মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স, মাইলেজ, ডিজাইন ইত্যাদি নিয়ে আমরা খুব সতর্ক থাকলেও বাইকের টায়ার নিয়ে আমরা ঠিক কতটা সচেতন? কিংবা আমরা জানি ঠিক কতটুকু? একটি মোটরসাইকেলের অন্যতম গুরুত্বপুর্ন অংশ হল টায়ার। বাইক রাইডের সময় যে জিনিসটি আপনাকে রাস্তার সাথে সংযোগ স্থাপন করায় সেটির প্রতি আমরা কটা গুরুত্ব দেই? টায়ারের সম্পর্কে জানতে হলে বুঝতে হবে এর প্যাটার্ন সম্পর্কে।
যদি টায়ার ট্রেডে প্যাটার্ন না থাকত তাহলে বিভিন্ন রোড কন্ডিশনে সঠিক গ্রিপ পাওয়া সম্ভব নয়। আমরা সবাই জানি মোটরসাইকেল টায়ারে প্যাটার্ন অবশ্যই থাকা প্রয়োজন, কিন্তু একবার ভেবে দেখেছেন টায়ারের প্যাটার্ন এত ভিন্ন ভিন্ন কেন হয় এবং এটি কিভাবে কাজ করে? তবে চলুন জেনে নিই আপনাদের এই প্রশ্নের উত্তরগুলো।
টায়ার ট্রেড প্যাটার্নের কারনঃ
যে কোন রোড টায়ারে আপনি এক টায়ারের পৃষ্ঠে খাঁজের একটি প্যাটার্ন দেখতে পাবেন। প্রত্যেক প্যাটার্নেরই ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ঠ্য রয়েছে। রোড কন্ডিশনের উপর অনেক সময় প্যাটার্ন নির্ভর করে। লক্ষ্য করলেই দেখবেন অফ রোড, অন রোডের এবং হিল ট্রাকের টায়ার প্যাটার্ন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। চলুন জেনে নিই এর কারণগুলো,
সঠিক গ্রিপিংঃ
একটি টায়ারের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন কাজটি হল বিভিন্ন রোড কন্ডিশনে মোটরসাইকেলকে রাস্তার সাথে সংযোগ করা। বাইকের সাথে রাস্তার অধিক ট্রাকশন পেতে হলে যতটুকু সম্ভব টায়ারের সারফেসকে মাটির সাথে সযুক্ত করতে হবে। যেটি আমরা রেসিং টায়ার গুলোতে দেখতে পাই। কিন্তু দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য সে সকল টায়ার উপযুক্ত নয়। আমরা প্রতিদিন যে রাস্তা-ঘাট ব্যবহার করি সেগুলোতে ভাংগা-চোরা কিংবা আদ্রতার পরিমান অনেক বেশি থাকে। তাই টায়ার যেন এই সকল কন্ডিশনে ভাল পারফর্ম করতে পারে সেজন্য প্যাটার্ন ব্যবহার করা হয়। প্যাটার্নের খাঁজগুলো দিয়ে শজেই বাতাস এবং পানি চলাচল করতে পারে। ফলে টায়ার সহলেই ক্ষয় হয় না এবং প্রয়োজনীয় সাপোর্ট প্রদান করে।
ফ্লেক্সিবিলিটিঃ
আমাদের দেশের রোড কন্ডিশন খুব একটা ভাল নয়। তাই টায়ার থেকে ভাল পার্ফরমেন্সের জন্য রাস্তার সাথে সঠিক ট্রাকশন থাকা জরুরী। আর এই ট্রাকশন পেতে হলে টায়ারটিকে হতে হবে নমনীয় এবং ফ্লেক্সিবল। ট্রেড প্যাটার্ন ছাড়া একটি টায়ারকে ফ্লেক্সিবল করা খুব একটা সহজ নয়। ট্রেড প্যাটার্ন ছাড়া একটি টায়ারকে ফ্লেক্সিবল করতে হলে সেটিকে অবশ্যই সফট কম্পাউন্ডের হতে হবে এবং সেটি দীর্ঘদিন সার্ভিস দেবে না। সেজন্য টায়ারের প্যাটার্নগুলো এমনভাবে তৈরী করা হয় যেন সেটি টায়ারকে ফ্লেক্সিবিলিটি প্রদান করতে পারে এবং একই সাথে দীর্ঘদিন সার্ভিস দিতে পারে।
টায়ার পরিবর্তনের আভাস প্রদানঃ
একটি টায়ারের ট্রেড প্যাটার্নের গভীরতা মাপার মাধ্যমে একজন রাইডার বুঝতে পারেন তার টায়ারটি কতদিন পর পরিবর্তন করতে হবে। তবে রেসিং টায়ারগুলোতে কোন প্যাটার্ন থাকে না, তাহলে কেমন করে তারা বুঝতে পারেন যে টায়ার পরিবর্তন করতে হবে? উত্তরটি হচ্ছে মোটরসাইকেল রেসার এবং টেকনিশিয়ানরা অনেক অভিজ্ঞ এবং সহজেই বুঝতে পারেন কখন টায়ার পরিবর্তন করতে হবে।
সৌন্দর্য বৃদ্ধিঃ
টায়ারে যদি কোন প্যাটার্ন না থাকত তবে সব টায়ারকে একই রকম দেখাত। তবে টায়ারের ট্রেড প্যাটার্নগুলো প্রত্যেকটি টায়ারকে আলাদা আলাদা একটা রুপ দেয় এবং প্রত্যেক কাস্টোমার তাদের রুচি এবং পছন্দের উপর নির্ভর করে টায়ার নির্বাচন করে থাকে। তাই বলাই যায় একটি মোটরসাইকেলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে টায়ার প্যাটার্নের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
টায়ারের আয়ু বৃদ্ধিঃ
সঠিক কন্ট্রোলিং এবং ব্যালেন্সের জন্য মোটরসাইকেল টায়ারের সাথে রাস্তার সঠিক ট্রাকশন খুব জরুরী। যদি টায়ারে ট্রেড প্যাটার্ন না থাকত তবে টায়ার এই ট্রাকশনের জন্য দীর্ঘদিন সার্ভিস প্রদান করতে পারত না কেননা ট্রাকশনের জন্য এটি খুব তারাতারি ক্ষয় হয়ে যেত। তাই টায়ার থেকে দীর্ঘদিন সার্ভিস পাওয়ার জন্য এটিতে প্যাটার্ন ব্যবহার করা হয় যেন এটি টায়ারকে সঠিক ট্রাকশন এবং একই সাথে ফ্লেক্সিবিলিটি দিতে পারে।
- Hero Hunk ১০,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- ফাহিম হোসেন তপু) - জুন ১১, ২০২২
- Hero Hunk DD ১৭০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ ( লিখেছেন- শান্ত) - জুন ২, ২০২২
- ৪ বাইকারের “রোড সেফটি এন্ড এওয়ার্নেস” স্লোগান নিয়ে ৬৪ জেলা ভ্রমন - ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২২
You must be logged in to post a comment.