MT Stringer হেলমেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা

একটা সময় ছিল যখন শুধু প্রয়োজনের জন্যই বাইক ব্যবহার করা হতো। সেফটির ব্যাপারে সেই সময়ের মানুষ ছিল উদাসীন। কালের পরিক্রমায় বাইক হয়ে উঠেছে একটি জনপ্রিয় যানবাহন। এখন প্রয়োজনের বাহিরেরও বাইক নিয়ে করা হচ্ছে ট্রাভেলিং। বাইক ব্যবহারে বর্তমান যুগের বাইকাররা হয়ে উঠেছে সচেতন। এখন একজন বাইক প্রেমী চায় তার কাছে ভালো মানের সেফটি গিয়ার থাকুক, থাকুক একটি ভালো মনের সার্টিফাইড হেলমেট। এই চাওয়া থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে আমদানী করছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ভালো মানের কিছু হেলমেট। এই হেলমেট গুলোতে থাকছে DOT, ECE, SHARP এর মত সার্টিফিকেশন।

এজন বাইকার হিসেবে আমিও সব সময় সার্টিফাইড হেলমেট এর ব্যপারে খুবই কনসার্ন। আমার বেশ কয়েকটি হেলমেটের মধ্যে  MT Stinger একটি। মূলত MT স্প্যানিশ অরিজিন হেলমেট ব্র্যান্ড। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে MT হেলমেট পাওয়া যায়, বাংলাদেশ ও তার ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশে MT হেলমেট আমদানি করে MT Helmet Bangladesh এবং এর অথরাইজড ডিস্ট্রিবিউটার Raida Tred international. বিভিন্ন সার্টিফিকেশন ও আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স এর কারণে MT হেলমেট অল্প সময়ের মধ্যে অনেক বাইকারের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমি MT Stringer হেলমেটটি বিগত এক বছর ধরে ব্যবহার করছি। আমার লাস্ট রোড ট্রিপের সাথী ছিল এই হেলমেটটি। যা ছিল প্রায় ১৯০০ কিলোমিটারের মত। এই রোড ট্রিপ থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা এবং রেগুলার ইউজ এর অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে আজ শেয়ার করতে যাচ্ছি।

 

আমি আসলে সিটি রাইডের জন্য একটি সার্টিফাইড হেলমেট খুঁজছিলাম। রেগুলার সিটি রাইডের জন্য যে হেলমেটটি আমি ব্যাবহার করবো তার ব্যাপারে আমার বেশ কিছু রিকোয়ারমেন্ট ছিল:

১) হালকা ওজন।

২) ভালো মানের ড়্যাস ফ্রী প্যাডিং।

৩) ভালো এয়ার ভেন্টিলেশন।

৪) ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ভিউ।

৫) ডাস্ট প্রটেক্ট ভাইসর।

৬) এ্যাটলিস্ট DOT,ECE সার্টিফিকেশন।

৭) রিমুভাল এন্ড ওয়াশেবল প্যাডিং।

৮) দামের দিক থেকে একটু সাশ্রয়ী।

৯) একটু আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স এবং লুকস।

সার্টিফাইড হেলমেট এর ব্যাপারে আমার সবসময় আস্থা ছিল MT হেলমেট এর উপরে, এবং MT Stringer মডেলটি আমাকে উপরুক্ত সবগুলো রিকোয়ারমেন্ট অফার করে। ব্যাস! মিলে গেল দুয়ে দুয়ে চার, নিয়ে নিই MT Stinger মডেলের একটি হেলমেট।

সত্যি কথা বলতে, হেলমেটের হালকা ওজন, ওয়েট ব্যালান্স, ওয়াশেবল প্যাডিং, এয়ার সার্কুলেশন সিস্টেম ও গ্রাফিক্স সত্যিই প্রশংসনীয়। ব্যবহারের পরে আমার কাছে মনে হয়েছে হেলমেটটি ভেলু ফর মানি। যেহেতু হেলমেট এর ব্যাপারে আমি খুবই সন্তুষ্ট ছিলাম তাই লাস্ট রোড ট্রিপ এ আমি এই হেলমেট ব্যবহার করি।

লং রান এর ক্ষেত্রেও হেলমেটের পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালো। তবে কিছু বিষয় আর একটু বেটার হতে পারত:

১) ১০০+ গতিতে স্টাবিলিটি একটু অভাব মনে হয়েছে।

২) ভাইসর খুলে রাইড করলে লাস্ট পয়েন্টে একটু নড়াচড়া করে। একদম লক হয়ে থাকে না। এটা তেমন কিছু না হলেও হঠাৎ ভয় লাগে।

৩) এক্সট্রা একটা সান ভাইসরের বেশ অভাব বোধ করেছি।

তবে এরোডায়নামিক সেপ, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ভিউ, এয়ার সার্কুলেশন সিস্টেম, ওয়েট ব্যালান্স লং রাইডের জন্য বেশ ভালো।

 

উল্লেখিত একটি ঘটনা: ট্যুর শেষে ঢাকায় ব্যাক করার সময়, একটি ব্রেক পয়েন্টে আমার হেলমেটটি বাইকের উপর থেকে মাটিতে পড়ে যায়। এতে বাম পাশের ভাইসর লাগানোর চাপাটি উপরে উটে আসে। এতে প্রয়োজন অনুযায়ী ভাইসর উঠা নামা করতে সমস্যা হচ্ছিল। ঢাকায় ফিরে রাইদা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমার হেলমেটটির চাপাটি পরিবর্তন করে ঠিক করে দেয়। এবং ফ্রিতে হেলমেটটি ওয়াস করে দেয়। ব্যাপারটা সত্যি আমাকে মুগ্ধ করেছে বিশেষ করে স্পেয়ার পার্টস এর অ্যাভেলেবললিটি চমৎকার। আর তাদের ব্যবহারের কথা না বললেই নয়, দে বিহেভড লাইক ব্রাদার।

পরিশেষে বলতে চাই, আসুন নিজেদের সেফটির জন্য হেলমেট পরিধান করি, পুলিশের ভয়ে নয়।

Live Free, Ride Safe.

অলি আহাদ খান

Related Posts

Add Comment

রিপ্লে দিন

error: Content is protected !!