TVS Apache RTR 160 4V ৮০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- মুহাম্মাদ শামীম আল মামুন)

TVS Apache RTR 160 4V-তে অনেকেই মাইলেজ ভালো পায় না এই অভিযোগ। ১ বছরের উপরে TVS Apache 4V DD চালাচ্ছি। বাইক ৮০০০+ কি.মি. চালিয়েছি।
এর আগেও কয়েকবার মাইলেজ টেস্ট করেছি সিটি+হাইওয়ে মিলিয়ে গড়ে ৪১ কি.মি./লিটার পেয়েছি।
শুধু হাইওয়েতে পেয়েছিলাম ৪৬.৫ কি.মি./লিটার।
আমার এই মাইলেজ পাওয়া অনেকে বিশ্বাসই করতে চাইতো না।
শেষ একবার পেট্রোল ঢুকিয়ে খুব প্যারায় ছিলাম। বাইক টানছিল না, ধাক্কাচ্ছিল। সেবার হাইওয়েতেই মাইলেজ পেয়েছিলাম ৩৮.৫ কি.মি./লিটার।
এটা দেখে দুঃখে পড়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম আমারও মাইলেজে সমস্যা দেখা দিলো কিনা।
ভাবলাম আবার মাইলেজ চেক করি। পরে মাথায় আসলো যে রিজার্ভে কত কি.মি. যায় এটা আগে চেক করি।
Apache 4V-র রিজার্ভে ২.৫ লিটার ফুয়েল ধরে, যার সর্বোচ্চ ২.৩ লিটার ব্যবহার উপযোগী। রিজার্ভে সিটি ও হাইওয়ে মিলিয়ে ১০০.৭ কি.মি. চালাই। যার মাঝে প্রায় ৬০ কি.মি.-ই হাই রেভে।
তাহলে ২.৩ লিটার ফুয়েল ব্যবহার উপযোগী হলে ১০০.৭÷২.৩= ৪৩.৭৮ কি.মি./লিটার।
তারপর রিজার্ভে যতটুকু চালানো যায় ততটুকু ফুয়েল শেষ করে বাইক ঠেলে পাম্পে নিয়ে যাই।
এবার অকটেন নিলাম ৬.২২ লিটার। তারপরে হাইওয়ে +ঢাকা সিটি মিলিয়ে চালালাম ২০৬ কি.মি., এরমাঝে হাইওয়ের প্রায় ৬০ কি.মি. ৬.৫-৭+ আরপিএম এ। এখনো রিজার্ভে দেইনি।
রিজার্ভের ব্যবহার উপযোগী ২.৩ লিটার বাদ দিলে হয় ৬.২২-২.৩= ৩.৯২ লিটার।
এরসাথে যদি রিজার্জের তলানির ০.২ লিটার যোগ করি তাহলে হয় ৩.৯২+০.২= ৪.১২ লিটার।
এখন চালানো ২০৬ ÷ ৪.১২= ৫০ কি.মি./লিটার।
শেষবার Shell Fuel Save ইঞ্জিন অয়েল দিতে গিয়েও দিয়েছি Ravenol semisynthetic, যদিও 4V-তে ফুলসিন্থেটিক অয়েল রিকমেন্ড করে।
⛽ আলহামদুলিল্লাহ মাইলেজে নিয়ে এখন আর কোন ঝামেলা দেখছি না।
এই দীর্ঘ সময়ে বাইকে যে বিষয়গুলো সমস্যার মনে হয়েছে-
▪️বাইকের টার্নিং রেডিয়াস বেশি। এটাতে অভ্যস্ত হতে একটু সময় লাগতে পারে।
▪️হেডলাইটের আলো কম।
▪️ব্রেক আরেকটু ভালো করার সুযোগ ছিল।
▪️অনেকে টায়ার নিয়ে অভিযোগ করে যে গ্রিপ পায়না। আমার মনে হয় এটা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন মতামত থাকতে পারে।তবে সামনে ১০০ সেকশন দেয়া উচিৎ ছিল।
আর যে বিষয়গুলো ভালো লেগেছে-
১)প্রথমেই আসে এক্সেলারেশন। এই বাজেটে মনে হয়না এরচেয়ে ভালো এক্সেলারেশন অন্য বাইকে আছে।
২)বাইকের ইঞ্জিন যথেষ্ট শক্তিশালী।
৩)অয়েল কুলিং ফিচার যা লং রাইডে ভালো পারফর্মেন্স পেতে সাহায্য করে।
৪)বাইকের ইঞ্জিন ও গিয়ার ভালো রকমের স্মুথ।
৫)সাসপেনশন বেশ ভালো। একদিনে সর্বোচ্চ ২০৯ কি.মি. বাইক চালিয়েছি ব্যাকপেইন ছাড়া।
৬)বাইকের স্টক হর্ণ যথেষ্টই কার্যকরী।
৭)ইন্সট্রুমেন্ট প্যানেল বেশ ফিচার সমৃদ্ধ।
৮)মাইলেজ যথেষ্ট। যারা ঠিকঠাক মাইলেজ পান না মনে হয় তাদের বাইকে শুরু থেকে ব্রেকইন পিরিয়ড ও অন্যান্য বিষয় মেইনটেইন করা হয় না।
এই হচ্ছে মোটামুটিভাবে আমার বাইক ব্যবহারের অভিজ্ঞতা। দাম ও পারফর্মেন্সের সমন্বয়ে বাইকটি অসাধারণ।
সর্বদা নিয়ন্ত্রিত গতিতে, হেলমেট পড়ে নিজের ও অন্যের নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল রেখে আইন মেনে বাইক চালান।
উচ্চগতিতে, নিজের ও অন্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে বাইক চালানো থেকে বিরত থাকুন।
লিখেছেনঃ Muhammad Shamim al Mamun

Related Posts

error: Content is protected !!