Keeway RKR165 মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন – Salah Ahammad Hridoy Patowary)

Keeway RKR165 1 Year User Review
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। Keeway RKR165 বাইক টি ১ বছর আগে ১৩-০৫-২০ তারিখে তেজগাঁও শো-রুম থেকে ক্রয় করেছিলাম। আমার ইচ্ছে ছিলো ১ বছর ব্যবহার করে ১ টি রিভিউ দিবো।

 

প্রথমে বাইকটির ব্র্যান্ড নিয়ে কথা বলি-
কিওয়ে ইউরোপিয়ান হাঙ্গেরি ব্র্যান্ড এর বাইক। ইউরোপের ৩০ টি দেশে, আমেরিকার ১৪ টি দেশে, এশিয়ার ১২ টি দেশে, আফ্রিকার ৮ দেশ সহ পৃথিবীর ৬২+ দেশে এই কিওয়ে মটরসাইকেল দাপিয়ে চলতেছে। যারা কিওয়ে কে চায়না কোম্পানি বলে গলা ফাটাচ্ছেন মজার বিষয় হচ্ছে চায়না তে এই বাইক চালাবে তো দূরের কথা কিওয়ে কোম্পানি চায়না তে এই বাইক বিক্রির জন্য ডিলারশীপই দেয়নি। যাদের সন্দেহ আছে বা এই বাইক সম্পর্কে না জেনেই এতো দিন কথা বলেছেন বা কিছুই জানেন না তারা Keeway dot com এ গিয়ে এই বাইক সম্পর্কে জেনে আসতে পারেন।

 

ইউরোপিয়ান কিওয়ে কোম্পানি এশিয়া মহাদেশের জন্য বাইক গুলো খরচ কমানোর জন্য চায়নাতে এসেম্বলি করে। যেমন টা আমেরিকান এপোল কোম্পানি এশিয়া মহাদেশের জন্য চায়নাতে আইফোন এসেম্বলি করে। তাই বলে আইফোন চায়না ব্র্যান্ড হয়ে যায়নি। যাই হোক এতো কথা বলার ১ টাই কারন তা হলো বাইক টি নেওয়ার পর থেকেই ১ শ্রেনির লোকেরা এটা চায়না বাইক, তাই চায়না বেশি দিন যায়না এবং ৩ মাস, ৬ মাস চালানোর পর বাইকের নাট বল্টু সহ সব কিছু খুলে পরে যাবে কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবেনা এমন কথা বলতে বলতে আমার কান ঝালাপালা করে ফেলছে। তাদের কে বলেছি এটা চায়না হোক আর ইউরোপীয়ান হোক বা বাংলাদেশি কোন তাতে কারো যায়-আসে না, আমার টাকা দিয়ে আমি আমার নিজের বুঝেই আমি ক্রয় করেছি।

 

তাদের উদ্দেশ্যেই মূলত ১ বছরে আজ পর্যন্ত ৭০৪৫ কিঃমিঃ চালিয়ে রিভিউ দিচ্ছিঃ
১) বাইক টি ১ বছর চালানোর পরেও এখনো কোনো নাট বল্টু খুলে পরে যায়নি।
২) ১ বছরে এখন পর্যন্ত ইঞ্জিনে হাত দিতে হয়নি।
৩) এই ১ বছর চালিয়েও এখন পর্যন্ত কোনো পার্টস পরিবর্তন করতে হয়নি।
৪) শুধু Clutch তার ছিড়ে গেছিলো ২০ টাকা দিয়ে ১ টা লাগিয়ে নিয়েছি।
৫) বাইক টি স্ট্যান্ড করতে গিয়ে পরে গিয়ে লুকিং গ্লাস ভেঙে গিয়েছিলো তাই পরিবর্তন করিয়েছি। পরিবর্তন না করেও চালানো যেতো।

 

আমি বাইক টি নেওয়ার কারন-
১) ২ লক্ষ ১৫ হাজার টাকায় একটি ফুল ফেয়ারিং স্পোর্টস বাইক পাওয়া সত্যিই অকল্পনীয়।
২) বাইক টি ১৬৫ সিসি।
৩) বাইকটি CBS Braking System
৪) রাইডার ভুল করে স্ট্যান্ড না তুলে গিয়ার ফালানোর সাথে সাথে বাইক এর স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাবে। এবং গিয়ার ও স্ট্যান্ড ফালানো অবস্থায় স্টার্ট দিতে চাইলে স্টার্ট হবে না।
৫) বাইক রাইড করার সময় বাইক কতটা হিটিং হচ্ছে তার টেম্পারেচার মিটারে দেখতে পারবেন।
৬) বাইকটি চালানোর সময় আপনি কতো নাম্বার গিয়ারে চালাচ্ছেন সেটি মিটারে দেখতে পাবেন।
৭) বাইক এর মিটারে সময় দেখতে পাবেন।
৮) বাইক টি অনেক পাওয়ারফুল।
৯) বাইকটিতে ৩ টা Spark plug ব্যবহার করা হয়েছে।
১০) বাইক টিতে EFI ইঞ্জিন।
১১) 165cc Sports বাইক হওয়ার পরেও ৪০/৪৫ মাইলেজ পাওয়া যায়।
১২) 1-Cylinder/4-Stroke/4-Valve
১৩) 17.83Bhp/9500r/min.
১৪) Torque 14.0N.m/7000r/min.
১৫) 6-speed Gearbox
১৬) Front Tyre:-100/80-17, Rear Tyre:-140/70-17

 

বাইকটির ভালো দিক –
১) লং রাইড করলে কোন প্রকর হাতে কোমড়ে ব্যাথা করবে না।
২) বাইক টির ওজন বেশি হওয়াতে হাইওয়েতে চালিয়ে সেই মজা পাওয়া যায়।
৩) CBS Braking System এর কারনে Braking এ সেই কনফিডেন্স পাওয়া যায়।
৪) O ring চেইন, তাই বারবার চেইন টাইট দিতে হয় না।
৫) ৩টা Spark Plug আছে।
৬) Stand Safty ফিচার রয়েছে।
৭) পার্টস মোটামুটি এভেলেবেল।

 

বাইকটির খারাপ দিক –
১) Singel হর্ণ, আমি হাইড্রলিক লাগিয়ে নিয়েছি।
২) Radiator Guarde দেয়নি।
৩) ঢাকা ছাড়া ভালো সার্ভিস সেন্টার নেই।
৪) সিটিতে রাইড আরামদায়ক নয়।
৫) বাইক টির হাইট বেশি হওয়ায় ৫ ফিট ৬ ইঞ্চির নিচের লোকরা পারফেক্টলি চালাতে পারবে না।
৬) বেশি ওজন হওয়ার কারণে কর্ণারিং এ প্রবলেম হয়।
৭) আরপিএম সাড়ে ১০ হাজারে লক করা, যার কারণে ১৪০ এর উপরে টপ স্পিড সম্ভব না। যদি unlock করা যায় তবে ১৪৫+পাওয়া যাবে।

 

আর হ্যাঁ আমার মতামত বা যুক্তির সাথে অন্যজনের মতামত নাও মিলতে পারে, এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত।
সর্বদা হেলমেট ব্যবহার করবেন, আজকের জন্য এই পর্যন্তই, আল্লাহ হাফেজ।
লিখেছেন – Salah Ahammad Hridoy Patowary

Related Posts

error: Content is protected !!