Pulsar NS 160-এর চাকার সাইজ নিয়ে আপত্তি, কৌতূহল? – বিস্তারিত লিখেছেন রাফসান খান

পালসার এন,এস, ১৬০ সিসি সেগমেন্টে একটি সাড়া জাগানো বাইক হলেও এর চাকা নিয়ে অনেক দ্বিমত রয়েছে। আজ আলোচনা করব এই বাইকে আমার ব্যবহৃত ৩ জোড়া ৩ সেগমেন্টের ট্যায়ারের অভিজ্ঞতা। (যদিও এই বাইক এ কম্পানি যা দিয়েছে তা ই যথেষ্ঠ একটা স্পোট্র্স বাইক এ, তারপরও আরও ভাল পার্ফমেন্স পেতে নিজেস্ব অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম)
আমি আমার সবক’টি ট্যায়ার এর হাওয়ার প্রেসার সামনে ৩০ psi এবং পেছনে ৩৫ psi রাখি এবং ৯৭% সময় সিঙ্গেল এ রাইড করি।

Pulsar NS 160 User

আর এই বাইক এর সামনের ও পেছনের রীম সাইজ প্রায়ই একই। মাত্র ২ মিমি এর পার্থক্য । আমি মনে করি পেছনের ট্যায়ার এর চেয়ে এই বাইক এ প্রথম এ সামনের টায়ার এ গুরুত্ব দেওয়া বেশি দরকার । কারন এ বাইকের যে ওজন তা ব্রেক করলে সম্পূর্ন সামনের চাকায় পরে যা সামনের স্টক টায়ারের নেওয়ার ক্যাপাসিটি নেই। সবাইকে দেখি শুধু পেছনের মোটা চাকা নিয়েই মাতামাতি করে । সামনে এবং পেছনের দুই টায়ার একী ক্যাটাগরি না হলে সম্পূর্ণ ব্রেকিং এবং ব্যালেন্স হবে না।

প্রথমেই আমি বলব স্টক টায়ার এর সম্পর্কেঃ

সামনে: 80/100 x 17 (MRF) এবং পেছনে: 110/80 x 17 (MRF)

NS 160

সামনে : 80/100 x 17 (MRF) এবং পেছনে : 110/80 x 17 (MRF)

মাইলেজ: মাইলেজ ১ লিটার অকটেন এ ৩০ কি মি পেয়েছিলাম । মাইলেজ টা আসলে বেশিরভাগ নির্ভর করে চালানোর ক্যাটাগরি এর উপর। তবুও আমি এ্যাভারেজ হিসেব করে বললাম।

রেটিংঃ ১০ এ ৭

স্পীড: খুব দ্রুত গতি উঠে। তবে হাইস্পিড এ পেছনে নড়াচড়া করে ।
রেটিংঃ ১০ এ ৭

ব্যালেন্স: ব্যালেন্স মোটামুটি বলা যায় । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পা নামাইতে হয় বাইক স্লো করলে ।হাইস্পিড এ পেছনে নরাচরা করে । একটু বাউলি দিলে পুরো বাইকের ব্যালেন্স ন্ষ্ট হয়ে যায় ।
রেটিংঃ ১০ এ ৬

ব্রেকঃ ব্রেকিং আহামরি না এক কথায় । বেশি স্পিড এ হঠাত হার্ড ব্রেক করলে সামনের চাকা স্কিড করে পরে গিয়ে সামনের রিম এবং শক এ্যবজবার টাল হওয়ার সম্ভবনা থাকে বেশি ।
রেটিংঃ ১০ এ ৬

কর্ণারঃ কর্ণার এ বিন্দু পরিমান কনফিডেন্স পাওয়া যায় না । এ টায়ার এ যে কর্ণার হয় তা নর্মাল ১০০ সি সি সেগ্মন্টে এও সম্ভব ।
রেটিংঃ ১০ এ ৫

কম্পাউন্ড: এ টায়ার এ ট্যায়ার এর কম্পাউন্ড হার্ড। তাই ট্যায়ার একটু ভারী। ব্রেকিং এ এবং বাইক রান করার সময় মাটি কম ধরে রাখে। আর এই কম্পাউন্ড এ টায়ার এর আয়ু অনেক বেশি থাকে। ক্ষয় হয় কম। ৩৫০০০ কি.মি পর্যন্ত টিউবলেস অবস্থায় চালানো যাবে।
রেটিংঃ ১০ এ ৫

লুক: লুক এই বাইক এ একেবারেই বে মানান মনে হয়েছে আমার কাছে ।
রেটিংঃ ১০ এ ৪

এক্সপেরিমেন্ট ১

সামনে: 90/90 x 17 (MRF) এবং পেছনে: 120/80 x 17 (MRF)

Pulsar NS Tyre

সামনে : 90/90 x 17 (MRF) এবং পেছনে : 120/80 x 17 (MRF)

যা স্টক সাইজ থেকে ১ সাইজ করে বড় এবং যা পালসার ২২০ তে ব্যবহার করা হয়।

দাম যখন কিনেছি তখন: ২৯০০ , ৪১০০ জায়গা ও সময় অনুসারে দাম ভিন্ন হতে পারে । আর টায়ার এর ও একটা ব্রেকিং পিরিয়ড থাকে । যেটা সম্পূর্ন এ্যড্সাট হতে ১০০০ কি মি সময় লাগে ।

মাইলেজ: মাইলেজ ১ লিটার অকটেন এ ২৭ কি মি পেয়েছিলাম ।
রেটিংঃ ১০ এ ৬

স্পীড: গতি তে কোন পার্থক্য পাই নি । হাইস্পিড এ পেছনে পিলিয়ন থাকলে নরাচরা করে না ।
রেটিংঃ ১০ এ ৭

ব্যালেন্স: আগের স্টক এর চেয়ে অনেক ভাল । পা নামাইতে হয় না তেমন । একটু বাউলি দিলে পুরো বাইকের ব্যালেন্স ন্ষ্ট হয় না ।
রেটিংঃ ১০ এ ৮

ব্রেক: ব্রেকিং আগের চেয়ে ভাল । বেশি স্পিড এ হঠাত হার্ড ব্রেক করলে সামনের চাকা স্কিড খুব কম করে ।
রেটিংঃ ১০ এ ৭

কর্ণার: কর্ণার এ কনফিডেন্স আগের চেয়ে একটু বেশি পাওয়া যায় ।
রেটিংঃ ১০ এ ৬

কম্পাউন্ড: এ টায়ার এ টায়ার এর কম্পাউন্ড হার্ড । তাই টায়ার একটু ভারী । ব্রেকিং এ এবং বাইক রান করার সময় মাটি আগের স্টক এর চেয়ে একটু বেশি ধরে রাখে । আর এই কম্পাউন্ড এ টায়ার এর আয়ু অনেক বেশি থাকে । ক্ষয় হয় কম । ৩৫০০০ কি.মি পর্যন্ত টিউবলেস অবস্থায় চালানো যাবে ।
রেটিংঃ ১০ এ ৬

লুক: লুক আগের চেয়ে অনেক সুন্দর মনে হয়েছে আমার কাছে ।
রেটিংঃ ১০ এ ৮

এক্সপেরিমেন্ট ২

সামনেঃ 100/80 x 17 (MRF) এবং পেছনে: 130/70 x 17 (MRF)
যা স্টক সাইজ থেকে ২ সাইজ করে বড় এবং যা পালসার এন এস ২০০ তে ব্যবহার করা হয়।
দাম যখন কিনেছি তখন : ৩২০০ , ৪২০০ জায়গা ও সময় অনুসারে দাম ভিন্ন হতে পারে।

Pulsar NS Rear Tyre

সামনে : 100/80 x 17 (MRF) এবং পেছনে : 130/70 x 17 (MRF)

মাইলেজ: প্রথম ৭০০ কি মি মাইলেজ পেয়েছি ২৪ কি মি ১ লিটার অকটেন এ । হঠাত কেন জানি মাইলেজ বেরে ৪১ কি মি পার লিটার হয়ে গেল। পরে অনেক ঘেটে দেখলাম যে টায়ার মোটা হইলেও আগের চেয়ে অনেক হালকা । যা অন্যতম কারন মাইলেজ দেওয়ার ।
রেটিং: ১০ এ ৯

স্পীড: গতি তে অনেক পার্থক্য এসেছে । ০ থেকে ১০০ পর্যন্ত ১-৩ সেকেন্ড এর বেশি সময় লাগে । টপ স্পিড ১১৪ ক্রস করাতে পারলম না তাও সিঙ্গেল এ । হাইস্পিড এ কোন নরাচরা করে না ।
রেটিং: ১০ এ ৬

ব্যালেন্স: আগের স্টক এর চেয়ে অনেক ভাল । পা নামাইতে হয় না তেমন । একটু বাউলি দিলে পুরো বাইকের ব্যালেন্স ন্ষ্ট হয় না । 100/80 x 17 সামনের টায়ারে এর জন্য হ্যান্ডেল বেশ ভারী হয়ে যায় এবং মুভ বেশিক্ষন করলে হাতের কবজি ব্যাথা করে ।
রেটিং: ১০ এ ৮

ব্রেক: ব্রেকিং ৯০ এবং ১২০ এর মতনই। তবে ১.৫ ইঞ্চি এর মতন উচু হইসে বাইক আগের চেয়ে । হার্ড ব্রেক করলে এ কোন স্কিড বা মিস ব্যালেন্স হয় না ।
রেটিং: ১০ এ ৯

কর্ণার: কর্ণার এ কনফিডেন্স সেই লেভেল এর পাওয়া যায়। এমনকি ডাবল স্ট্যান্ড মাটি ছোয় তবুও মনে হয় আর একটু কর্ণার করা যাবে।
রেটিং: ১০ এ ৯

কম্পাউন্ড: এ টায়ার এ টায়ার এর কম্পাউন্ড অনেক সফট। তাই টায়ার একটু হাল্কা। ব্রেকিং এ এবং বাইক রান করার সময় মাটি আগের স্টক এর চেয়ে একটু বেশি ধরে রাখে। আর এই কম্পাউন্ড এ ট্যায়ার এর আয়ু খুব বেশি না। ক্ষয় হয় বেশি। ২৫০০০ কি.মি পর্যন্ত টিউবলেস অবস্থায় চালানো যাবে ।
রেটিং: ১০ এ ৮

লুক: সাইড লুক এবং সামনে দেখে মনে হয় এন এস ২০০। তবে পেছনে দেখতে ১১০ ই মনে হয় কারন রীম এর চেয়ে টায়ার বেশি মোটা। গোল হয়ে আছে তাই ।
রেটিং: ১০ এ ৮

পরিশেষে আমি বলব, যারা নরমাল ইউজার ৫০-৬০ গতি ক্রস করে না তাদের জন্য স্টক ই যথেস্ট ।
90/90 x 17 mrf এবং পেছনে : 120/80 x 17 mrf এই বাইক এর জন্য পার্ফেক্ট মনে হয়েছে সব দিক থেকে আমার কাছে।
100/80 x 17 mrf এবং পেছনে : 130/70 x 17 mrf কর্ণার আর ব্রেকিং এর জন্য বেস্ট ।

আমি ভবিষ্যতে 90/90 x 17 এবং পেছনে : 120/80 x 17 সফ্ট কম্পাউন্ড (Pirelli/Michelin ) টায়ার এ যাব ।

 

লেখক ও ছবি: Rafsan Xani (এডমিন – Pulsar NS 160 Club Of BD)

Related Posts

error: Content is protected !!