বাইকিং যেন এখন মানুষের প্যাশনে পরিণত হয়েছে। পূর্বেও বাইক রাইডিং জনপ্রিয়তা পেলেও বর্তমানে এর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কেউ বা শখে, কেউ কাজে অথবা বিভিন্ন প্রয়োজনে, বাইক হয়ে উঠছে একটি বন্ধুর নাম। আর এখন সোস্যাল মিডিয়াতে রয়েছে বিভিন্ন বাইকিং গ্রুপ, যার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাইকাররা একটা পরিবারের মত তৈরী করছে। আর এসব ফেসবুক কমিউনিটি থেকে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন ট্যুর আর অবশ্যই সেটি বাইক ট্যুর। বাইক ট্যুর বাইকারদের অন্যতম ভাল লাগার একটা জিনিস আর সেটা যদি গ্রুপ রাইড হয় তাহলে তো কথাই নাই। আর গ্রুপ ট্যুর মানেই আলাদা মজা কিন্তু রয়েছে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা। যদিও সেটা খুব বড় সমস্যা না তবে এসব ছোট কিছু সমস্যা থেকে হতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। গ্রুপ রাইডিং এ কিছু রুলস আছে যা মেনে চললেই আশা করি সেসব দুর্ঘটনা থেকে সেইফ থাকা যাবে। গ্রুপ রাইডিং এ অনেক রকম রাইডার থাকে কেউ হয়তো নতুন, কেউ বা হাইওয়েতে প্রথম তাই তাদের উদ্দেশ্যে তাদের জন্য গ্রুপ রাইডিং রুলস খুবই জরুরী কেননা মুহূর্তের মধ্যে সব আনন্দ শেষ করে দিতে পারে একটি দুর্ঘটনা। আজকে আমরা গ্রুপ রাইডিং এর রুলস গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।
- গ্রুপ রাইড শুরুর পূর্বে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ বাইকারকে টিম লিডার করবেন যিনি সকলের সামনে থেকে বাকিদের নির্দেশনা দিবেন।
- সকলকেই টিম লিডারকে সাহায্য করতে হবে এবং রাইড শুরু পূর্বে টিম লিডার কোথায় যাত্রা বিরতি দিবেন, কোন রুট ধরে যাবেন এসবের আলোচনা আগে করে নিবেন এবং চলতি পথে যার বাস্তবায়ন করবেন।
- সকলে টিম লিডারের নেতৃত্বে চলবেন এই বিষয়টি নিশ্চিত করুন।
- গ্রুপ রাইডিংয়ে হাই স্পিডিং করা ঠিক নয়। নির্দিষ্ট একটি গতিসীমা ঠিক করে চলা উচিত, কেননা একটি গ্রুপে বিভিন্ন সিসির বাইক থাকে।
- গ্রুপ রাইডিং এ সব বাইক এক লেনে চলবে কিনা বা দুই লেনে চলবে সেটি টিম লিডার সামন থেকে হাতের ইশারায় দেখিয়ে দিবে এবং সকলকে সেটি মেনে চলতে হবে।
- গ্রুপ রাইডিং এ সবশেষে এমন একজন থাকবে যিনি সবসময় টিম লিডারের সাথে কমিউনিকেশন করবেন। টিম লিডার সামন থেকে নেতৃত্ব দিবেন এবং শেষের ব্যক্তি সকলকে নিরাপত্তা প্রদান করবেন।
- সবসময় চেষ্টা করবেন আপনার সামনের বাইকের একদম পিছনে না থেকে কিছুটা দূরত্ব রেখে চলার চেষ্টা করবেন, কেননা আপনার সামনের বাইকের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে আমি আগেই বাইক থামাতে পারেন এবং সকলকে অবগত করতে পারেন।
- একদম প্রতিটা বাইকের লাইন বরাবর না থেকে চেষ্টা করবেন একটু ডানে-বামে সরে চালাতে। হঠাৎ ব্রেকিং এ যেন সামনের বাইকের সাথে লেগে না যায়।
- গ্রুপ রাইডিং এ একসাথে অনেক রাইডার রাইড করে থাকে তাই এসব গ্রুপ রাইডিং এর সময় ওভারটেকিং থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সেই সাথে এক বাইকের পিছনে অন্য বাইক চালিয়ে যেতে হবে কেননা পাশাপাশি রাইড করলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- গ্রুপ রাইডিং শুরুর পূর্বে গ্রুপ লিডার সকলের সাথে একটি আলোচনা করবে কোন রোডে কেমন স্পিডে যেতে হবে এবং সে সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া এবং চেষ্টা করতে হবে সকলে একি গতিতে চলার।
- প্রতিটা সময় লুকিং গ্লাসে খেয়াল রাখুন পিছনের বাইকারদের অবস্থান জানতে এবং কেউ কোন বিপদে পড়লো কিনা সেদিকে খেয়াল রাখুন।
- গরমের দিনে দুপুরের দিকে চেষ্টা করবেন রাইড না করার বা করলেও চেষ্টা করবেন কিছুক্ষন পর পর দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নেয়ার জন্য। আর শীতের দিনে দিনের মধ্য ভাগে রাইড দেয়া কেননা এই সময় টা ঠান্ডার তীব্রতা কম থাকে।
- এছাড়া বৃষ্টির দিনে রাইড করার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রতিটা বাইক থেকে কিছুটা দূরত্ব রেখে চলতে হবে এবং পারলে সকলের হেডল্যাম্প অন করে রাইড করতে হবে।
- গ্রুপ রাইডে চেষ্টা করবেন উজ্জ্বল রঙের সেফটি ভেস্ট পড়া, এর ফলে আপনাকে দূর থেকে যে কেউ বুঝতে পারবে।
- অবশ্যই রাইডের পূর্বে বাইকের সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে নিবেন এবং সেই সঙ্গে পিলিয়ন থাকলে তার জন্য অবশ্যই হেলমেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক।
- গ্রুপ রাইডিং অন্যতম বিষয় হচ্ছে হাতের ঈশারায় প্রতিটা কাজকে বুঝানো, তাই রাইড শুরু পূর্বে এসব ব্যাপার নিয়ে সকলের মাঝে আলোচনা করে নিতে হবে কেননা রাইডে অনেক নতুন থাকতে পারে তারা না জানলেও তাদের জানাতে হবে হাতের প্রতিটি ঈশারার মানে। কেননা গ্রুপ রাইডিং এ এই বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- সাধারণত চেনা-জানা যায়গায় গ্রুপ রাইড দেয়ার চেষ্টা করবেন একদম অপরিচিত যায়গায় অচেনা রাস্তায় রাইড না করাই ভাল। সর্বপ্রথম যেই এলাকায় রাইড দিবেন সেই এলাকার সব কিছু জেনে নিবেন নিরাপত্তার জন্য।
- চেষ্টা করতে হবে সকল রাইডারকে পর্যাপ্ত সেফটি গার্ড নিয়ে রাইড করার।
- রাস্তা ঘাটে দুর্ঘটনা বলে আসে না তাই রাইডে যাবার আগে চেষ্টা করবেন সাথে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষুধ সাথে রাখার জন্য, যাতে হুট করে কিছু ঘটে গেলে যাতে সাময়িক সময়ের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা করা যায়।
হয়তোবা কিছু রুলস মানতে গিয়ে কিছু কিছু আনন্দ কমে যেতে পারে, কিন্তু একটা কথায় সবার আগে সেটা হলো জীবন। তাই সকল নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে কিছু আনন্দ করতে হবে কেননা দুর্ঘটনা কখনো বলে আসে না। খুব ছোট ভূল থেকে হতে পারে জীবনের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। তাই আমাদের সকলের উচিৎ শুধু গ্রুপ রাইডিংয়েই নয়, যেকোনো বাইক রাইডে পর্যাপ্ত সেফটি গিয়ার এবং নিরাপত্তা বিবেচনা করে বাইক চালানো।
- Hero Hunk DD ১৭০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ ( লিখেছেন- শান্ত) - এপ্রিল ২, ২০২৪
- Hero Hunk ১০,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ফাহিম হোসেন তপু) - মার্চ ১১, ২০২৪
- Hero Hunk ৪২,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ইফাজ আহমেদ) - মার্চ ১০, ২০২৪
You must be logged in to post a comment.