এক্সপ্লোরিং নেপাল ২০২০ (বাইক ট্যুরের অভিজ্ঞতা লিখেছেন আশিক-উজ-জামান)

বাইক চালানো শুরু করি ২০১১ সাল থেকে। বড় ভাই এর কাছ থেকে বাইক চালানো শেখা। ২০১৬ সাল থেকে বাইক দিয়ে ট্রাভেল করা শুরু হয়। বাইক চালিয়ে নিজ দেশ সহ দেশের বাহিরে ঘুরে দেখতে চাই ও প্রকৃতি থেকে নানা ধরনের শিক্ষা নেয়াটাই উদ্দেশ্য। আমাদের দেশের অনেক বাইকার ভাই আছেন যাদের দেখে ট্রাভেলিং করার উৎসাহ পাই। গত ৪ বছরে বাংলাদেশ এর বিভিন্ন পর্যটন প্লেসে ঘুরে বেড়ানো হয়েছে। দেশের বাহিরে ট্যুর দেওয়ার ইচ্ছা অনেক আগে থেকেই ছিল।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ থেকে নেপাল যাওয়া হয় ফ্লাইট-এ করে। ১১ দিনের ট্যুর ছিলো এটা। নেপাল এর কাঠমান্ডু থেকে বাইক রেন্ট নেওয়া হয় ১০ দিনের জন্য। কাঠমান্ডু থেকে ট্যুর শুরু হয় মুস্তাং ভ্যালি, মুক্তিনাথ এর উদ্দেশ্যে।

নেপাল অফরোডিং এর জন্য খুবই বিখ্যাত। পাহাড়ের এই অফরোডিং রাইড আপনাকে যেই তৃপ্তি দিবে তা পিচ ঠালা রাস্তাতে কখনোই দিবে না। ট্যুরের রুট প্লান ছিলো কাঠমান্ডু – পোখড়া – বেনী- তাতোপানি – জমশম – মুক্তিনাথ। কাঠমান্ডু থেকে পোখড়া পর্যন্ত রাস্তা ভালো। বেনী থেকে মুক্তিনাথ পর্যন্ত পুরা রাস্তা অফরোড। তাতোপানি এর পর থেকে টেম্পারেচার লো হওয়া শুরু হয়।

যখন যমশম-এ যাই তখন ওই পরিবেশ এর সাথে মানিয়ে নেয়া কষ্টকর হয়ে পরে। দিনের বেলা টেম্পারেচার ৫/৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে। আর রাতের বেলা মাইনাস ১০/১৫ এই রকম থাকে। যমশম এ আসার সময় দিনে ছিলো মাইনাস ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সকাল থেকে স্নো-ফল হচ্ছিল। এই স্নো-ফল এর মধ্যে টানা ৪ ঘন্টা রাইড করতে হয়েছিলো।

ইন্টারন্যাশনাল ট্যুর এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরিবেশ এর সাথে মানিয়ে নেয়া নিজেকে। বাইক রেন্ট এর জন্য ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং পারমিট দরকার হয়। যা বাংলাদেশ থেকে করা যায় ২৫০০ টাকা খরচ পরে। ট্যুরে আমি হর্নেট ১৬৫ বাইক রেন্ট নেই যাতে প্রতিদিন ১৩০০ নেপালি রুপী খরচ হয়।

মুস্তাং ভ্যালির জন্য পারমিশন কাঠমান্ডু ট্যুরিজম বোর্ড থেকে নিতে হয়। এখানে ১৪০০ রুপী খরচ হয়।

নেপাল এর খাবার এর টেস্ট ভিন্ন তাই এখানের খাবার এর জন্য কষ্ট করতে হয়। রুটি, বিস্কিট, জুস আর ডিম খেয়েই ১১ দিন সার্ভাইব করতে হয়েছে ট্যুরে থাকা অবস্থায়।

নেপাল এর সবাই ইংরেজি বুঝে না। হিন্দি জানা থাকলে কমিউনিকেট করতে খুব ইজি হয়।

ট্রাভেলিং এর জন্য নেপাল খুবই সেফ কান্ট্রি। এখানের মানুষ খুবই জেন্টেল। নেপালের পুলিশ এর ব্যবহারও খুবই ভালো। বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকায় রাতে রাইড করে সিকিউরড ফিল পাই না যেখানে নেপাল এ রাত ৩ টায় পাহাড়ি রাস্তায় রাইড করে সিকিউরড ফিল করা যায়।

নেপালের ট্রাফিক রুলস খুবই হার্ড। এখানে ট্রাফিক রুলস সবাই মেনে চলে। না মানারও কোন অপশন নাই কারন সামান্য নিজ লেন থেকে অন্য লেনে গেলে ৭০,০০০ রুপী জরিমানা। 😁

জীবনের বেস্ট ১১ দিন কাটানো হয়েছে নেপালে যা ভূলার মতন না। ইনশাল্লাহ সামনে অন্য কোন দেশে রাইড করবো। সবাই দোয়া করবেন।

USE HELMET, RIDE SAFE 🏍

লিখেছেনঃ Ashik Uz Zaman