ঢাকা মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থী সাকিয়া হক এবং মানসী সাহা, যারা ইতোঃমধ্যে তাদের এমবিবিএস কোর্স সফলভাবে শেষ করেছে। দুই চাকার প্রতি তাদের ভালবাসা অনেক আগে থেকেই। স্কুটার চেপে ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের সব ক’টি জেলা। শুধু কি তাই? নারীদের নিয়ে গড়ে তুলেছে একটি সংগঠন “ট্রাভেলেটস অফ বাংলাদেশ”। সারা দেশে যার প্রায় ৩১ হাজার নারী সদস্য রয়েছে। প্রতিটি জেলা ভ্রমণের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল-কলেজ পরিদর্শন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত করা এবং নিজেদের স্বাবলম্বী হতে উৎসাহ প্রদান করেছে তারা।
তাদের এই অক্লান্ত পরিশ্রম এবং উদ্দ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে দেশি-বিদেশি নামকরা মিডিয়াগুলো। প্রথম-আলো, বিবিসি-সহ নানা মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তাদের এই কার্যক্রম।
আমরা টিম দেশি-বাইকার সরাসরি কথা বলেছিলাম এই দুই তরুনীর সাথে। তাদের উদ্দ্যোগ, স্কুটার রাইডিংয়ের অভিজ্ঞতা এবং আগামীতে তাদের কি কি পরিকল্পনা রয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলাম আমরা।
১। দেশি-বাইকার ডট কম-এর পক্ষ থেকে আপনাদের অভিনন্দন স্কুটারে চেপে ৬৪ জেলা ভ্রমনের জন্য।
সাকিয়া হকঃ ধন্যবাদ।
মানসী সাহাঃ ধন্যবাদ।
২। ৬৪ জেলা ভ্রমনের জন্য আপনারা কতজন রাইডার রাইড করেছেন?
সাকিয়া হকঃ ৬৪ জেলায় আমরা দুই জন রাইড করেছি। দুইটা স্কুটিতে, আমাদের পিছনে যে পিলিয়নেরা থাকতো তারা ধারাবাহিকভাবে পরিবর্তন হত। তাই ট্যাকনিকালি আমাদের পিছনের কারোরই ৬৪ জেলা ভ্রমন হয়নি। এদের মধ্যে একজন পিলিয়ন সর্বোচ্চ ৩১ জেলা আমাদের সাথে ছিলো কিন্তু আমাদের দু’জনের ৬৪ জেলা হয়েছে। আমরা দেখতাম যে আমাদের পিছনে যারা বসছে কার সময় আছে এবং সে অনুযায়ী তারা আমাদের পিলিয়ন হত। সে অনুযায়ী দু’জনের ৬৪ জেলা বলা যায় ঠিক চার জনের না।
৩। আপনাদের কি কোন সংগঠন আছে? যদি থেকে থাকে তাহলে তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি?
সাকিয়া হকঃ আমাদের সংগঠনের নাম হচ্ছে ট্রাভেলেটস অফ বাংলাদেশ (Travelettes of Bangladesh)। সবাই ট্রাভেলারস অফ বাংলাদেশ ভেবে ফেলে। Travelettes of Bangladesh এর আরেকটা বাংলা নাম হচ্ছে ভ্রমনকন্যা। আমাদের সংগঠনের শুরু হয়েছে ২৭ নভেম্বর ২০১৬ তে। এখন ত্রিশ হাজার নারী এতে যুক্ত হয়েছে এবং সংগঠনটি শুধু মেয়েদের। মেয়েদের নিয়ে আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে চাই, তবে সব সময় বাইক নিয়ে নয়। এটারই একটা প্রজেক্ট হচ্ছে ৬ এপ্রিল ২০১৭ তে পরিকল্পনা করা “নারীর চোখে বাংলাদেশ” কর্নফুলী প্রজেন্টস হওয়ায় এই প্রজেক্টেই আমরা দুইটা বাইক নিয়ে বাংলাদেশে ঘোরার পরিকল্পনা করি। আর আমরা যেহেতু তখন স্টুডেন্ট ছিলাম স্বাভাবিক ভাবেই পড়াশুনার চাপ ছিল। তাই যখন বিরতি ছিলো ঘুরে এসেছি। এভাবে দেখা গেল চার পাঁচ মাসে ৫-৬টা জেলা ঘুরেছি।
মানসী সাহাঃ আমরা একটা লুপ করে যেতাম। যেমন নারায়নগঞ্জ, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া দিয়ে লুপ করে ফিরে এসেছি। আবার যখন দক্ষিনবঙ্গের দিকে গিয়েছি তখন যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ ঘুরে ঢাকায় ফিরে এসেছি। আবার ভোলার দিকে যখন গিয়েছি তখন ভোলা, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর দিয়ে ফিরে এসেছি। এরকম কয়েকটা লুপ করে করে আমরা নয়টা পর্বে ৬৩ টা জেলা ভ্রমন ঘুরেছি। উত্তরবঙ্গ যখন যাই আমরা দুটা বিভাগ একসাথে শেষ করি। ১৭ টা জেলা ২৩ দিনে আমরা প্রতিটা জায়গায় চালিয়ে গিয়েছি চালিয়ে পরের জেলায় গিয়েছি। এমনটা না যে আমরা বাইকটাকে অন্য কোন যানে তুলে দিয়েছি। আমাদের ইচ্ছা ছিলো যে রাস্তার প্রত্যেকটা দৃশ্য উপভোগ করা বা দেখা। শুধু জেলার আশেপাশে তো না, এক জেলা থেকে আরেক জেলা যাওয়াটাও তো সে জেলা ঘোরার মধ্যে পড়ে আর এর পাশাপাশি আমরা চেয়েছি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে। আমরা যেহেতু ডাক্তার সেহেতু আমরা সাস্থ্য নিয়েই কথা বলি পাশাপাশি বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাচ্চাদের সাথে কথা বলি ও তাদের আগ্রহ বাড়ানোর চেষ্টা করি।
সাকিয়া হকঃ আমরা প্রতিটা জেলায় একটা করে স্কুলে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিছু কিছু জেলায় স্কুলে কথা বলা হয়নি কারন শুক্রবার ছিলো বা বন্ধের দিন ছিলো আর লুপ তো আমরা সে অনুযায়ী করতাম আবার এমনো হয়েছে একটা জেলায় আমরা তিনটা স্কুলে কথা বলেছি। যেমন, হবিগঞ্জে আমরা তিনটা স্কুলে কথা বলেছি, কুড়িগ্রামে আমরা দুইটা স্কুলে কথা বলেছি। এগুলো বেশিরভাগ সময়ে অনুরোধের কারনে হয়েছে। দেখা যায় যে একটা স্কুলে আমরা কথা বলেছি আমাদের কথা ভালো লেগেছে সেখানে আরেকটা স্কুলের কেউ ছিলো তো সে বলেছে যে আপু আমাদের স্কুলে চলেন, তো আমরা সেখানে গিয়েছি এভাবে করতে করতে দেখা যায় সব মিলিয়ে ৬৪টি স্কুল হয়ে যাবে। আর আজকে আমাদের ৬৪ টি স্কুল হলো, আমরা ঢাকাতে ফিরেছি ১ লা মে তে খাগড়াছড়ি থেকে।
৪। আপনারা শুরু করেছেন কোথায় থেকে এবং শেষ করেছেন কোথায়?
সাকিয়া হকঃ আমরা শুরু করেছি ৬ এপ্রিল ২০১৭। নারায়নগঞ্জ থেকে কুমিল্লা, ব্রাম্মনবাড়িয়া হয়ে ঢাকায় ফিরেছি।
মানসী সাহাঃ শেষ করেছি চট্রগ্রাম বিভাগে। টেকনাফ, বান্দরবন, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ঘুরে ঢাকা ফিরেছি।
৫। হঠাৎ রাইডিং করে যাওয়ার এই পরিকল্পনাটা আপনাদের কিভাবে আসে এবং উৎসাহ পেয়েছেন কোথায়?
সাকিয়া হকঃ আমরা চাচ্ছিলাম এমন কিছু যা দিয়ে দ্রুত ঘোরা যাবে। প্রথমত বাইসাইকেলে আমার মনে হয় না যে দ্রুত ঘোরা সম্ভব।
মানসী সাহাঃ আমরা যখন শুরু করেছি তখন হাতেগুনা একজন দুইজন স্কুটার চালাতো। আর ঢাকা শহরেই মেয়েদের স্কুটার চালানোটা মানুষ অন্য চোখে দেখতো। আর মেয়েরা স্কুটার চালাচ্ছে বা মেয়েরা বাইক চালাচ্ছে! চালাতে পারেতো, এমনটা বলতো।
সাকিয়া হকঃ আর ছেলেরা তো দেখলেই তাদের বাইকের স্পীড বাড়িয়ে দিত। তারপরেও মাঝে মাঝে এমন হয়েছে যে আমরা তাদের স্পীডের চেয়ে বেশি চালিয়েছি।
মানসী সাহাঃ তারা বুঝে না যে, স্কুটারে অটো গিয়ার, এমনিতেই যখন উপরের গিয়ারে যায় তখন যায়ই কিন্তু যখন সিগন্যাল পাড় হতে হয় তখন দেখা যায় আমরা সাথে সাথে চলে যাই তারা পিছনে পড়ে থাকে। এটা কোন প্রতিযোগিতা না, কিন্তু ভালো লাগে। এটা যে প্রতিযোগিতা না এটা তাদের বোঝাতে অনেক কষ্ট হয়। এমনো হয়েছে আমি রাস্তায় পড়ে গেছি, আশেপাশে যারা বাইকার ভাইয়েরা ছিলো বা যারাই ছিলো তারা সাথে সাথে চলে এসেছে এবং সাহায্য করেছে। আমরা সারা বাংলাদেশে পজেটিভ দিকটাই বেশি দেখেছি নেগেটেভ দিকটা খুব কম হাতেগোনা একটা দুইটা পেয়েছি। একটা ভালো সমর্থন সব জায়গায় পেয়েছি, রাস্তায় বা মানুষের সাথে কথা বলাতে কিংবা প্রোগ্রামে সবখানেই।
৬। দুই চাকার প্রতি ভালোবাসাটা কিভাবে তৈরি হলো?
মানসী সাহাঃ ইটস ফিলস ফ্রিডম।
সাকিয়া হকঃ এইচ এস সি থেকে আমি Kawasaki Ninja এর ছবি আমার ওয়ালপেপার বানিয়ে রাখতাম।
মানসী সাহাঃ ওর (সাকিয়া হক) পছন্দ ছিলো ক্রুজার বাইক যেমন, রয়েল এনফিল্ড, হার্লে ডেভিডসন।
সাকিয়া হকঃ এগুলো আমার এখনো পছন্দ। সুযোগ তৈরি হলে অবশ্যই কিনবো।
মানসী সাহাঃ আসলে বাইক চালানোটা আমাদের ফ্রিডম মনে হয়।
৭। সম্পূর্ন ভ্রমনের দু-একটি ঘটনা যদি আমাদের সাথে শেয়ার করতেন?
মানসী সাহাঃ ভ্রমনের ঘটনার মতে আমার রাস্তাগুলোই সবসময় ভালো লেগেছে। রাঙ্গামাটি থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়ার পথে মহলছড়ি দিয়ে রাস্তাটা, হাইওয়ে না পাশ দিয়ে যে রাস্তাটা গিয়েছে বেশি যানবাহন নেই হাতেগুনা কয়েকটা যানবাহন চলে। পাহাড়ি একটা রাস্তা যেটা বেশ ভালোই উঁচু নিচু আমরা ওটা বেছে নিয়েছিলাম জ্যাম নেই যেহেতু। আমরা যেতে যেতে একটা করে পাহাড় পার হচ্ছিলাম, একটা করে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে উঠছি নামছি এরকম বেশ কিছু পাহাড় অতিক্রম করার পর একটা পাহাড়ে উঠেছি এরকম সময় সূর্যটা ডুবছে। দূরে একটা পাহাড়ের মাথায় একটা বৈদ্ধ মূর্তি সাথে একটা প্যগোডা, তো মনে হচ্ছে যে সূর্যটা ঠিক মূর্তিটার পিছনে, এটা একটা অসাধারণ অনুভূতি ছিলো।
সাকিয়া হকঃ এটা ছাড়াও আরো অনেক স্মৃতি, স্মৃতি বলে আসলে শেষ করা যাবে না।
মানসী সাহাঃ বাংলাদেশের রাস্তাগুলো আসলেই অনেক সুন্দর।
সাকিয়া হকঃ নেত্রকোনা থেকে সুনামগঞ্জের রাস্তায় আমরা বাঁশের ব্রীজ পাড়ি দিয়েছি।
৮। পেশায় কি করছেন? আগামীতে বাইকিং নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
সাকিয়া হকঃ আমরা দু’জনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করেছি আর এবার দু’জনেরই বিসিএস হয়েছে। এখনো পোস্টিং হয়নি, অপেক্ষায় আছি। বাইকিং নিয়ে আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে দুই বছর এক মাস নিয়ে ৬৪ জেলা ঘুরেছি আপাততঃ আমরা একটু বিশ্রাম নিতে চাই। তবে বাইক সবসময় থাকবে, এরপর হয়তো আপগ্রেড করবো কিন্তু সবসময় থাকবে।
মানসী সাহাঃ আমি বাইক নিয়ে একটা মেসেজ দিতে চাই সবার কাছে স্পেশালি মেয়েদের কাছে, তারা অনেকেই মনে করেন যে বাইক চালাতে পারবো তো? এরকম একটা কনফিডেন্সের অভাবে তারা বাইক কেনে না বা চালায় না কিন্তু আসলে এটা অনেক সহজ।
সাকিয়া হকঃ আমরা কিন্তু আগে স্কুটার কিনেছি এবং পরে চালানো শিখেছি। সবাই যেমন বলে যে আপু আগে শিখি বা একটু স্কুটার চালানো শিখিয়ে দেন। কিন্তু মোটরসাইকেল চালানোর চেয়ে স্কুটার চালানো অনেক সহজ।
মানসী সাহাঃ স্কুটার ঢাকায় হোক আর বাহিরে হোক মেয়েদের জন্য অনেক সহজ। আর আমরা তো এখন বাসে উঠিই না, স্কুটারেই চলাচল করি।
৯। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মেয়েদের স্কুটার চালানোটা কতটা চ্যালেঞ্জিং মনে করেন?
সাকিয়া হকঃ চ্যালেঞ্জিং তেমন কিছুই না, সাহস করে বের হলেই হলো।
মানসী সাহাঃ দূর থেকে হয়তো আমরা মনে করি কেউ যদি কিছু বলে এসব মনে করি, কিন্তু কেউ কিছু বলার আগেই আমরা তাদের কাটিয়ে চলে আসি।
সাকিয়া হকঃ মানুষ কথা বলবেই, আসলে শোনা যাবে না। পাত্তা না দিলেই হলো। আমরা অনেক জেলায় অনেক কথা শুনেছি, ওগুলো পাত্তা দিলে হয়তো পারতাম না ৬৪ জেলা শেষ করতে।
১০। সিটি রাইডিং ও হাইওয়ে রাইডিং এর ক্ষেত্রে নারীদের জন্য আপনাদের যদি কিছু পরামর্শ থাকে।
সাকিয়া হকঃ বাহিরে চালানোটা অনেক সহজ, মানে হাইওয়েতে চালানোটা অনেক সহজ।
মানসী সাহাঃ আমার মনে হয়েছে হাইওয়েতে চালানোটা অনেক সহজ। কিন্তু ঢাকা শহর বাদে অন্যান্য জেলা শহরে ইজি বাইক সমস্যা করে। তারা কোন সিগন্যাল মানে না, রাস্তাগুলোও পরিকল্পিত নয়। আর জেলা শহরে কোন বাইকার হেলমেট পরে না আর কোন যানবাহন ট্রাফিক রুলস মানে না।
১১। ডাক্তার হয়েও সময় বের করাটা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিলো?
সাকিয়া হকঃ আসলে ডাক্তার জন্যই হয়তো দুই বছর এক মাস সময় লেগেছে। না হলে আমাদের হয়তো ছয় মাস সময়ে হয়ে যেত। আমাদের এক নাগাড়ে চালানো সম্ভব ছিলো না।
মানসী সাহাঃ সবসময় ক্যরিয়ারে ফোকাস রেখেই আমরা এটা করেছি। সবারই উচিৎ নিজের ক্যারিয়ার ঠিক রেখে এসব করা।
১২। কোন ব্রান্ডের স্কুটার চালিয়েছেন? পারফর্মেন্স কেমন ছিলো?
সাকিয়া হকঃ স্কুটার ছিলো Haojue Lindy 125 cc আর পারফর্মেন্স জোশ ছিল।
মানসী সাহাঃ আমরা টপ স্পীড পেয়েছি 90 kmph। কিন্তু এটায় আরো অনেক উঠানো যাবে।
১৩। আপনাদেরকে ধন্যবাদ এত ব্যস্ততার মাঝেও সময় দেয়ার জন্য।
- আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।
- Hero Hunk DD ১৭০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ ( লিখেছেন- শান্ত) - এপ্রিল ২, ২০২৪
- Hero Hunk ১০,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ফাহিম হোসেন তপু) - মার্চ ১১, ২০২৪
- Hero Hunk ৪২,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ইফাজ আহমেদ) - মার্চ ১০, ২০২৪
You must be logged in to post a comment.