“সে আমার সম্পত্তি নয়, সে আমার সম্পদ” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ছোটগল্প ‘হৈমন্তী’ তে এই উক্তিটি দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমান যুগে বাইক প্রেমীদের বাইকের প্রতি ভালোবাসা বুঝিয়ে দেয় সেই উক্তিটির তাৎপর্য। ব্যাপারটা এমন, “বাইক আমাদের সম্পত্তি নয়, বাইক আমাদের সম্পদ”। সে সম্পর্কে সুরক্ষিত করার জন্য অনেকেই অনেক রকম সিকিউরিটি ডিভাইস ও লক ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু সব জিনিসেরই সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। তাই আজকে আলোচনা করবো বাইকে ব্যবহৃত সিকিউরিটি ডিভাইস গুলোর সুবিধা ও অসুবিধা গুলো নিয়ে।
সকল সিকিউরিটি ডিভাইস এবং বাইক ও গাড়ির জেনুইন পার্টস কিনতে ভিজিট vovopip.com
বাংলাদেশের মূলত তিন ধরনের সিকিউরিটি ডিভাইস প্রচলিত রয়েছে। যথা:
১) জিপিএস ট্র্যাকার ও এলার্ম লক সহ সিকিউরিটি ডিভাইস
২) এলার্ম লক সিকিউরিটি ডিভাইস
৩) ইলেকট্রিক তালা
আসুন এই সিকিউরিটি ডিভাইস গুলো সম্পর্কে একটু জানি এবং এর সুবিধা অসুবিধা গুলো নিয়ে আলোচনা করি।
১) জিপিএস ট্র্যাকার ও এলার্ম লক সহ সিকিউরিটি ডিভাইস:
জিপিএস ট্র্যাকার ও এলার্ম লক সহ সিকিউরিটি ডিভাইস গুলো বর্তমানে বাইকের জন্যে বেশ জনপ্রিয় একটি সিকিউরিটি সিস্টেম। এ ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেমকে কম্বো প্যাক সিকিউরিটি সিস্টেমও বলা হয়। এ ধরনের ডিভাইস গুলোতে জিপিএস ট্র্যাকার, এলার্ম ডিভাইস, সিম কার্ড, ব্যাটারি ও রিমোট থাকে। এ ধরনের সিকিউরিটি ডিভাইস গুলো বাইকের ওয়ারিং এবং ব্যাটারি সেকশনের সঙ্গে কানেক্ট হয়ে কাজ করে। আসুন জেনে নেই এই ধরনের ডিভাইস গুলো সুবিধা ও অসুবিধা।
সুবিধা:
• এ ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেম ব্যবহার করলে যে কোন জায়গা থেকে মোবাইলের মাধ্যমে বাইক লক এবং আনলক করা যায়।
• বাইক লক থাকা অবস্থায় যদি ওয়ারিং কাটা ছাড়া অথবা ডিভাইসটি খোলার চেষ্টা করা হয়, তাহলে এই ডিভাইস মালিকের ফোনে এসএমএস এবং কল পাঠিয়ে দেয় এই ডিভাইস গুলো। এছাড়াও বাইকের এলার্ম ও রিমোটের এলার্ম বেজে ওঠে।
• এ ধরনের ডিভাইস ইন্সটল করলে বাইকের লোকেশন ট্র্যাক করা যায় এবং ম্যাপে তা দেখা যায়।
• এ ধরনের সিকিউরিটি ডিভাইসে অনেক সময় নিজস্ব ব্যাটারি থাকে তাই মোটরসাইকেলের ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
• এ ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেম গুলো বাইকে জিপিএস ও এলার্ম দুই ধরনের সিকিউরিটি প্রদান করে।
অসুবিধা:
• এই ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেমগুলো ম্যাক্সিমাম নেটওয়ার্ক দ্বারা পরিচালিত হয়। তাই নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে এই লক নিয়ে ঝামেলা করতে পারেন।
• এ ধরনের কিছু কিছু ডিভাইসের নিজস্ব ব্যাটারি থাকে না। তাই বাইকের ব্যাটারি থেকে এদেরকে পাওয়ার নিতে হয়। যা বাইকের ব্যাটারির জন্যে ক্ষতিকারক।
• এ ধরনের ডিভাইস গুলো ব্যবহার করার জন্য মাসিক একটি চার্জ প্রদান করতে হয়। আবার অনেকগুলো ডিভাইসে প্রতিবার লক আনলক করার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ এর চার্জ বা ডাটা খরচ করতে হয়।
• এ ধরনের ডিভাইস দিয়ে বাইক লক করার পরেও হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাইক আনলক করা সম্ভব।
• একবার নষ্ট হয়ে গেলে এই ধরনের ডিভাইস গুলো রিপেয়ার করা বেশ কষ্টসাধ্য।
২) এলার্ম লক সিকিউরিটি ডিভাইস:
এ ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেমগুলোতে সেন্সর এলার্ম ডিভাইস ও রিমর্ট থাকে। এ ধরনের ডিভাইস গুলো দিয়ে বাইক লক করার পর, সেটা আনলক না করেই বাইক স্টার্ট করার বা বাইককে সরানোর চেষ্টা করলে, এটি একটি এলার্ম ও রিমোটের সাহায্যে আপনাকে তা জানিয়ে দিবে। এ ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেম ব্যবহারের সুবিধা এবং অসুবিধা:
সুবিধা:
• এ ধরনের সিকিউরিটি লক গুলো বাইককে এক্সট্রা সেফটি দেয়।
• এ ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেমের সাহায্যে বাইক লক করার পরে তা যদি স্থানান্তর অথবা খোলার চেষ্টা করা হয় তাহলে বাইক থেকে খুব জোরে জোরে আরাম বাজে এবং এই ডিভাইসের রিমোট্টি এলার্ম দেয় এবং ভাইব্রেট করে।
• এটি ব্যবহারে কোন রকম মাসিক বা বাৎসরিক চার্জ প্রদান করতে হয় না।
• এ ধরনের সিকিউরিটির লোক গুলো অনেক দিন পর্যন্ত টেকসই হয়।
• এ ধরনের ডিভাইস গুলোর দাম হাতের নাগালে।
অসুবিধা:
• একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত এই ধরনের লক দিয়ে বাইক কন্ট্রোল ও সিকিউরিটি নিশ্চিত করা যায়।
• এ ধরনের লক গুলো সরাসরি বাইকের ব্যাটারি থেকে পাওয়ার গ্রহণ করে। তাই এ ধরনের লক ব্যবহার করে কিছুদিন বাইক স্টার্ট না দিলে ব্যাটারির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
• এ ধরনের সিকিউরিটি ডিভাইসের রিমোট গুলোর ব্যাটারি কিছুদিন পরপর পরিবর্তন করতে হয়।
• লক করা অবস্থায় যদি রিমোটের বা রিমোটের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে বিরম্বনার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
• এ ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেম বাইক কে কিছুটা সুরক্ষিত করে কিন্তু পুরোপুরি নয়।
৩) ইলেকট্রিক তালা:
আমরা ভাইকে সাধারণত যে ডিক্স লকগুলো ব্যবহার করি তারই আপডেট ভার্সন হচ্ছে এই ইলেকট্রিক তালা। মেইনলি এটি হাইড্রলিক ডীস্ক লক ও এলার্ম সিকিউরিটি সিস্টেম এর একটি কম্বো। এইতালা ব্যবহার করে বাইক লক করার পরে, যদি কোন কারনে এই লকটি ভাঙ্গার চেষ্টা করা হয় তাহলে এটি থেকে এলার্ম বেজে ওঠে। বর্তমানে এক ধরনের তালা গুলো বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।
সুবিধা:
• এ ধরনের তালা গুলো মেক্সিমাম অ্যাসিড প্রুপ এবং ভালো মানের হয়।
• এ ধরনের তালা ব্যবহার খুবই সহজসাধ্য।
• এর সাথে মোটরসাইকেলের ব্যাটারির কোন কানেকশন নাই তাই ব্যাটারীতে কোনরকম চাপ পড়ে না।
• সাধারণ ডিস্ক লক ব্যবহারের পরিবর্তে এই ব্যবহারে কিছুটা এক্সট্রা সেফটি পাওয়া যায়।
• এটি ডিস্ক লক এবং এলার্ম এই দুই ভাবে একটি বাইককে সিকিউরিটি প্রদান করে।
অসুবিধা:
• এ ধরনের তালা গুলোর দাম একটু বেশি হয়ে থাকে।
• দীর্ঘদিন পানি বা ধুলোর সংস্পর্শে থাকার কারণে এই লকটির আয়ুষ্কাল একটু কম।
বাইক যেহেতু শখের জিনিস এবং দামও নিতান্ত কম নয় তাই সিকিউরিটি ডিভাইস ব্যবহারের পাশাপাশি এটাকে সুরক্ষিত জায়গায় রাখাই উত্তম।
- SMK TITAN CARBON হেলমেটের ইউজার রিভিউ - অক্টোবর ১৩, ২০২৪
- SMK Stellar এর রিভিউ দিয়েছেন দেওয়ান সোহান - সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪
- গতকাল লঞ্চ হলো”Petronas Sprinta Ride Safe” ক্যাম্পেইন - সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪
You must be logged in to post a comment.