দেখতে দেখতে চলে এলো শীতকাল আর শীত মানেই যেন কুয়াশার চাঁদর। আর ঠিক এই সময়টাতে প্রায় প্রতিটা গাড়িতে আলাদা করে লাইট ব্যবহার করা হয় যাকে বলা হয়ে থাকে ফগ লাইট, এটি মূলত কুয়াশা কাটতে সাহায্য করে। বিশেষ করে বাইকাররা যারা হাইওয়েতে রাইড করেন তাদের জন্য ফগ লাইটের প্রয়োজন অনেক বেশি। আমাদের দেশে হাইওয়েতে বড় গাড়ি বাস, ট্রাক, বা অন্যান্য গাড়িতে অতিরিক্ত আলোর লাইট ব্যবহারের ফলে অন্য দিক থেকে আসা আমাদের বাইকের জন্য চলাচল খুব বিপজ্জনক। আর শীতকালে সেই বিপদ যেন আরো বেশি। আর আমাদের সকল বাইক গুলোতে যে স্টক লাইট থাকে তা আমাদের জন্য মোটেও পর্যাপ্ত না, আমরা অনেক সময় হেডলাইট বাল্ব বদলে এলইডি লাগিয়ে নেই কিন্তু সেটিও হাইওয়েতে পর্যাপ্ত আলো দিতে সক্ষম নয়। শেষ ভরসা ফগ লাইট, আমাদের দেশে এখন ফগ লাইটের ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে, কম বেশি এখন সবাই জানি ফগ লাইট সম্পর্কে। তবে ফগ লাইট কেন, কিভাবে বা কোথাইয় লাগাবেন এই নিয়ে আজকের লিখতে বসা।
আমাদের দেশে ফগ লাইটের কিছু বিধি নিষেধ আছে আইনে, অবশ্যই সেগুলো মেনে আমাদের লাইট ব্যবহার করতে হবে। তবে তার আগে জেনে নিবো বাজারে কিছু পরিচিত ভাল মানের ফগ লাইট সম্পর্কে। বর্তমান বাজারে বেশ কিছু ভাল মানের ফগ লাইট পাওয়া যায় বাইকের জন্য প্রায় ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন মানের ও ওয়াটের লাইট পাওয়া যায়।
NAME | Watt | Luminous flux | Price(Pair) |
A7 Pacific/Cree/HJC | 40W | 4500 | 1800-2400/- |
Cree Two light | 20W | 2000 | 800-1200/- |
HJC KZ30 | 60W | 6000 | 2500-3000/- |
FNM Single | 20W | 3200 | 4000-4500/- |
L4X | 40W | 4500 | 2500-3000/- |
L6X | 60W | 6000 | 3000-3500/- |
L9X | 90W | 9000 | 3300-3500/- |
উপরের ফগ লাইট গুলো আমাদের বেশ পরিচিত নাম। এছাড়াও বাজারে নন ব্রান্ডের আরো অনেক কম দামী লাইট রয়েছে, এবার আসি ফগ লাইটের উপকারিতা নিয়ে, শুধু শীতকাল নয় সাধারণ সময়েও হাইওয়েতে নাইট রাইডের সময় আমাদের স্টক লাইটে চলাচল খুবই কষ্টকর, আমরা যারা নাইট রাইড করি তারাই হয়তো বুঝি এই সমস্যা কি।
ভাল মানের ফগ লাইট রাস্তা অনেক দূর পর্যন্ত ভালভাবে দেখা যায়, আর রাতের বেলা রাস্তা যতো দূর পর্যন্ত ভালভাবে দেখা যায় বাইক রাইডে ততো ভাল কনফিডেন্স পাওয়া যায়। আর অপর পাশের বড় গাড়ি গুলো আমাদের বাইকারদের তো দেখেই না আর সেটা যদি রাতে হয় তাহলে তো কথাই নেই। এর কারণে ফগ লাইট থাকলে তাদের চোখে সহজেই পড়বেন এবং তারাও আপনার লাইটের আলোতে আপনাকে কিছুটা হলেও সাইড দিবে। আর এই শীতের সময় রাতে ঘন কুয়াশা থাকে যার ফলে রাস্তা দেখা মাঝে মাঝে একদম অস্পষ্ট হয়ে যায়, এজন্য ফগ লাইটের গুরুত্ব অনেক বেশি, আর ফগ লাইটের সাথে হলুদ গ্লাসের কভার পাওয়া যায় শীতের সময় এই জিনিস ব্যবহার করতে ভূলবেন না, যা আপনার ফগ লাইটের আলোকে হলুদ করে দিবে আর কুয়াশার মাঝে সাদা আলোতে আপনি কিছুই দেখতে পারবেন না কেননা সাদা আলো কুয়াশাকে আরো সাদা ধোয়ার মতো করে দেয় তাই হলুদ ক্যাপ টি ব্যবহার করুন আর একটি কথা হলুদ আলো কুয়াশা কাটতে বেশ সাহায্য করে। আর হলুদ আলোতে আপনাকে অন্য গাড়ি দূর থেকে লক্ষ্য করতে পারে। আর একটি বিষয় ঘন কুয়াশা হোক কিংবা বৃষ্টি চেষ্টা করবেন লাইটের পাশাপাশি ইমার্জেন্সি লাইট ও জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য।
এবার আসবো ফগ লাইটের কিছু খারাপ দিক নিয়ে, অবশ্যই প্রতিটা জিনিসে ভাল খারাপ দিক আছে। তেমনি ফগ লাইট ব্যবহারের ফলে কিছু খারাপ দিক ও আছে। সাধারণত একটি বাইকের ব্যাটারী পাওয়ার খুব বেশি হয়ে থাকে না ১০-১২ ভোল্টের ব্যাটারী হয়ে থাকে, যার ফলে খুব বেশি কিছু যেমন লাইট হর্ণ বা ইলেক্ট্রিক অন্যান্য কিছু ইন্সটল করলে তা সরাসরি ব্যাটারীর উপর প্রভাব ফেলে। আর এইসব ফগ লাইট গুলো বেশ পাওয়ারফুল যা সহজে বাইকের ব্যাটারীকে দূর্বল করে ফেলতে পারে। এমনও হয়ে যায় বাইকের ব্যাটারী বসে যেতে পারে। তাই বাইক স্টার্ট না করে কখনো ফগ লাইট জ্বালিয়ে রাখবেন না।
তারপর একটি জিনিস আমাদের দেশে বাইকে ফগ লাইটের জন্য নাকি অনেক সময় মামলা দেয়া হয়। আসলে এই জিনিসটা একটু ক্লিয়ার করি আগে, সড়ক আইনে এখনো ফগ লাইট নিয়ে তেমন কিছুই বলা হয় নি তবে ফগ লাইটের পজিশনের উপর অনেকটাই নির্ভর করে, ফগ লাইট কখনোই হেডলাইটের উপরে লাগাবেন না চেষ্টা করবেন হেডলাইটের নিচে লাগানোর জন্য অথবা হেড লাইট বরাবর আর খেয়াল রাখবেন এমন পজিশন এ দিবেন না যাতে সরাসরি অপর প্রান্তে গাড়ি চালকের চোখে না লাগে অথবা রাস্তায় চলাচলকারী পথচারীদের সমস্যা না করে। তারমানে কিছুটা নিচু করে লাইটের পজিশন রাখুন। আর একটি বিষয় সিটিতে রাইডের সময়ে ফগ লাইট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন, সিটিতে সাধারণত ফগ লাইটের প্রয়োজন হয় না।
সবশেষে বলি বাইকে ফগ লাইট এমন লাগাবেন যাতে করে এর ব্যাটারীর উপর কোনো প্রভাব না পড়ে, তার জন্য অবশ্যই রিলে দিয়ে ফগ লাইট ব্যবহার করবেন এবং অবশ্যই ফগ লাইটের জন্য আলাদা সুইচ ব্যবহার করবেন। হেড লাইটের সাথে ফগ লাইটের সুইচ একসাথে করলেই হেড লাইট কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর রিলে করে ফগ লাইট ব্যবহার করলে সরাসরি ব্যাটারীর উপর কোনো প্রভাব পড়ে না, লাইট কাটার ভয় থাকে না। আর অবশ্যই বাইক স্টার্টের পরে ফগ লাইট চালু করবেন। সাধারণত বাইকে আলাদা হর্ণ বা লাইট লাগালে তা রিলে করে লাগানোই ভাল বাইকের জন্য।
আশা করি, এই সকল বিষয় খেয়াল রেখে বাইকে ফগ লাইট ব্যবহার করতে পারবেন।
- Hero Hunk DD ১৭০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ ( লিখেছেন- শান্ত) - এপ্রিল ২, ২০২৪
- Hero Hunk ১০,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ফাহিম হোসেন তপু) - মার্চ ১১, ২০২৪
- Hero Hunk ৪২,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ইফাজ আহমেদ) - মার্চ ১০, ২০২৪
You must be logged in to post a comment.