা হয়েছে ১৫০ সিসি’র ইঞ্জিন। স্পোর্টি ক্লিপ হ্যান্ডেল বারে জায়গায় পাইপ হ্যান্ডেলবার এবং LED হেডলাইটের জায়গায় হ্যালোজেন হেডল্যাম্প ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যান্য সব ফিচার একই।