বাইক টায়ারের ডিজাইন এবং প্যাটার্ন কিভাবে নির্বাচন করবেন

ইয়াং কিংবা মধ্য-বয়স্ক, প্রায় সকল বয়সের মানুষের কাছেই মোটরসাইকেল রাইডিং একটা প্যাশনেট ব্যাপার। সবারই ছোটবেলা থেকেই বাইকের প্রতি আলাদা একটা নেশা কাজ করে। কেউবা বাবার কেউবা বড় ভাইয়ের বাইকে চালানো শিখে। সকল বাইকারের কাছেই তার বাইকটি আলাদা একটি ভালবাসা।

একটি বাইকের মাইলেজ কিংবা পার্ফরমেন্স কমে আসলে বাইকাররা অনেক সময় বুঝতে পারেননা সমস্যাটি কোথায়। বাইকের পার্ফরমেন্স কমে যাওয়ার কারনগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান কারন হল টায়ার। ভাল মানের টায়ার এবং রোড ট্রাকের ধরন অনুযায়ী সঠিক টায়ার প্যাটার্ন নির্বাচনের উপর বাইকের পার্ফরমেন্স অনেকাংশে নির্ভর করে। অনেকেই মনে করতে পারেন টায়ারের প্যাটার্নের উপর বাইকের পার্ফরমেন্স কিভাবে নির্ভর করে?

রোড কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে টায়ারের প্যাটার্নকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়।

  1. অফ-রোড প্যাটার্ন
  2. অন-রোড প্যাটার্ন
  3. ট্যুরিং প্যাটার্ন ও
  4. ডুয়েল পারপাস প্যাটার্ন।

অফ-রোড প্যাটার্নঃ 

আমাদের দেশের রাস্তাঘাটগুলো বেশির ভাগই অফ-রোড। অফ-রোডে রাইড করা বেশ চ্যালেঞ্জিং, বিশেষ করে ভাঙ্গা-চোরা রাস্তাগুলোতে। এই ধরনের রাস্তাগুলোতে সাধারনত হার্ড কম্পাউন্ডের টায়ার ব্যবহার করা হয় এবং এই রাস্তাগুলোর জন্য তৈরী টায়ারগুলোর প্যাটার্নও কিছুটা ভিন্নধর্মী হয়ে থাকে। অফ-রোড টায়ারের প্যাটার্নগুলো কিছুটা বড় হয়ে থাকে এবং দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়। এছাড়া হিল ট্রাকে অফ-রোড টায়ার থেকে বেশ ভাল ফিডব্যাক দেয়।

অন-রোড প্যাটার্নঃ

মূলত সিটি এবং হাইওয়ে রাইডের জন্য অন-রোড প্যাটার্ন তৈরী করা হয়। এই টায়ারের প্যাটার্নগুলো কিছুটা চিকন হয়ে থাকে যেন বাতাস চলাচলের সময় টায়ারটি মাটির সাথে ঠিকমত আটকে থাকে। এতে বেশ ভাল কর্নারিং পাওয়া যায় এবং চাকার স্কীডিং কমে আসে। তবে অন-রোড টায়ারের মাইলেজ কিছুটা কম হয়। সফট কম্পাউন্ড রাবার দিয়ে এই টায়ার তৈরী করা হয় বলে রাস্তার সাথে এই টায়ারের ট্রাকশন বেশি হয়। এছাড়া অফ-রোড টায়ারের থেকে এর আয়ু কিছুটা কম।

ট্যুরিং প্যাটার্নঃ 

এই টায়ারগুলো সাধারনত ৬০% অফ-রোড এবং ৪০% অন-রোড হিসেবে তৈরী করা হয়। অর্থাৎ বাইকাররা যেহেতু বেশিরভাগ সময় ট্যুর করার সময় অফ-রোড ব্যবহার করেন তাই এই টায়ারগুলো ৬০% অফ-রোড উপাদান দিয়ে তৈরী করা হয়। ট্যুরিং প্যাটার্নের টায়ার থেকে তুলোনামূলক ভাল মাইলেজ পাওয়া যায় এবং দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। তবে এই টায়ারগুলো কর্নারিংয়ের সময় খুব একটা ভাল ফিডব্যাক দেয় না। এই টায়ারগুলোতে বেশিরভাগ সময় ডোরা-কাটা প্যাটার্ন ব্যবহার করা হয়।

ডুয়েল পারপাস টায়ারঃ

এই টায়ারগুলো ৫০% অফ-রোড এবং ৫০% অন-রোড ব্যবহার উপযোগী হিসেবে তৈরী করা হয়। এই প্যাটার্নের টায়ারগুলো কার্নারিংয়ে সময় খুব ভাল ফিডব্যাক না দিলেও ভেজা এবং পিচ্ছিল রাস্তায় বেশ ভাল গ্রিপ দেয়। এই টায়ার থেকে আপনি অফ-রোডে এবং অন-রোডে বেশ স্মুথভাবে রাইড করতে পারবেন। এছাড়া এই টায়ার থেকে বেশ ভাল মাইলেজ পাওয়া যায় এবং প্রায় ১২,০০০ + কিমি নিশ্চিন্তে রাইড করতে পারবেন।

অনেকেই হয়ত চিন্তা করবেন এত ভেরিয়েশনের টায়ার বিদেশি কোন কোম্পানি ছাড়া তৈরী করা সম্ভব নয়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম টিউব্লেস টায়ার প্রস্তুতকারক কোম্পানি টোরিন তৈরী করছে আন্তর্জাতিক মানের সকল সেকশন এবং প্যাটার্নের টায়ার তুলোনামূলক কম দামে। তবে চলুন জেনে নিই কোন প্যাটার্নের কি কি টায়ার তৈরী করছে তারা,

অন-রোড প্যাটার্নঃ 

  1. Soldier
  2. Arrow-C
  3. Arrow-Y
  4. Agni
  5. Lion
  6. Arrow
  7. Lion-R
  8. LionSpeed
  9. Geox
  10. Superride
  11. Road Gripper
  12. Aviva
  13. Blade
  14. Arena

 

 

ডুয়েল পারপাস টায়ারঃ

  1. Max Grip
  2. Arrow R
  3. Eagle
  4. Ranger
  5. Speedo
  6. Cheeta
  7. Optima
  8. Journey
  9. Raceking
  10. Arrow-Z

ট্যুরিং প্যাটার্নঃ

  1. Crossroad
  2. Rhino
  3. Tiger
  4. Cyclone
  5. Tiger Plus
  6. Supercross

অফ-রোড প্যাটার্নঃ 

  1. Racetech
  2. Rock

তাই আপনি কোন রোড কন্ডীশনে মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে চান সে বিষয় চিন্তা করেই আপনার টায়ার এবং প্যাটার্ন নির্বাচন করুন। এর ফলে আপনার বাইকের বেস্ট পার্ফরমেন্স এবং ভাল মাইলেজ পাবেন। একই সাথে টায়ার থেকে বেশ ভাল ফিডব্যাকও পাবেন।

Related Posts

error: Content is protected !!