বর্তমান সময়ে মোটরসাইকেল হয়ে উঠেছে মানুষের বিশ্বস্ত যানবাহন। শখ মেটানোর পাশাপাশি দৈনন্দিন নানান কাজে দুই-চাকা হয়ে উঠছে বিকল্প ব্যবস্থা। বিশেষকরে উবার এবং পাঠাও এর মত রাইডিং শেয়ার ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকে জীবিকা উপার্জনের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এই দুই চাকার যানটি। তবে দেশের করোনা পরিস্থিতির পর থেকে লকডাউন কথাটির সাথে এখন সবাই পরিচিত। এই সময়ে শুধুমাত্র গণপরিবহনই নয় বরং মোটরসাইকেল চলাচলের উপরও চলে এসেছে নিষেধাজ্ঞা। এর কারনে দীর্ঘদিন বাইকটিকে ফেলে রাখতে হয় যার কারনে দেখা দেয় নানান যান্ত্রিক ত্রুটি।
শুধুমাত্র লকডাউনের কারনেই নয় অনেকেই বিভিন্ন প্রয়োজনে দীর্ঘদিন বাইক ফেলে রাখেন। এই সময়টিতে কিছু মেইন্টেনেন্স টিপস মেনে চললে কোন প্রকার ত্রুটি ছাড়াই বাইকটিকে দীর্ঘদিন রাখতে পারবেন। আজকে আমরা আপনাদের জানাব কোন কোন বিষয়গুলো মেনে চললে মোটরসাইকেলকে এই সময়গুলোতে কোন প্রকার সমস্যা ছাড়াই রাখতে পারবেন।
ইঞ্জিনের সমস্যাঃ
ইঞ্জিনকে বলা হয়, ‘The Heart of a Motorcycle’. অন্যান্য ইঞ্জিনগুলোর মতই মোটরসাইকেল ইঞ্জিন দীর্ঘদিন ফেলে রাখলে বেশকিছু সমস্যা দেখা দেয়। যেমন, স্টার্ট না নেয়া, তুলনামূলক কম ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স পাওয়া, মাইলেজ কমে আসা, ইঞ্জিন সাউন্ড বেড়ে যাওয়াসহ নানা সমস্যা। ইঞ্জিনের এই সমস্যাগুলো থেকে বাঁচতে প্রথমেই আপনাকে যে বিষয়টিতে খেয়াল রাখতে হবে সেটি হচ্ছে ভাল মানের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা। কেননা নিম্নমানের অয়েলগুলো খুব তাড়াতাড়ি জমে যায় এবং ইঞ্জিনের ক্ষতি করে, এমনকি ইঞ্জিনের পিস্টনে মরিচা পরে। এছাড়া ইঞ্জিন অয়েলের ভিস্কোসিটি ঠিক রাখতে কয়েকদিন পর পর ৫-১০ মিনিট আপনার মোটরসাইকেলটি স্টার্ট দিয়ে ৪০০০-৫০০০ আরপিএমে রাখুন।
ব্যাটারির সমস্যাঃ
বর্তমানে বেশিরভাগ মোটরসাইকেলগুলোতে কিক স্টার্টার দেখা যায় না যার ফলে সেলফ স্টার্টারই একমাত্র ভরসা। অনেকদিন বাইক ফেলে রাখলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ব্যাটারির। এর জন্য অনেকেই ব্যাটারি খুলে রাখেন। তবে ব্যাটারি না খুলেও দীর্ঘদিন সচল এবং ব্যবহার উপযোগী রাখতে পারেন। এর জন্য ব্যাটারির টার্মিনালগুলো ভালভাবে পরিস্কার করে নিন এবং ভেসলিন বা গ্রীজ দিয়ে রাখুন। যা ব্যাটারির সংযোগগুলোকে মরিচা পরার হাত থেকে রক্ষা করবে। এছাড়া কয়েকদিন পর পর ৫-১০ মিনিট আপনার মোটরসাইকেলটি স্টার্ট দিয়ে নিউট্রাল গিয়ারে রাখুন।
শুকনো ও নিরাপদ স্থানে রাখুনঃ
আমাদের দেশের বেশিরভাগ বাইকারেরই নিজস্ব গ্যারেজ নেই। ফলে যেকোন যায়গায় আমরা বাইক পার্ক করে রাখি। যেহেতু বাইকের বেশিরভাগ অংশই মেটাল দিয়ে তৈরী তাই ভেজা কিংবা স্যাঁতস্যাঁতে যায়গায় বেশিদিন বাইক রাখলে বাইকে মরিচা পরার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া বিভিন্ন পার্টসের স্থায়িত্ব কমে আসে।
এছড়া বাইককে দীর্ঘদিন সংরক্ষনের জন্য প্রথমেই বাইকটিকে পানি দিয়ে ভালভাবে পরিস্কার করে নিন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন সাইলেন্সারের ভেতর পানি না ঢুকে যায়। পরিস্কারের পর নরম এবং শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। মোটরসাইকেলটিকে নির্দিষ্ট যায়গায় ডাবল স্ট্যান্ড করে রাখুন এবং ডাস্ট কভার দিয়ে ঢেকে রাখুন। এছাড়াও চেইন লুব এবং ক্লিনার দ্বারা ড্রাইভ চেন লুব্রিকেশন করুন।
ওয়্যারিং পরিক্ষা করুনঃ
দীর্ঘদিন বাইক ফেলে রাখলে ওয়্যারিং এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষকরে ইঁদুর এবং তেলাপোকা কানেকশন তারগুলো কেটে দেয়। তাই প্রতিবার বাইক স্টার্ট দেয়ার সময় ইন্ডিকেটর লাইট, হেড ও টেললাইট এবং হর্ণ ঠিকমত কাজ করছে কিনা দেখে নিন। এছাড়া বাইকে কোন ইঁদুর কিংবা তেলাপোকা বাসা বেধেছে কিনা সেটাও খেয়াল করুন।
তাই আপনার মোটরসাইকেলটিকে দীর্ঘদিন সুরক্ষিত রাখতে উপরের টিপসগুলো মেনে চলুন। তবে সুযোগ পেলে কিছুক্ষনের জন্য বাইকটি রাইড করুন।
- Hero Hunk ১০,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ফাহিম হোসেন তপু) - জুন ১১, ২০২২
- Hero Hunk DD ১৭০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ ( লিখেছেন- শান্ত) - জুন ২, ২০২২
- ৪ বাইকারের “রোড সেফটি এন্ড এওয়ার্নেস” স্লোগান নিয়ে ৬৪ জেলা ভ্রমন - ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২২
You must be logged in to post a comment.