আমি সাধারণত ঢাকার সিটির মধ্যে বেশি রাইড করি, তবে লং ট্যুর যে একেবারে করি না তা নয়। মাঝে মধ্যেই মন চাইলে বাইকার ভাই-ব্রাদারদের সাথে ঘুরে আসি আশে পাশের বিভিন্ন জেলা। রাইডার হিসেবে আমি কম্ফোর্ট জিনিসটাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি, আর তাই আমার পছন্দের তালিকায় কমিউটার বাইক সবার আগে জায়গা পায়। প্রায় ২ বছর থেকে চালাচ্ছি বাজাজের Discover 125 ST বাইকটি যেটি কিনা এখন মার্কেট আউট। বাইকটির পারফর্মেন্স নিয়ে আমি সন্তুষ্ট বিশেষ করে এর সাসপেনশনের পারফর্মেন্স কেমন তা নিজে রাইড না করলে বুঝবেন না, এক কথায় দারুণ। আর তাই বাইকার ভাইরা আমার এই বাইকটির নাম দিয়েছে স্ক্যানিয়া, শুনতে অবশ্য ভালই লাগে।
তো যাই হোক, সব ঠিক ঠাক থাকলেও একটা বিষয় বুঝতে পারি না যে বাজাজ কেন তাদের এই বাইকগুলোতে এখনো টিউব টায়ার ব্যবহার করে। এমনকি এখনও (২০১৮ পর্যন্ত) বাজাজের ডিসকভার ১০০, ১২৫ সিসি বাইকগুলোতে টিউব টায়ার দেখা যায়। রাস্তাঘাটে চাকা লীক হলে, বাইক ঠেলে মেকানিকের কাছে যাওয়া যে কি কষ্টসাধ্য যে ভূক্তভোগী সেই জানে। আর বিশেষ করে লং ট্যুরে যদি এমন কিছু হয়, তাহলে তো কথাই নাই। নিজের সাথে গ্রুপের সবার জন্য একটা দূর্ভোগ তৈরী হয়।
তাই আমি সিদ্ধান্ত নেই টিউব টায়ার ফেলে টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করব। নিয়ে নেই টোরীনো Arrow (90/90) সাইজের টায়ার, ডিসকভার ১২৫ এসটি এর সামনের এবং পিছনের জন্য। আগের ফ্রন্ট টায়ারের থেকে এবারের টায়ার সাইজটা একটু বাড়ায় নেই যাতে ব্রেকিংয়ে ভাল পারফর্মেন্স পাওয়া যায়। এরপর বাইকে টায়ার ইন্সটল করে ফেললাম এবং এখন পর্যন্ত প্রায় চালিয়েছি ২০০০ কিলোমিটার। এখনো টায়ারে জেল ব্যবহার করিনি একচুয়াল পারফর্মেন্সটা বোঝার জন্য। আমার অভিজ্ঞতা থেকে এই টায়ারটির একটি শর্ট রিভিউ শেয়ার করব আপনাদের সাথে।
টোরীনো ব্রান্ডের উপর আমার একটা আস্থা কারণ এটি হোসেইন টায়ারের রিব্রান্ডিং। কিছুদিন হল তারা তাদের মোটরসাইকেলের টায়ারগুলোকে টোরীনো নামে ব্রান্ডিং করতে শুরু করে। আর যেহেতু দেশীয় ব্রান্ড তাই একটু বেশি গুরুত্ব আমার কাছে। বাংলাদেশে তারাই প্রথম টিউবলেস টায়ার তৈরী করে। এই মুহুর্তে তাদের বাজারে প্রায় ২৪ প্যাটার্নের ২৯ ধরনের টায়ার রয়েছে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার মোটামুটি প্রায় সব টায়ারের দোকানগুলোতেই এই টায়ার পাওয়া যায় তাই হাতে নাগালে।
টায়ার ইন্সটল করার পর একটা দারুণ ফীল পেয়েছিলাম রাইডের সময়। তবে প্রথম ২-৪ দিন টায়ারটি ঠিক মনের মত গ্রীপ পাচ্ছিল না বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু ১০০ কিলোমিটারের মত চালানোর পর থেকে দারুণ গ্রীপ পেতে শুরু করি। ব্রেকিংয়ের সময় মোটামুটি ভাল কনফিডেন্স পাওয়া যায় আর প্রোপার ব্যালেন্সও থাকে। আগে মোড় ঘুরতে হালকা কর্নারিং করতে কিছুটা হেজিটেড লাগত। এখন কর্ণারিংয়ে ভাল আত্মবিশ্বাস পাই।
টায়ারটি সফট কম্পাউন্ডের কিন্তু ২০০০ কিলোমিটার পরেও তেমন কোন ক্ষয় চোখে পড়েনি। Tourino Arrow টায়ারটির প্যাটার্ন বেশ স্ট্যান্ডার্ড। তবে এই Tourino Arrow টায়ারটি অফরোডিংয়ের জন্য উপযোগী নয়। দাম আর একটু কম হলে হয়তো ভাল হত।
অনেকে বলে দেশি টায়ার নাকি হার্ড হয়, কিছু দিন পর ফেটে যায়, ফুলে যায়, দীর্ঘস্থায়ী হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি। আসলে শোনা কথায় যে কান দিতে নেই আর ব্যবহার না করে কোন জিনিসের মন্তব্য করা উচিত না এটা টোরীনো ব্যবহার করে ভাল ভাবেই বুঝতে পেরেছি।
Tourino Arrow (90/90-17) এই টায়ারটি ফ্রন্ট এবং রেয়ার টায়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এই টায়ারটি যে বাইকগুলোর জন্য উপযোগী সেগুলো হচ্ছে Bajaj Discover 125, Bajaj Discover 135, Pulsar 150, Hero Ignitor, TVS Apache RTR 150, Keeway RKS 100 ইত্যাদি।
দেশীয় ব্রান্ড টোরীনো বিদেশী নামকরা ব্রান্ডের সাথে তাল মিলিয়ে অনেক প্যাটার্নের টায়ার তৈরি করছে যা সত্যি প্রশংসার দাবী রাখে।
আজ এ পর্যন্তই। পড়ে সময় পেলে একটা লং টাইম ব্যবহারের টেস্ট রিভিউ দিব।
লিখেছেনঃ ইমন রহমান
- শেল এডভান্স কিনে মালয়েশিয়া মটোজিপি টিকেট জেতার সুযোগ - আগস্ট ১৪, ২০২৩
- Bike Lock Combo: চুরি অসম্ভব? বাইকের ব্যাটারী ১০০% নিরাপদ? - জুলাই ২৪, ২০২৩
- ক্যাশব্যাক ও EMI অফারে বাইক কেনার সুযোগ দিছে টিভিএস সেলস পয়েন্ট - জুলাই ১৯, ২০২৩
You must be logged in to post a comment.