Yamama R15 V3 (Indian ABS) ১৫ হাজার কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- বাঁধন)

*বাইক রিভিউ: Yamaha R15 v3 (indian) Dark knight
ছোটবেলা থেকেই বাবা কাকার বাইক চালানো দেখে বড় হওয়া। সেই আমলে বাজাজ চ্যাম্পিয়ন বাইক ছিল সেটা দিয়েই চালানো শেখা আর বাইকের প্রতি একটা ভালোবাসা তৈরী হয়,এবার আমি আমার Yamaha R15 Dual ABS নিয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতা সবার সাথে শেয়ার করি।

 

আমি বাইক নিয়েছি মাত্র ৬ মাসের মতন হয়েছে, অল্প সময়ে বেশ অনেকটাই চালানো হয়ে গেছে। আমার এই বাইক এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার কিলোমিটার এর কাছাকাছি চলেছে। পারফরমেন্স এর দিকে আমাকে এখনো নিরাশ করে নাই। এর মধ্যে সবথেকে এক্সট্রিম রাইড ছিল আমার (সিরাজগঞ্জ -ঢাকা-খাগড়াছড়ি -সাজেক- রাঙ্গামাটি-বান্দরবন-থানচি- আলিকদম – ডিম পাহাড় – কক্সবাজার – চট্টগ্রাম- সিরাজগঞ্জ) এছাড়াও, কুষ্টিয়া, পাবনা,রাজশাহী
লোকে বলে R15 নিয়ে নাকি লং রাইড করা যায়না, হ্যাঁ কারন আছে বলার করা যায়না এমন না সবই অভ্যাস আর কিছুই রাইডিং স্টাইল এর ওপর নির্ভর করে। মানুষ তো হায়ার সিসি স্পোর্টস বাইক নিয়েও ট্যুর করে। এই বাইকের সবথেকে ভালো লেগেছে আমার কাছে মাইলেজ আর পাওয়ার ♥
এবার বাইক নিয়ে কি কি সমস্যা হইছে বা কেমন পারফরমেন্স পাইছি সব বিস্তারিত বলি।

 

*ব্রেকিং:
Dual chanel ABS এক কথায় অসাধারন , আমি আমার বাইক নিয়ে বৃষ্টিতে বালুতে বা নুড়ির মধ্যেও রাইড করছি কোথাও হতাস হইনি। তবে পাহাডের ঢাল নামতে নুড়ির মধ্যে মনে হয় পেছনের ABS অফ করার অপশন থাকলে ভালো হইতো। ঐ অবস্থায় ABS থেকে NON ABS ভালো।

 

*কন্ট্রোলিং এবং ব্যালেন্স :
বাইকের ব্যালেন্স খুব বেশি ভালো। ওয়েট ডিস্ট্রিবিউশন ভালো, যেকোনো স্পিডে বাইক এদিকে ওদিকে মুভ করে মজা পাওয়া যায়। পাওয়ারফুল একটা বাইক চালাইতে কখোনোই মনে হয়নাই আমি কনট্রোল হারায়া ফেলছি।

 

*মাইলেজ:
এখানে কিছু কথা আছে। ভালো মাইলেজ পেতে চাইলে একটা ভালো ফুয়েল নিতে হবে আর জেন্টলি রাইড করতে হবে। আমি থাকি সিরাজগঞ্জ এখানে ফুয়েল এর অবস্থা খুব এককটা ভালো না। তবুও শহরের মধ্যে ৪০-৪২ মাইলেজ পাই আর হাইওয়েতে গেলে ৪৫-৪৭
কিন্তু লাস্ট সাজেক ট্যুরে ঢাকা (ট্রাস্ট) থেকে তেল তুলে ফেনি পর্যন্ত ৫৩ মাইলেজ পাই। আসার সময় (ক্লিন) থেকে তেল তুলে ৫৪ মাইলেজ পাই।

 

*টপ স্পিড :
এখনও পর্যন্ত আমি আমার বাইকের টপ স্পিড পেয়েছি ১৫৬ কি.মি./ঘন্টা । (আমার ওজন মাত্র ৬০ কেজি)

 

*ভাইব্রেশন ; স্মুথনেস:
অনেক বাইকের সাথে তুলনা করলে এটায় ভাইব্রেশন নাই বললেই চলে,তবে ৪ হাজার আর পি এম ক্রস করার সময় সামনের ভাইজর এর দিকে খেয়াল করলে কিছু ভাইব্রেশন লক্ষ্য করা যায়।

 

এখন বলি বাইকের খারাপ দিক বা আমার ক্ষেত্রে ঘটা কিছু সমস্যা নিয়ে।
*কমফোর্টে:
এখানে এসে বাইকটা তার সব গুন হারায়া ফেলে, যদিও স্পোর্টস বাইকে কমফোর্টে এর চিন্তা করতে হয়না তবুও বলতে পারি CBR ও স্পোর্টস বাইক, তবে অভ্যাস আর রাইডিং স্টাইল কিছুটা সমস্যা সমাধান করে। আমি ৫ ফিট ৭ ইঞ্চি+ একেবারে খাটো না বা লম্বাও না। সাজেক ট্যুরে খাগড়াছড়ি পার হবার পরে ডান হাতের কবজিতে এমন ব্যাথা শুরু হয় যার ফলে আমি তখন আর বাইক চালাইতেই পারি নাই। পিলিয়ন হয়ে অনেকটা রাস্তা যেতে হইছে
মেডিসিন নেওয়ার পরে আর ট্যুর লিডার এর কারসাজিতে ব্যাথা কমে। সব মিলিয়ে বেশ ভালোই আছি বাইকের সাথে।

 

*হেডলাইট :
যাচ্ছেতাই অবস্থা এই আলো দিয়ে হাইওয়ে কেন গ্রামের রাস্তাতেও চালানো কষ্টকর।

 

বাইকের চেঞ্জ বা মোডিফিকেশন :
এখনও কিছু চেঞ্জ করতে হয় নাই শুধু এয়ার ফিলটার আর স্পার্ক প্লাগ নিজের পছন্দমত লাগাইছি।
এই ছিল আমার Yamaha R15 V3 Dual ABS ( indian) নিয়ে ১৫ হাজার কিলোর জার্নি।
ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

 

Related Posts

error: Content is protected !!