Keeway RKS 150 (CBS) ৪৪৪৪ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ লিখেছেন শামীম আরাফাত

বাংলাদেশের বাজারে কীওয়ে অনেকটা নতুন হলেও অনলাইনে দেখলাম এর বিশাল ইতিহাস। এর সাথে তারা বেনেলীর সাথে যুক্ত। তাই আল্লাহ ভরসা করে কিনে ফেললাম Keeway RKS 150 CBS ২৭/৩/১৮ তারিখে। যদিও আগেই কিনার ইচ্ছে ছিলো এই মডেলটি, কিন্তু অপেক্ষা করতে হয়েছিলো ৬ মাসের মত। এর আগে টিভিএস স্ট্রাইকার, এপাচি, পালসার ইত্যাদি চালিয়েছিলাম। সবগুলো নিজের ছিল না। স্ট্রাইকার ছিলো আমার প্রথম বাইক। স্থানীয় শোরুমে এই বাইকটি না থাকায় তখন স্ট্রাইকার ১২৫ কিনেছিলাম।

KeeWay RKS 150 (CBS)-তে এভারেজ মাইলেজ পেয়েছি ৪০‌-৪৫ কিঃমিঃ প্রতি লিটারে। বেশিরভাগ সময়ই অকটেন ব্যবহার করেছি। তেল ব্যবহার করার সময় মান ভালো হওয়ার জন্য জেলা সদরে গিয়ে তেল নিয়ে আসি বেশি করে, এছাড়াও লোকাল একজন ভালো ডিলার আছে উনার থেকে তেল নেই।

Keeway RKS 150 User Review

বাইকটি ব্রেক-ইন পিরিয়ড পর্যন্ত শুধু একবার ৮৫ কিঃমিঃ/ঘণ্টা স্পীড উঠিয়েছিলাম। বাকি সময় সঠিক ভাবেই মেইন্টেইন করেছিলাম। ৭৫+ হলে ভাইব্রেশন একটু বাড়ে। তবে ইঞ্জীন অয়েল ভালো থাকলে সেটা কম হবে। শুরুতে ৩০০, ৭০০, ১২০০ কিঃমিঃ তে ZIC M7 20w40 ব্যবহার করেছি। এরপর ২৫০০কি মি তে ZIC M7 20w40 ৩২০০ ও ৪০০০ কি:মি: তে Hyundai 4T 10w40 ব্যবহার করা হয়েছে। একদিনে সর্বোচ্চ রাইড ১৫২ কিঃমিঃ। মাঝে দুইবার ১০ মিনিটের বিরতি এবং টার্গেট প্লেসে আধা ঘন্টা বিরতি ছিল। শুরু থেকে কখনোই ইঞ্জীনের তাপ পায়ে লাগে নি। দুই এক বার ৮৫+ হলে একটু শন শন আওয়াজ হয়েছিলো। তবে Hyundai 4T দেয়ার পর তা হচ্ছে না আর। সর্বোচ্চ গতি তুলেছিলাম ১০২ কিঃমিঃ উইথ পিলিয়ন, উইদাউট ১১২ কি.মি। ঢাকা চিটাগং হাইওয়েতে এখনো যাওয়া হয়নি। একদিন বাস ওভারটেক করার সময় হঠাৎ সামনে কুকুর এসে পড়ে।

আল্লাহর রহমতে সিবিএস ব্রেকের কারণে (হয়তো) বড় রকমের দূর্ঘটনা থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম। বাইক নিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে গিয়েছিলাম, বাইকে একটু স্ক্র্যাচ আমার বাম পা আর হাতে স্ক্র্যচ সহ হাটুতে খুব ব্যথা পেয়েছিলাম।

সিবিএস খুবই কাজের। আমার ওজন বেশি তাই আমি রেয়ার (লেগ) ব্রেকটা একটু টাইট করে নিয়েছি। বাইকটা চালানোর সময় স্পোর্টস বাইকের মতই লাগে আর বসতে গেলে ক্রুইজ বাইকের মত মনে হয়। বাইকের স্ট্যান্ডটা একটু ঝামেলা যুক্ত। দুইবার কাত হয়ে পড়ে গিয়েছিলো। যার কারণে আমাকে ঢাকা থেকে ওয়াইস্কোপ (ওয়াই সেফ) গিয়ার এনক্লোজার আনাতে হয়েছিলো (বাম সাইড)।

Keeway RKS 150 Owner

এভারেজ ১ সেকেন্ডে ১৫ কিঃমিঃ+, ৩ সেকেন্ডে ২৫ কিঃমিঃ+, ৪ সেকেন্ডে ৪৫ কিঃমিঃ+, ৭ সেকেন্ডে ৭০ কিঃমিঃ+ গতি পেয়েছি। রেডি পিকআপ আরকি। অনেক সময়ই পালসার, এপাচিকে পেছনে ফেলতে পেরেছিলাম (সময় এবং রাস্তা বুঝে, হয়তো তারা স্লো ছিলেন)। কিন্তু জিক্সার এসএফ এর বিরুদ্ধে পারি নি।

বাইকের স্টক সিট কভারটা পাল্টানো হয়েছে। বাইকের স্টক এনজিকে প্লাগ পাল্টিয়ে এনজিকে ইরিডিয়াম প্লাগ লাগানো হয়েছে। বাইকটি অনেক ব্যালেন্সড তাই ইচ্ছে মতো বাউলি কাটা যায় (সুযোগ মত, সব স্থানে বাউলি দেয়া ঠিক নয়)। বাইকের এক্সিলারেশন বেশি হওয়ায় ওভারটেকিং সুন্দর ভাবে করা যায়। (বিঃদ্রঃ ওভারটেকিং করার আগে সামনে দেখে নিবেন। তাড়াহুড়া করে ওভারটেকিং করবেননা)

শুরুতে সকালে স্টার্ট নিতে একটু ঝামেলা করতো। রাস্তায় থেমে যেতো লো গীয়ারে। কিন্তু আরপিএম টিউনিং করার পর সমস্যা থেকে মুক্তি পেলাম।

যাই হোক, আমি কোন ভালো লেখক না, আমার মেমরীতে যতটুকু আসছে লিখেছি। দোয়া করবেন আমার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।

 

লিখেছেনঃ শামীম আরাফাত রকি