১৯১৩ সালে সর্বপ্রথম মোটরসাইকেলে সাসপেনশন বা শক এবজরভার ব্যবহার শুরু হয়। মূলত খারাপ রাস্তায় বাইকারদের কমফোর্টের জন্য এটি আবিষ্কৃত হয়। আমাদের দেশে, প্রধানত দুটি ধরনের সাসপেনশন মোটরসাইকেলে ব্যবহার করা হয় যা মনো-শক ও ডুয়াল-শক নামে পরিচিত। সাধারনত, বাংলাদেশে কমিউটার ও স্পোর্টস এই দুই ধরনের বাইকের প্রাধান্য দেখা যায়। সাধারণত ডুয়াল-শক কমিউটার এবং মনো-শক স্পোর্টস বাইকের জন্য ব্যবহার করা হয়।
পিছনের সাসপেনশনটি মূলত ডিজাইন করা হয় রাইডিংয়ের মান ও কমফোর্ট বৃদ্ধির জন্য। সাসপেনশন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আপনি কোনটিকে এগিয়ে রাখবেন, ডুয়াল-শক সাসপেনশন নাকি মনো-শক সাসপেনশন? চলুন তাদের মধ্যে তুলনা ও পার্থক্য জেনে নিই।
ডুয়াল-শক সাসপেনশনঃ ডুয়াল মানে মোটরসাইকেলে দুটি শক এবজরভার আছে এবং বর্তমান বাইকের মানের কাছে এটি অনেক পুরাতন ধারনা। এই সাসপেনশনটি মূলত কমিউটার বাইকে ব্যবহার করা হয়। ভারী ওজন পরিবহনের ক্ষেত্রে ডুয়াল-শক সাসপেনশনটি মনো-শক এর চাইতে অনেক বেশী কার্যকর। আমাদের দেশের রাস্তা-ঘাট ততটা ভাল না হওয়ার কারনে ড্রাইভিংয়ের সময় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এর মানে হল সুইংআর্মে অনেক বেশী প্রেসার পরে এবং তা গ্রহণ করার জন্য ডুয়াল-শক অত্যন্ত কার্যকর। কমিউটার বাইকগুলো সাধারনত গ্রামাঞ্চল এবং মফস্বল শহরে বেশী ব্যবহৃত হয়। এর মানে হল, বাইকগুলোকে তাদের সক্ষমতার চেয়ে বেশী ওজন পরিবহন করতে হয়। আর এই জন্যই ডুয়াল-শক সাসপেনশন এর ব্যবহার অনেক বেশী হয় এবং এটি অন্যান্য সাসপেনশন এর তুলনায় অনেক সাশ্রয়ি।
ডুয়াল-শক সাসপেনশন এর সুবিধাগুলোঃ
- খারাপ রাস্তায় এটি স্মুথ রাইডিং দেয়।
- অন্যান্য সাসপেনসন এর চাইতে এর দাম অনেক কম।
- সাসপেনশনের প্রেসারকে এবজর্ব করে।
- এর রক্ষনাবেক্ষন ও সার্ভিসিং খুব সহজে করা যায়।
- অতিরিক্ত ওজন বহন করতে পারে।
ডুয়াল-শক সাসপেনশন এর অসুবিধাগুলোঃ
- কর্নারিংয়ের সময় ততটা সুবিধা পাওয়া যায় না।
- হাইস্পিডে এর কন্ট্রোল ততটা ভাল নয়।
- লং ড্রাইভে এর কমফোর্টনেস অনেক কম।
মনো-শক সাসপেনশনঃ বিশ্বের অনেক দেশে এর ব্যবহার অনেক আগে শুরু হলেও আমাদের দেশে এর প্রচলন কিছু সময় আগে থেকে। স্পোর্টস সেগমেন্ট বাইকে মূলত এই সাসপেনশনটি ব্যবহার করা হয়। স্পোর্টস বাইকগুলো শুধুমাত্র রাইডারের কথা মাথায় রেখেই তৈরী করা হয় এবং এতে কোন পিলিওন থাকে না। তাই এর সাসপেনশনটিতে তেমন কোন চাপ পরে না। বাইকের কর্নারিং ও নিয়ন্ত্রন এর ক্ষেত্রে মনো-শক অত্যন্ত কার্যকর এবং হাই-স্পিড এ ভাল স্থিতিশীলতা প্রদান করে। এটি ডুয়াল-শক এর তুলনায় ভারী এবং তুলনামুলক দাম বেশী।
মনো-শক সাসপেনশন এর সুবিধাগুলোঃ
- এটি বাইককে ভাল কর্নারিং ও স্থায়ীত্ত প্রদান করে।
- এটি বাইকারকে ভাল ও কম্ফোর্টেবল রাইডিং প্রদান করে।
- হাইস্পিড এ খুব সহজেই কন্ট্রোল করা জায়।
- এটিকে সহজেই টিউনিং করা যায়।
মনো-শক সাসপেনশনের কিছু অসুবিধাগুলোঃ
- এই সাসপেনশনের রক্ষনাবেক্ষন খরচ অনেক বেশী।
- এটি অতিরিক্ত ওজন বহন করতে পারে না।
- এর জীবনকাল তুলনামুলক কম।
- এটি ততটা প্রেসার নিতে পারে না।
উপরের আলোচনা থেকে আমরা ডুয়াল-শক ও মনো-শক এর সুবিধা ও অসুবিধাগুলো সহজেই বুঝতে পারি। তাই আপনাকে আপনার বাজেট ও কম্ফোর্ট এর কথা চিন্তা করে সঠিক সাসপেনশন বাছাই করতে হবে।
~ লিভ ফ্রি, রাইড সেফ /.
- Hero Hunk ১০,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ফাহিম হোসেন তপু) - জুন ১১, ২০২২
- Hero Hunk DD ১৭০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ ( লিখেছেন- শান্ত) - জুন ২, ২০২২
- ৪ বাইকারের “রোড সেফটি এন্ড এওয়ার্নেস” স্লোগান নিয়ে ৬৪ জেলা ভ্রমন - ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২২
You must be logged in to post a comment.