মোটরবাইকের খুচরা যন্ত্রাংশের বড় পাইকারি বাজার বংশাল। বাইকের জন্য জরুরি প্রায় সব কিছুই পাওয়া যায় এ বাজারে। দেশের অন্যান্য বাজারের তুলনায় এখানে দামও কিছুটা কম। এ বাজার ঘুরে লিখেছেন আসলাম হোসেন।
১৯৫০ থেকে ১৯৫৫ সালের মধ্যে বংশালে বাইকের বিভিন্ন খুচরা ও ভারী যন্ত্রাংশ বিক্রি শুরু হয়। এখান থেকে কম দামে সেরা জিনিস কিনতে হবে একটু বুঝে-শুনে। আর অভিজ্ঞ কাউকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলে কম দামে ভালো কিছুই উঠবে আপনার হাতে।
ব্যাটারি
আকৃতির ওপর নির্ভর করে ব্যাটারির দাম নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশের বাজারে দুটি দেশের ব্যাটারি বেশি বিক্রি হয়। একটি চীনের, অন্যটি ভারতের। বংশালও তার ব্যতিক্রম নয়। ভারতীয় ব্যাটারির চেয়ে চীনা ব্যাটারির দাম অনেক কম। বংশালের বাজারে চীনা ব্যাটারির দাম পড়ে এক হাজার ১০০ টাকার বেশি। এক হাজার ১০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ভারতীয় ব্যাটারি পাওয়া যায়। একই ব্যাটারি অন্য কোথাও কিনতে গেলে ব্যাটারি প্রতি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি পড়বে।
চেইন
জাপানি চেইনের দাম ৫৫০ টাকা আর তাইওয়ানের চেইন পাওয়া যায় ৩৮০ টাকা। যা কিনা বাইরের বাজারে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি হবে।
টায়ার-টিউব
দেশি ও বিদেশি দুই ধরনের টায়ার-টিউবই পাওয়া যায় বংশালের বাজারে। বিদেশি টায়ার-টিউবের মধ্যে ‘এমআরএফ’ সবচেয়ে জনপ্রিয়। হোন্ডার পেছনের চাকার টায়ার-টিউবের দাম পড়বে তিন হাজার ২০০ টাকা এবং সামনের চাকার টায়ার-টিউবের দাম দুই হাজার ২০০ টাকা। দেশি টায়ার-টিউবের মধ্যে ‘গাজী’ বেশ জনপ্রিয়। এটির পেছনের চাকার টায়ার-টিউবের দাম পড়বে দুই হাজার ৮০০ টাকা এবং সামনের চাকার দাম দুই হাজার ২০০ টাকা। তবে রাজধানীর অন্যান্য বাজারের দরদামের তুলনায় তেমন একটা পার্থক্য পাওয়া যায় না বংশালে। অন্য বাজারগুলোতেও প্রায় এমন দামেই টায়ার-টিউব বিক্রি করা হয়।
পিস্টন
বাইকের ধরন অনুযায়ী পিস্টন ব্যবহার করা হয়। বাজারে চীনা পিস্টনের আধিক্যই বেশি। এ ছাড়া জাপান ও ভারতীয় পিস্টনও পাওয়া যায়। যেমন—‘সেম’, ‘আর্ট ইক্যপ’ ও ‘স্ট্যান্ডার্ড গোল্ড’ এবং জাপানের ‘টপ’ ও ‘ম্যাক্স’ ব্র্যান্ডের। এসব পিস্টনের দাম ২০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।
হেলমেট
দেশি ও বিদেশি অনেক মডেলের হেলমেটও রয়েছে এই বাজারে। দেশি হেলমেট পাওয়া যায় ৩০০ থেকে এক হাজার টাকায়। আর বিদেশি হেলমেট ৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। বাংলামোটর ও অন্যান্য স্থানে দেশিটার দাম বংশালের চেয়ে অন্তত ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা আর বিদেশি ৪০০ থেকে এক হাজার টাকা বেশি।
মবিল
মালয়েশিয়ান, ভারতীয় ও ইতালীয় মবিল বাংলাদেশে একটু বেশি ব্যবহার করা হয়। মালয়েশিয়ান মবিলগুলোর মধ্যে ‘ভালবোলিন’ ৫০০ টাকা ও ‘হারডেক্স’ ৩৮০ টাকা ও ভারতীয় ‘কেস্ট্রল’ ৪০০ টাকা এবং ইতালির ‘এইচপিএক্স’ ৪৫০ টাকা।
সেলফ স্টার্টার
চীনা ও ভারতীয় দুই ধরনের সেলফ স্টার্টার পাওয়া যায় বংশালে। সর্বনিম্ন এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা দামের পর্যন্ত সেলফ স্টার্টার পাওয়া যায় এখানে। আর অন্যান্য বাজারে এর দাম পড়বে সর্বনিম্ন ৩০০ থেকে দুই হাজার টাকা।
লুকিং গ্লাস
বংশালের বাজারে লুকিং গ্লাসের দাম পড়বে সর্বনিম্ন ৯০ থেকে ৪৫০ টাকা। দেশের অন্যান্য বাজারে এসবের দাম পড়বে সর্বনিম্ন ১২০ থেকে ৭০০ টাকা।
লাইট
বাইকে সাধারণত দুই ধরনের লাইট থাকে—‘ব্যাক লাইট’ এবং হেড লাইট। ব্যাক লাইটের দাম ৬৫০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা। আর হেড লাইট ৪৫০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা।
ব্রেক
বাইকের হ্যান্ড ব্রেক সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত (চীনা) এবং পেছনের চাকার ভারতীয় ব্রেক পাওয়া যায় সর্বনিম্ন ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়।
ক্ল্যাচপ্লেট
ভারতীয়, চীনা, তাইওয়ান—এই তিন দেশের ক্ল্যাচপ্লেট বংশালে বেশি পাওয়া যায়। দাম ১৫০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকার মধ্যে।
অন্যান্য
অন্য যন্ত্রাংশগুলোর মধ্যে ব্রেক প্যাড ১৮০ থেকে এক হাজার টাকা (বাইরের বাজারে ২০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা), স্টিকার ২০ থেকে এক হাজার টাকা, ব্রেক কেবল এবং প্লাগ কেবল ৬০ থেকে ২০০ টাকা (অন্যান্য বাজারে ৮০ থেকে ৩০০ টাকা), বাইক কভার ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা, স্পার্ক প্লাগ ১৩০ থেকে ২৪০ টাকা এবং স্যাডেল ব্যাগ সর্বনিম্ন ৩০০ থেকে ৮০০ টাকায় পাওয়া যাবে।
সূত্রঃ কালেরকন্ঠ
- হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে দেশে বাড়বে জ্বালানি তেলের দাম? - জুন ১৮, ২০২৫
- মোটরসাইকেলের দাম কি আরো বাড়বে? (বিস্তারিত জেনে নিন) - জানুয়ারি ২২, ২০২৫
- টানা ১৮ বছর লুব্রিকেন্ট মার্কেটের শীর্ষে Shell - ডিসেম্বর ১, ২০২৪