গ্রুপে অনেক দিন ধরে কোন ট্যুর নেই। তাও প্রায় বছর খানেক তো হবেই। এর ভিতর গ্রুপ এ একটা টুর এর পোষ্ট দেখলাম। প্লান হইতেছে গুলিয়াখালি সি বিচ, এর ভিতর আমারে পল্লব ভাই ফোন দিয়ে বল্ল ভাই যাবেন নাকি, আমি বললাম হা ভাই যাবো তো, আসলে নাহ করার সাহস হয় নাই। আবার জাবার ও সাহস হই নাই, বিশেষ করে আমার বুলেট ১০০ সিসি নিয়ে। এর আগে ১৬ তারিখ বুলেট দিয়ে ৪১০+ টুর শেষ করি, ওই দিনের কথা ভেবে সাহস সঞ্চয় করলাম। আসতে আসতে টুর এর তারিখ সামনে আসতেছে আর ভিতরে ভিতরে উত্তজনা বাড়তেছে। টুর এর আগের দিন বক্তিয়ার ভাই এর সাথে দেখা উনার পিলিয়ন হিসাবে যাবার কথা আমার। কেন জানি আমার পিলিয়ন হিসাবে যাইতে অনেক ভয় লাগে, যাই হোক ওনাকে সে দিন বললাম ভাই আমি আমার বাইক নিয়ে যেতে চাই। উনি আমাকে ফুল ফ্রিডোম দিল।পরে সার্ভিস সেন্টার থেকে হালকা কিছু সার্ভিস করায় নিলাম।
সব কিছু রেডি করে সে দিনের মত ঘুমিয়ে গেলাম, সে দিন কেন জানি খুব একটা ভাল ঘুম হল নাহ। ৪ টা ৩০ এর দিকে ঘুম থেকে উঠে আগে ফেসবুকে ঢুকলাম ।দেখি নাসির ভাই আর সোহাগ ঘুম থেকে উঠে গেছে। আমি তড়িঘড়ি করে উঠে ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে বের হয়ে পড়লাম আল্লাহর নাম নিয়ে। আমাদের মিটিং পয়েন্ট ছিল টি এস সি তে । এয়ারপোর্ট পাম্প থেকে তেল নিয়ে নিলাম। এর ভিতর বক্তিয়ার ভাই কে ফোন দিলাম দেখি ধরে নাহ। পরে পকেট এ রেখে বাইক টান দেয় মিরপুর এর দিকে। ওখান থেকে আমার বন্ধু আমার সাথে যাবে। ওর ও সারা রাত ঘুম আসে নাই। সেইও ঘুরতে খুব ভালবাসে। ওকে নিয়ে টি এস সি এর দিকে রউনা দিলাম , গিয়ে দেখি সবাই চলে আসছে আসে নাই শুধু সোহাগ ফোন বের করে দেখি ও আমারে অনেক বার ফোন দিছে ।
যাই হোক পরে পল্লব ভাই এর থেকে জানলাম আমার জন্য নাকি সে অপেক্ষা করতেছিল, ১০ মিনিট পরেই ও আসলো। আসার পর বাইক সিরিয়াল করা হল। এর ভিতর আমাদের এডমিন মেহেদী ভাইও চলে আসছে আমাদের কে বিদায় জানাতে,প্লান হল।আমরা একবারে মিয়ামি তে গিয়ে থামব এর ভিতর কোন ব্রেক হবে নাহ। ৬টা ২০ এর দিকে আমরা টি এস সি থেকে রউনা দেয়। ১৪ টা বাইক ২৩ জন মানুষ । মেহেদি ভাই আমাদের কে যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভার পযন্ত এগিয়ে দিয়ে আসে।
ফ্লাই ওভার পার হয়ে পড়ি জ্যাম অনেক কষ্টে জ্যাম পাড়ি দেবার পর শুরু হই আমাদের যাত্রা। গ্রুপ এ আমি ছিলাম শেষ দিকে ২য় নম্বারে আমার আগে ছিল বক্তিয়ার ভাই। আমরা খুব মজা করে রাইড করতেছিলাম। এভারেজ স্পেড ছিল ৮০-৮৫ এর মত ।
সূর্য টা মাত্র উঠতে শুরু করেছে লালচে একটা সূর্য আমাদের কে ফল করে আমাদের সাথে যাসছে। হালকা হালকা কুয়াশা সাথে ঠান্ডা অদ্ভুত এক অনুভূতি যাহ বলে প্রকাশ করা যাবে নাহ। আমার সকাল বেলায় রাইড করতে অনেক বেশি ভাল লাগে।
মেঘনা ব্রিজ পার হয়ে সবাই খিচ্চা টানা শুরু করল, আমার তো ছোট গাড়ি সাথে পিলিয়ন আছে যতই টানা টানি করি নাহ কেন ৯০ এর বেশি উঠে নাহ । মাঝে মাঝে জুনিয়র মেহেদি তার সদ্য কেনা ug5 নিয়ে একটা বিকট সাইন্ড কইরা আমাদের কে পাস কাটাই চইলা যাই ,এমন ফাকা রাস্তা শুধু পিকাপ ধরে বসে আছি আর কিছু করতে হইতেছে নাহ। যাই হোক আমরা ৯ টার দিকে মিয়ামি তে পৌছাই গেলাম। জামের কারনে আমারে একটু বেশি সময় লাগছে, ওখানে আমরা নাস্তা করে বাইক টা কে একটু বিশ্রাম দিলাম। এর ভিতর সোহাগ এর নাকি ইঞ্জিল ওয়েল ড্রেন দেয়া লাগবে ,তো আমরা সবাই কে বললাম আপনারা চলে যান আমরা আসতেছি , আমি বক্তিয়ার ভাই সোহাগ আর নাসির , ইঞ্জিন ওয়েল চেঞ্জ করার পর আমরা টান দিলাম , সোহাগ লিড দিসছে এর পরে বক্তিয়ার ভাই তারপর আমি এদিকে নাসির ভাই হাওয়া হয়ে গেছে।
সব থেকে বেশি উপভোগ্য ছিল রাস্তার দুই পাসের সিনারি ।। উফফফ কি যে সুন্দর বার বার যেতে মন চাইবে এই রাস্তায়। চারি দিকে মাঠ মাঝে মাঝে কিছু বিলের মত , সকালের রোদ এসে বিলের পানিতে পড়েছে সে এক অদ্ভুত ভাল লাগা। এর মাঝে আমরা দাঁড়িয়ে কিছু ছবি তুলে নিলাম।
এভাবে দেখতে দেখতে কখন যে সময় চলে গেছে বুঝতেই পারি নাই। যেতে যেতে দেখি মেহেদি সিগ্নাল দিতেছে । তো স্লো করে দাড়ালাম দেখি সবাই দাঁড়িয়ে আছে আমরা চলে আসছি মহামায়া তে , তখন ঘড়িতে বাজে ১১.৪৫ , আমরা গাড়ী পার্ক করে টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকলাম , টিকিট ছিল ২০ আর গাড়ী পার্ক ২০ , ভিতরে ঢুকার পরে আমরা প্রথমে লেক এর ধারে যাই আমরা বন্ধুর খুব শখ সে কাইকিং করবে। তো দেখি সবাই পাহাড়ের দিকে উঠে সাথে আমরাও ঊঠলাম। চারিদিকে এত সুন্দর দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যাই । কিছু ছবি দিয়ে দিতেছে দেখে নেন, আসলে এগুলো মুখে বলে প্রকাশ করা সম্ভব নাহ।
ওখান থেকে কিছু ছবি তুলে নিচে চলে আসলাম লেকের ধারে সবার ইচ্ছে লেক ঘুরবে নৌকা করে, নৌকা ভাড়া করা হল। প্লান ওখানে একটা ঝরনা আছে। দেখার, প্রথম এ লেক টা ঘুরে চলে গেলাম ঝরনার দিকে, এর ভিতর jr মেহেদি আগে নেমে গেছে আমি একটু পরে নামি দেখি গিয়ে সে গোসল করতে শুরু করে দিয়েছে। গেলাম গিয়ে ওখানে কিছু ছবি তুলে ঝরনার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিলাম। খুবই ঠান্ডা পানি । jr মেহেদি কাপতেছে । কাপো বাবা ।। 😛
ওখানে ২০ মিনিট এর মত থাকা হল ঘড়ি তে তখন ২.৩০ মিনিট সবার খুদা লেগেছে পচুর নৌকা ব্যাক করার সাথে সাথে সবাই বলল এখন বের হতে হবে। আমার বন্ধু কাইকিং করতে চাইছিল তা আর হল নাহ।
বের হবার সময় দেখি একদল ভ্রমন পাগল মানুষ জন ঢুতেছে । দেখি সবুজ ভাই FCB এর এডমিন ভাই পরে গিয়ে উনার সাথে কথা হল । উনারা কাইকিং করতে আসছেন। উনাদের থেকে বিদায় নিয়ে খাবার উদ্দেশ্য সবাই রউনা দিলাম ।
দুপুরে খাবার এ জন্য এক জাইগায় ব্রেক দিলো। সবাই খেলাম যে যার মত করে।
আমি আমার বন্ধু গরুর মাংস আর বট দিয়ে ভাত খেলাম।
তারপর শীতের কাপড় পড়ে নিয়ে রউনা দিলাম ঢাকার উদ্দ্যসে। পথে মধ্য রাজিব ভাই এর বাইকের হেডলাইট কেটে বিপদ। পরে উনারে নিয়ে আসলাম। দাউদ কান্দি থেকে শুরু হল প্রচুর জ্যাম। এর ভিতর ক্লাব রোড মাস্টার এর আসাদ ভাই এর সাথে দেখা, উনার সাথে কথা বলে উনাদের পিছনে রেখে আমরা ঢাকার দিকে আসতে আসতে জ্যাম ঠেলে ব্যাক করতে থাকলাম।
রাত ১১ টা ১৫ মিনিট এ বাসায় পোঁছাই বন্ধু কে মিরপুর এ রেখে।
লিখেছেনঃ মোঃ রাসেল খান
- টানা ১৮ বছর লুব্রিকেন্ট মার্কেটের শীর্ষে Shell - ডিসেম্বর ১, ২০২৪
- শেল এডভান্স কিনে মালয়েশিয়া মটোজিপি টিকেট জেতার সুযোগ - আগস্ট ১৪, ২০২৩
- Bike Lock Combo: চুরি অসম্ভব? বাইকের ব্যাটারী ১০০% নিরাপদ? - জুলাই ২৪, ২০২৩
You must be logged in to post a comment.