দেশে মোটরসাইকেল বিক্রিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে টিভিএস। ভারতীয় এ ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল বাংলাদেশে বাজারজাত করছে দেশীয় শিল্পগোষ্ঠী সনি-র্যাংগস গ্রুপ। দেশের মোটরসাইকেলশিল্প নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন টিভিএস অটো বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে একরাম হোসেইন।
প্রথম আলো: বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের বাজার বাড়ছে কেমন? স্থানীয়রাও তো উৎপাদনে এগিয়ে আসছে?
জে একরাম হোসেইন: মোটরসাইকেলশিল্পের উন্নতির জন্য কয়েক বছর ধরে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো দেশে মোটরসাইকেল উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ কারণে করহার কমেছে, এর প্রভাবে দামও কমছে। ফলে বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের বাজার ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। ২০১৮ সালে দেশে সাড়ে ৪ লাখ মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে। ২০১৭ সালে বিক্রি হয়েছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার। দাম কমায় গত বছর বিক্রি বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করি, সরকার কোনো সুবিধা দিলে দ্রুততম সময়ে তা ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার।
প্রথম আলো: এ দেশে মোটরসাইকেলের বাজারের সম্ভাবনা কতটা? দেশে উৎপাদিত মোটরসাইকেলের দাম কি আরও কমতে পারে?
একরাম হোসেইন: বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের বাজার আরও বড় হবে। কারণ, পাকিস্তানে প্রতিবছর ৩০ লাখ মোটরসাইকেল বিক্রি হয়। ভারতে বছরে বিক্রি হয় ৪ থেকে ৫ কোটি। বাংলাদেশেও বছরে ১০ লাখ মোটরসাইকেল বিক্রি হবে। ভারত ৯৫ শতাংশ যন্ত্রাংশ নিজেরাই উৎপাদন করে। আমরা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত যন্ত্রাংশ হয়তো নিজেরা উৎপাদন করতে পারব। তবে আমরা চাইব, ভারতে যারা যন্ত্রাংশ উৎপাদন করে, তারা বাংলাদেশে আসুক। বাজার বড় হলে তারা আসবে। এতে যন্ত্রাংশের খরচ কমে আসবে। ফলে মোটরসাইকেলের দামও কমবে।
প্রথম আলো: দেশে উৎপাদন নাকি সংযোজন। উৎপাদন হলে মান ঠিক থাকবে তো?
একরাম হোসেইন: শুধু সংযোজন নয়, উৎপাদনে যাচ্ছি আমরা। বিষয়টা হলো মোটরসাইকেল উৎপাদনে যত বেশি স্থানীয় যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হবে, ততই ভালো। এতে দাম কমবে, দেশের জন্যও ভালো। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হলেও এটা কিন্তু ভারতীয় ব্র্যান্ড। তাই পণ্যের মানে কোনো তারতম্য হবে না। কারণ, তাদের সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো ধরনের পণ্য উৎপাদিত হবে না। টিভিএসের আরটিআর ও স্ট্রাইকার বাংলাদেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। এ দুটো গাড়ির রং দেশেই করা হচ্ছে। কাঠামোও এখানে লাগানো হচ্ছে।
প্রথম আলো: মোটরসাইকেলশিল্পের বিকাশে সরকারের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা কী?
একরাম হোসেইন: সরকারের কাছে আমাদের চাওয়া, প্রতিবছর বাজেটে যেন নীতির কোনো পরিবর্তন করা না হয়। কারণ, শিল্পের বিকাশের স্বার্থে সরকারের নীতি ধারাবাহিকতা থাকা প্রয়োজন। এতে আমরা মোটরসাইকেলশিল্প ঘিরে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে পারি। এ খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে হয়। তাই আমাদের চিন্তা করতে হয়, মুনাফার মুখ কবে দেখব, কত দিনে বিনিয়োগ ফেরত আসবে—এসব। মোটরসাইকেল উৎপাদনে শিল্প মন্ত্রণালয় একটা নীতিমালা করেছে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন করলে কাঁচামাল আমদানিতে কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ অনুযায়ী সবকিছু চললে মোটরসাইকেলশিল্পের জন্য ভালো হবে। ভবিষ্যতের জন্য যন্ত্রাংশের বাজার এখানেই সৃষ্টি করতে হবে। আমরা দেশে যত বেশি যন্ত্রাংশ উৎপাদন করতে পারব, ততই ভালো হবে।
প্রথম আলো: দেশের বাজারে টিভিএসের অবস্থান কোথায়? গ্রাহকদের বিশেষ কী সেবা দিচ্ছেন আপনারা?
একরাম হোসেইন: দেশের মোটরসাইকেল বাজারের ২৪ থেকে ২৫ শতাংশ টিভিএসের। ২০১৮ সালে আমরা ১ লাখ ১০ হাজার মোটরসাইকেল বিক্রি করেছি। চলতি বছরে দেড় লাখ বিক্রির পরিকল্পনা আছে। বাংলাদেশে মোটরসাইকেল বাজারে আমরা দ্বিতীয় অবস্থানে আছি। শুধু মোটরসাইকেল বিক্রি করেই গ্রাহকের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে না। সারা দেশে আমাদের ১৯৭ জন পরিবেশক আছেন। বড় আকারের ১০টি শোরুম রয়েছে। ৭০০ ওয়ার্কশপের সঙ্গে টিভিএসের চুক্তি আছে। এর বাইরে টিভিএসের যন্ত্রাংশ পাওয়া যায় ১২০ বিক্রয়কেন্দ্রে।
সূত্রঃ প্রথম আলো
- শেল এডভান্স কিনে মালয়েশিয়া মটোজিপি টিকেট জেতার সুযোগ - আগস্ট ১৪, ২০২৩
- Bike Lock Combo: চুরি অসম্ভব? বাইকের ব্যাটারী ১০০% নিরাপদ? - জুলাই ২৪, ২০২৩
- ক্যাশব্যাক ও EMI অফারে বাইক কেনার সুযোগ দিছে টিভিএস সেলস পয়েন্ট - জুলাই ১৯, ২০২৩