টায়ার জেল শব্দটি শুনলে আমরা সবাই একটু হলেও আন্দাজ করে ফেলতে পারি জিনিসটা টায়ারের সাথে জড়িত কিছু একটা। কিন্তু টায়ার জেল সম্পর্কে আমরা অনেকেই এখনো ভালোভাবে জানি না।
তাই চলুন দেরী না করে জেনে নেয়া যাক।
টায়ার জেল কি?
টায়ার জেল অথবা সিলেন্ট হচ্ছে এক প্রকারের রাসায়নিক পদার্থ যা চাকার লিক প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে।
বাইকারদের চলার পথে টায়ার পাংচার হওয়া খুব কমন আর বিরক্তিকর একটা ব্যাপার। টায়ার পাংচার মানেই বাইকটিকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে ম্যাকানিকের কাছে নিয়ে যাওয়া। এই সমস্যাটির সমাধান করে দিতে পারে টায়ার জেল।
আমার বাইকে কি টায়ার জেল ব্যবহার করা যাবে?
আমাদের দেশের বাইকগুলোতে সাধারণত দুই ধরনের টায়ার দেখা যায়,
১। টিউব টায়ার
২। টিউবলেস টায়ার।
আপনার বাইকটি যদি টিউবলেস টায়ারের হয় তাহলে আপনি টায়ার জেল ব্যবহার করতে পারবেন।
টায়ার সিলেন্ট অথবা জেল ব্যবহারের সুবিধাঃ
১। টায়ার জেল আপনাকে দেয় বিরম্বনাহীন পথ চলার নিশ্চয়তা, মাঝ রাস্তায় বাইকের চাকা পাংচার হলেও আপনি বাইক চালিয়ে অনায়াসে আপনার গন্তব্যে পৌছে যেতে পারবেন।
২। টায়ার জেল হচ্ছে এক প্রকারের সিলেন্ট, যা আপনার টায়ারের ভিতরে এক ধরনের প্রলেপ হয়ে থাকে, যখন কোন ছিদ্র হয়ে যায় তখন সিলেন্ট ওই ছিদ্র স্থান আপনা আপনি পূরন করে নেয়।
৩। টায়ার জেল ব্যবহার করা খুব সহজ।
৪। হাইস্পীডেও টায়ার জেল কোন প্রকারের সমস্যা করে না।
৫। টায়ার জেল একবার ভরলে অনেক দিন ব্যবহার করা যায়, অনেকের মতে যতদিন টায়ার লিক না হয় ততদিন জেলের ক্ষমতা ঠিক থাকে, তবে আমার মতে ৬ মাস পর জেল পরিবর্তন করা ভালো যদি টায়ারে লিক থেকে থাকে।
টায়ার জেল কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?
ইদানিং কিছু টায়ার জেল বের হয়েছে যা ইন্সটল করা খুব সহজ। আপনি নিজেও টায়ারে জেল ভরতে পারবেন টায়ার না খুলে। তবে কিছু জেল আছে যা ভরতে টায়ার খোলার প্রয়োজন পড়ে, সেক্ষেত্রে ভালো কোন মেকানিকের দোকানে গেলে আপনার বাইকের চাকায় টায়ার জেল ইনস্টল করে দিবে। বর্তমানে অধিকাংশ টায়ার রিপেয়ার গ্যারেজেই বিভিন্ন ব্রান্ডের টায়ার জেল পাওয়া যায়।
দাম কেমন হতে পারে?
বিভিন্ন দামের টায়ার জেল বাজারে পাওয়া যায়। ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত।
কুইক ফিক্সঃ
বাংলাদেশে ইদানিং নামকরা একটি টায়ার সিলেন্ট ব্রান্ড হচ্ছে কুইক ফিক্স। বড় আকারের ৯ মিলিমিটার পর্যন্ত ছিদ্র বন্ধ করতে সক্ষম। মাত্র ৩৫০ মি.লি. লিকুইড একসাথে ৫০ টি পর্যন্ত ছিদ্র বন্ধ করতে সক্ষম। টায়ার না খুলেই এটি সহজে ইন্সটল করা যায়। দাম ৪৫০ টাকা মাত্র।
টায়ার জেল ব্যবহারের অসুবিধাঃ
১। টায়ার জেল কোন চিরস্থায়ী সমাধান না, যদি আপনার বাইকের চাকায় বড় কোন ছিদ্র অথবা কাটা থেকে থাকে তাহলে সেটা ঠিক করিয়ে নেয়াই উত্তম।
২। টায়ার জেল ঠিক মতন চাকায় প্রবেশ করাতে না পারলে সেটা এক জায়গায় জমে থাকে ফলে বাইক চালানোর সময় কিছুটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে হতে পারে।
৩। যেহেতু এটা এক প্রকারে রাসায়নিক দ্রব্য তাই সঠিক ব্যবহার না হলে আপনার বাইকের চাকার ক্ষতি হতে পারে।
এবার আসি কিছু কুসংস্কার এর উত্তর নিয়ে, টায়ার জেল ব্যবহার করলে নাকি টায়ার খুব সহজেই নস্ট হয়ে যায়?
উত্তরঃ আমি আমার বাইকের উভয় চাকায় টায়ার জেল ব্যবহার করছি, চাকার বিট শেষ হয়ে যায় কিন্তু টায়ারে ক্ষতি করেছে এমনটা আজ পর্যন্ত আমার কাছে মনে হয়নি, তবে হ্যাঁ যদি আপনার টায়ারের বিট শেষ হয়ে যাওয়ার পরও আপনার টায়ার ব্যবহারের অভ্যাস থাকে সেক্ষেত্রে টায়ার জেল আপনার কাছে ক্ষতিকারক মনে হতে পারে।
পরিশেষে বলতে চাই, টায়ায় জেল আপনার চলার পথকে ঝামেলামুক্ত করে। টায়ার জেল আপনার বাইকের মাইলেজ অথবা গতির উপর কোন প্রভাব ফেলে না।
লিখেছেনঃ আশিক মাহমুদ
- শেল এডভান্স কিনে মালয়েশিয়া মটোজিপি টিকেট জেতার সুযোগ - আগস্ট ১৪, ২০২৩
- Bike Lock Combo: চুরি অসম্ভব? বাইকের ব্যাটারী ১০০% নিরাপদ? - জুলাই ২৪, ২০২৩
- ক্যাশব্যাক ও EMI অফারে বাইক কেনার সুযোগ দিছে টিভিএস সেলস পয়েন্ট - জুলাই ১৯, ২০২৩
You must be logged in to post a comment.