ড্রাইভিং লাইসেন্স হলো একজন ড্রাইভারের অতি প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। এটি আপনাকে দেবে সড়ক পথে আপনার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা। ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি সাধারণত বিভিন্ন ধাপে সংঘটিত হয়, এখানে আমরা আলোচনা করবো ড্রাইভিং লাইসেন্স এর বিভিন্ন দিক, এর জন্য কি কি পরীক্ষা দিতে হয়
ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে আপনার বয়স অবশ্যই আঠারো বছরের উর্ধ্ব হতে হবে এবং বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয় “বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি” (বিআরটিএ) থেকে। প্রাথমিক অবস্থায় আপনাকে বিআরটিএ এর ওয়েবসাইট থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য দেওয়া আবেদনপত্র টি ডাউনলোড করতে হবে এবং আবেদনপত্রটিতে দুটি অংশ থাকে, একটি আপনার অংশ এবং আরেকটি অংশ ডাক্তারের বা এই অংশটিকে মেডিকেল সার্টিফিকেট বলে। আপনার অংশে আপনার নিজের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয় এই অংশ আপনার নিজের হাতে পূরণ করতে হবে এবং মেডিকেল সার্টিফিকেট এর অংশটি যেকোন রেজিস্টার্ড ডাক্তার দ্বারা পূরণ করে নিতে হয়। আবেদন পত্রটির সাথে তিন কপি স্ট্যাম্প এবং এক কপি পাসপোর্ট সাইজ এর ছবি সংযুক্ত করে বিআরটিএ অফিসে জমা দিতে হবে এবং লাইসেন্স এর জন্য নির্ধারিত ফি ব্যাংক অথবা পোস্ট অফিসে জমা দিতে হবে । আবেদনপত্রটি যাচাই এর পর সঠিক মনে হলে কর্তৃপক্ষ আপনাকে তিন মাসের জন্য সাথে সাথে একটি শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করবে।
শিক্ষানবিশ লাইসেন্স এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র :
১। নির্ধারিত আবেদনপত্রে আবেদন ।
২। রেজিস্টার্ড ডাক্তার কতৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট ।
৩। ন্যাশনাল আইডি কার্ড / জন্ম সনদ / পাসপোর্ট এর সত্যায়িত ফটোকপি ।
৪। নির্ধারিত ফি । ( ক্যাটাগরি ১ – ৩৪৫ /- টাকা, ক্যাটাগরি ২ – ৫১৮ /- টাকা ) বিআরটিএ এর নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ ( ব্যাংক এর লিস্ট বিআরটিএ এর ওয়েবসাইট এ পাওয়া যাবে) ।
৫। সদ্য তোলা ০৩ কপি স্ট্যাম্প ও ০১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি ।
- ক্যাটাগরি ১ – ৩৪৫ /- টাকা ( শুধু মোটরসাইকেল অথবা শুধু হালকা মোটরযান অর্থাৎ যে কোন এক ধরণের মোটরযান )
- ক্যাটাগরি ২ – ৫১৮ /- টাকা ( মোটর সাইকেল এর সাথে যে কোন এক ধরণের মোটরযান )
শিক্ষানবিশ লাইসেন্স পাওয়ার তিন মাস পর বা তিন মাসের মধ্যে আপনাকে পরিক্ষার জন্য ডাকা হবে, এ পর্যায়ে প্রথমে আপনার লিখিত পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এখানে বলে রাখা ভালো যে এই পর্যায়ে আপনার এক ধাপ পাশ করার পর অন্য ধাপের জন্য মনোনিত হবেন। লিখিত পরিক্ষায় সর্বমোট ২০ টি প্রশ্ন থাকবে এবং সময় থাকবে ২০ মিনিট । এখানে আপনাকে ১২ নম্বর পেতে হবে । ১২ নম্বরের কম পেলে আপনি অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচিত হবেন । ১২ নম্বর পাওয়া অনেকটা সহজ এবং এখানে ইঞ্জিন মেকানিজমে আলাদা ২ নম্বর পেতে হয় পাশ কারার জন্য ।
প্রশ্নের ধরণ :
- সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ৬ টি থাকে ৬ নম্বর থাকবে ।
- ইঞ্জিন মেকানিজম সম্পর্কিত প্রশ্ন ৬ টি থাকে ৬ নম্বর ।
- নৈবত্তিক প্রশ্ন থাকে ৮ টি থাকে ৮ নম্বর ।
লিখিত পরিক্ষার জন্য বিআরটিএ থেকে ১২৬ টি প্রশ্ন দেওয়া আছে । এর বাহিরে তেমন কোন প্রশ্ন থাকে না । এই ১২৬ টি প্রশ্ন ভালো করে পড়ে গেলে পাশ নিশ্চিন্ত । আমরা আমাদের পরবর্তি লেখায় নমুনা প্রশ্ন এবং বি আর টি এ এর প্রশ্ন গুলো সংযুক্ত করবো।
ভাইবা পরিক্ষা :
লিখিত পরিক্ষার পর আসে ভাইবা বা মৌখিক পরিক্ষার অংশ । এই পর্যায়ে আপনাকে একটি ভাইবা পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতে হবে । এখানে সধারণত বিভিন্ন চিহ্ন দেখিয়ে জানতে চাওয়া হয় যে কোন চিহ্ন কোন কাজে ব্যাবহার করা হয় এছাড়াও ইঞ্জিন সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয় । তবে আশার কথা এই যে বিআরটিএ কতৃক প্রদত্ত ঐ ১২৬ টি প্রশ্ন এর মধ্যে ভাইবার এই প্রশ্ন গুলোও পাওয়া যায় । সুতারং এই প্রশ্ন গুলো ভালোভাবে পড়লে লিখিত ও ভাইবাতে কৃতকার্য হওয়া অনেক সহজ হয়ে যায় ।
প্রাকটিক্যাল পরিক্ষা :
প্রকাটিক্যাল পরিক্ষার জন্য বি আর টি এ অফিসে কোন মটরসাইকেল ভাড়া পাওয়া যায় না, এর জন্য আপনার নিজের মটরসাইকেলটি নিয়ে যেতে হবে। অনেকেই বলে যে Pulsar/ Apache/ FZS/ R15/ CBR নিয়ে পরিক্ষায় পাশ করতে পারে না, এই কথাটি সঠিক নয়। আপনি যে মটরসাইকেল নিয়ে বেশি প্রাকটিস করবেন সেই মটরসাইকেল দিয়েই প্রাকটিক্যাল পরিক্ষায় পাশ করতে পারবেন। এবার আসুন প্রাকটিক্যাল পরিক্ষার কিছু খুঁটিনাটি জেনে নেই।
১) আপনি যত ভালোই বাইক চালক হোন না কেন পরিক্ষায় ঝিকঝ্যাক ও ইউ টার্ন (U- Turn) এ পা না ফেলে একই ভাবে ফিরে আসা অনেক কঠিন হয়ে যায়, তাই আপনি পরিক্ষার ভ্যানুতে একটু আগে গিয়ে কয়েকবার প্রাকটিস করে নিন।
২) পরিক্ষা শুরুর সময় অবশ্যই হেলমেট পরে নিন।
৩) ১০ ফুট পরপর লাঠি দেওয়া থাকবে, চালাতে গিয়ে যদি লাঠিতে আপনার পা লেগে যায় তাহলে আপনি সাথে সাথে অকৃতকার্য বলে বিবেচিত হবেন।
এরপর আপনি যদি পরিক্ষায় কৃতকার্য হয়ে থাকেন তাহলে, একটি নিদৃষ্ট সময় পর আপনাকে আবার ডাকা হবে এবং তখন আপনার ছবি তুলে, আংগুলের ছাপ দিতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আপনাকে সর্বমোট ২৮৭৫ টাকা বি.আর.টি.এ কে জমা দিতে হবে। আর আপনি যদি দুটো মোটরযানের লাইসেন্স করতে চান তাহলে আপনাকে অতিরিক্ত ১১৫ টাকা দিতে হবে। এরপর বি.আর.টি.এ কতৃক নির্দিষ্ট দিনে গিয়ে আপনি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সটি সংগ্রহ করুন। অনেকেই অনেক সময় দালাল এর কাছে যায় এবং অনেক টাকা খরচ করেন, কিন্তু বর্তমানে দালাল ছাড়াই আপনি উপরের পদ্ধতি সমূহ অবলম্বন করে খুব সহজেই আপনি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারবেন।
- শেল এডভান্স কিনে মালয়েশিয়া মটোজিপি টিকেট জেতার সুযোগ - আগস্ট ১৪, ২০২৩
- Bike Lock Combo: চুরি অসম্ভব? বাইকের ব্যাটারী ১০০% নিরাপদ? - জুলাই ২৪, ২০২৩
- ক্যাশব্যাক ও EMI অফারে বাইক কেনার সুযোগ দিছে টিভিএস সেলস পয়েন্ট - জুলাই ১৯, ২০২৩
You must be logged in to post a comment.