New Suzuki Gixxer SF, ১০০০ কিঃমিঃ রাইডিং অভিজ্ঞতা

নতুন সুজুকি জিক্সার এসএফ এফআই সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস নেওয়ার পর থেকে অনেকে ইনবক্স করেছেন রিভিউ এর জন্য তাই আমার কিছু এক্সপেরিএন্স শেয়ার করছি প্রায় হাজার কিলোমিটার রাইডের পর।

বাইকের লুকঃ

নুতুন সুযুকি জিক্সার এসএফ এর লুকটা সত্যি সুন্দর … যারা সুযুকি হেটার তারাও এই লুক পছন্দ না করে পারবেনা আর আমি তো লুক দেখেই পছন্দ করে ফেলেছি … সত্যি বলতে কি একজন বাইকার প্রথমে দেখে বাইকের লুক তারপর স্পেক নিয়ে ঘাটাঘাটি করে … আর কিট সহ এমন ডিজাইন শুধু আমাদের দেশে সোকল্ড প্রিমিয়াম বাইকের আছে … আর এই বাইকের প্ল্যাস্টিক আইটেমের কোয়ালিটি খারাপ না …

লুকিং গ্লাস দেখতে ভালোই কিন্তু কাজে একটু দূর্বল মনে হয়েছে আমার কাছে কারন ভিউ আরএকটু বেশী দেখা গেলে ভালো লাগতো …

ডিজিটাল মিটার নিয়ে এখনো বেশী ঘাটাঘাটি করা হয়নি তবে ঘড়ি আর গিয়ার ইনডিকেটর দেখে ভালো লেগেছে … আর হেডলাইটের আলো যে খুব ভালো সেটা বুজেছি দিনের বেলা অন্য সাইড থেকে মানুষের লাইট বন্ধ করার সিগন্যাল দেখতে দেখতে … তবে কুয়াশা আর ধুলাবালিতে এই লাইট কিন্তু ফ্রেন্ডলি না। এক্সট্রা ফগ লাইট লাগালে বাইকের রূপে ভাটা পড়ে বলে আমার মনেহয় তবে আশাকরছি এই বাইকে এক্সট্রা ফগ লাইট লাগাতে হবেনা তবে ক্রাস গার্ড লাগানোর একটা সিস্টেম বের করতে হবে।

সিটিং পজিশন, কম্ফোর্ট আর সাস্পেন্সনঃ

খুব অবাক হয়েছি যখন এই বাইকে প্রথম বসেছি কারন এতটা কম্ফোর্ট পাবো সেটা আশা করিনি … আর বাইকারের হাইটের সাথে কম্ফোর্ট একটা ইস্যু থাকে আমার হাইট ছয়ফিট থেকে হাফ ইঞ্চি কম।

আপনি যদি সিটিং পজিশন আর কম্ফোর্টনেস কম্পেয়ার করতে চান অন্য বাইকের সাথে তাহলে দুটো বাইক একই সময়ে একই রাস্তায় চালিয়ে দেখতে পারেন তাহলে আপনি নিজেই বুঝে যাবেন কোন বাইকের সিটিং পজিশন আর কম্ফোর্ট আপনার জন্য প্রযোজ্য।

বাইক নিয়ে ঈদের পরদিন ঢাকা থেকে গিয়েছিলাম দিনাজপুর আর গোবিন্দগঞ্জ থেকে দিনাজপুর প্রায় ১৩২ কিলোমিটার পুরো রাস্তার পীচ নেই মাটির রাস্তা হয়ে আছে কারন ফোর লেনের কাজ শুরু হয়েছিল যেটা করোনার কারনে বন্ধ তাই সাস্পেন্সন টেস্ট ঐ রাস্তায় হয়ে গেছে … ফ্রন্ট আর ব্যাক সাস্পেন্সন লেটার মার্কস (এখনতো আবার জিপিএ ) সহ পাশ করেছে তবে পিছনের সাস্পেন্সনটা মনেহয় কিছুদিন পর আর একটু ভালো হবে।

ব্রেক আর কন্ট্রোলিং নিয়ে নিয়ে আমি সেটিসফাই … কুইক এক্সিলারেসন আর সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস এর কম্বিনেশন ভালোই এঞ্জয় করেছি আশাকরি ম্যাক্সিমাম রাইডারের এই কম্বিনেশন ভালো লাগবে …

সবচাইতে বেশী ইনবক্স পেয়েছি “ভাই টপ স্পীড কতো পেয়েছেন” হাহাহাহাহা না ভাই টপ চেক করার সাহস হয়নি তবে এফআই হিসেবে এক্সিলারেসন ভালো লেগেছে আর এক্সিলারেসন একটু বেড়ে গেছে অ্যারোডাইনামিক সেপের কারনে … কোনো পাওয়ার লস ছাড়াই ১১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠে এরপর সময় আর প্রেশার দুইটাই লাগবে যেটা এখন দেওয়া সম্ভব না … আর সিটিতে যদি বাইক চালান তাহলে এই স্পীড অনেক আর আমাদের দেশের হাইওয়েতে এটা অনেক কম্ফেটেবল স্পীড বলে আমার মনে হয়েছে আর হাইওয়েতে কিছু বেয়াড়া বাস ক্রস করার জন্য যেরকম স্পীড দরকার সেটা এই এফআই তে আছে এখন যে যা বোঝার বুজে নেন তবে বিএইচপি একটু বেশী হলে ছয় নাম্বার গিয়ার দিতে পারতো আর সাথে লিকুইড কুল ইঞ্জিন।

ইঞ্জিন হিটিং ইস্যু নিয়ে ভয়ের কিছু নেই তবে আগের জিক্সারে প্রথম প্রথম হিটিং ইস্যু থাকতো তাই ভয় পেয়েছিলাম … আমি সুযুকির রেকোমণ্ডেড ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করছি আর ভালোই লাগছে ৫০০ কিলোমিটারে প্রথম ইঞ্জিনওয়েল যখন বদলাই তখনো ভিস্কোসিটি ছিল দেখলাম আর ফাস্ট সার্ভিস নেওয়ার সময় বলেছিলাম সেকেন্ড গিয়ারটা একটু হার্ড সেটা ঠিক করে দিয়েছে দেখি কতদিন থাকে আর গিয়ার হার্ড হলে সমস্যা নেই ক্যাটারপিলার দিয়ে সাইজ করে ফেলবো।

আজ এই পর্যন্ত আবার পরে ডিটেলস শেয়ার করবো মাইলেজ সহ… ও হ্যাঁ আসল কথা বলা হয়নি সেটা হচ্ছে বাইকের সব পছন্দ হলেও দাম পছন্দ হয়নি আশাকরি এই বিষয়টা কোম্পানী দেখবে আর বাইক কোম্পানীগুলোর প্রতি রিকোয়েস্ট থাকবে বাইক কিনে শোরুম থেকে যাতে রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নিয়ে কাস্টমার যাতে বাসায় যেতে পারে।

ভালো থাকবেন আর সার্টিফাইড ফুলফেস হেলমেট ব্যাবহার করবেন……

লিখেছেন- জুন সাদিকুল্লাহ ২০২০

 

Retired Rider

Related Posts

error: Content is protected !!