Yamama MT-15 মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ইরফান বাবু)

বাংলাদেশে নেকেড স্পোর্টস সেগমেন্টে খুব বেশি একটা অপশন নেই, যেসব বাইক বর্তমান বাজারে আছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে Yamaha MT-15 যাকে কিনা বলা হয় মাস্টার অব টর্ক। আমার নতুন বাইক এর প্রতি চাহিদা অনেক বেশি, বাজারে যেকোন নতুন বাইক আসলেই যেন মনে হয় ওইটা নিতেই হবে। ঠিক সেভাবেই যখন এসিআই মটরস অফিশিয়ালি MT 15 নিয়ে আসে, তখন ঠিক করি এটাই নিবো।

যদি বলেন কেন নিয়েছি এই বাইক, তাহলে বলবো প্রথমে এর লুকস এর কথা বর্তমান বাজারে যতোগুলো নেকেড স্পোর্টস বাইক আছে তার মাঝে অন্যতম সেরা এখন অব্দি এই বাইক, এছাড়া এতে ব্যবহার করা হয়েছে Yamaha R15 V3 এর একই ইঞ্জিন সুতরাং এর পাওয়ার নিয়েও কোনো সংশয় নেই। আর এটাতে এবার দেয়া হয়েছে সিংগেল চ্যানেল এবিএস, সুতরাং কেন নিবো না এই বাইক।

প্রতিটা জিনিসেরই ভাল খারাপ আছে সেটা যাই হোক কোনো জিনিসই ১০০ ভাগ ভাল হয় না, আমি এই বাইকোটি প্রায় ১০ হাজার কিঃমিঃ রাইড করেছি, এর মাঝে লং ট্যুর শর্ট ট্যুর আর সিটি রাইড তো আছেই। আজকে সেই রাইডের অভিজ্ঞতা এবং এর ভাল ও মন্দ দিকগুলো তুলে ধরবো।

প্রথমেই আসি এর খারাপ কি কি লেগেছে, যদিও এর খারাপ লাগা অনেক কম।

এর মাঝে অন্যতম হলো এর সিট, সিট টা বেশ হার্ড একটা দীর্ঘসময় বাইকটা চালালে মোটামুটি বিরক্ত ফিল হয়। আর এর পিলিয়ন সিট অনেকটাই ছোট, যেটাতে লং ট্যুরে পিলিয়ন নিয়ে সাথে যদি ব্যাগ থাকে বেশ যুদ্ধই করতে হবে। অবশ্য একটা স্পোর্টস বাইকে এতো কিছু চাওয়াও ঠিক নয়। এর পরে হচ্ছে এতে ব্যবহার করা হয়েছে যেহেতু ভি৩ এর ইঞ্জিন সেহেতু ভেবেছিলাম একদম সমান পাওয়ার পাবো তবে আমার কাছে কিছুটা কম মনে হয়েছে অবশ্য এটা নেকেড এর জন্য হতে পারে। আর এইটাতে চাইলে ডুয়াল চ্যানেল এবিএস দিতে পারতো ইয়ামাহা, কেননা আমার কাছে মনে হয় সিংগেল চ্যানেল এবিএস টা কোনো কাজের মনে হয় না। এইসব ছাড়া আর তেমন কোন বড় ইস্যু পাই নি আমি।

এবার আসি বাইকের ভাল লাগার দিকগুলো, এর ভাল লাগার দিক আসলে অনেক।

যেহেতু এটি বাংলাদেশের নেকেড স্পোর্টস বাইকগুলোর মাঝে সেরা সেহেতু এর অনেক গুন থাকবে স্বাভাবিক। প্রথমেই আসবো বাইকের ব্রেকিং এবং ব্যালেন্স নিয়ে, যেটি একটি বাইকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইয়ামাহা মানেই ব্রেকিং এ সেরা পারফরম্যান্স দিবে এবং এই বাইকেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। এর ব্রেকিং ব্যালেন্স নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই এক কথায় অসাধারণ।

ইয়ামাহার ভার্সন ৩ তে অবাক করার মতো মাইলেজ দিয়েছিলো, এটাতেও যেহেতু একই ইঞ্জিন আমি এখন এটাতে মাইলেজ পাচ্ছি ৪৩-৪৫ কিঃমিঃ লিটারে, এটা একটা স্পোর্টস বাইক থেকে অনেক ভাল মাইলেজ বলে আমি মনে করি।

এর পরে বলবো এর সিটিং পজিশন এবং কম্ফোর্ট নিয়ে, এর সিটিং পজিশন এতোটা সুন্দর করা হয়েছে যে চালানোর সময় একটা লম্বা সময় একটানা চালালেও কোন প্রকার ব্যাক পেইন বা এমন কিছু পাবেন না, আমি বেশ কিছু লং ট্যুর দিয়েছি আমার কোনো প্রকার সমস্যা হয় নি। আর একটা স্পোর্টস বাইক হওয়া স্বত্তেও এটাতে এতোটা কম্ফোর্ট হবে ভাবি নি আমি।

এর পরে আসবো এর স্পিড নিয়ে, এর এক্সিলারেশন নিয়ে কোনো সংশয় নেই, এর নামই মাস্টার অব টর্ক। এর ইনিশিয়াল এক্সিলারেশন অসাধারণ, হাইওয়েতে একটা বাস বা ট্রাক ওভারটেক করতে যেটা আপনাকে যথেষ্ট হেল্প করবে। আমি খুব একটা স্পিডিং পছন্দ করি না এখন পর্যন্ত এটাতে টপ স্পিড পেয়েছি ১২৭কিঃমিঃ তবে আমি বলতে পারি ১৩৮-১৪০ ভালভাবে উঠতে পারে এই বাইকে।

এবার আসি যার কারণে এই বাইকটা নেয়া এর লুক, এর হেডলাইট এর লুক কে আরো এগ্রেসিভ করে দিয়েছে, অন্যরকম লুক দিয়েছে। শুধু দেখতেই না এর আলো ও ভাল যথেষ্ট, তবে সবাই এক মত নাও হতে পারে, হাইওয়েতে যারা রেগুলার রাইড করেন তারা চাইলে একটা এক্সট্রা ফগ লাইট লাগিয়ে নিতে পারেন।

এর পর বলবো এর সেলস আফটার সার্ভিস, এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। এসিআই এর কাছে কেউ সেলস আফটার সার্ভিস খারাপ পেয়ছে এরকম খুব কম শুনেছি, আমি খুবই ভাল পেয়ছি এমনকি লক ডাউনের সময় আমার বাইকের ব্যাটারী বসে গেছিলো, সেই সময় আমি তাদের ফোন দিলে সার্ভিসের লোক এসে বাসায় বাইক সার্ভিস করে দিয়ে যায়, এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়ার নয়।

সব মিলিয়ে আমি সন্তুষ্ট Yamaha MT-15 নিয়ে।

লিখেছেন- ইরফান বাবু  

Related Posts

error: Content is protected !!