Bajaj Pulsar 150 (2017 ইডিশন)-এর মালিকানা রিভিউ লিখেছেন মাহমুদ আল রনি

আসসালামু আলাইকুম, শুভেচ্ছা সবাইকে। আমি মাহমুদ আল রনি, বয়স ২৬, আমি বরিশালে থাকি। ছোটবেলা থেকেই বাইকের প্রতি আগ্রহটা একটু বেশিই অনেকদিক ধরেই ভাবছিলাম আমার বাইক Bajaj Pulsar 150 DTSi (2017 Edition) নিয়ে ছোটখাটো একটা রিভিউ দিবো তাই আজ নিখেই ফেললাম বাজাজ পালসার ১৫০ ২০১৭ এডিশন মালিকানা রিভিউ ভুলত্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

Bajaj Pulsar 2017 Black

বাইক চালানোর প্রবনতা ছোটবেলা থেকে থাকলেও বাইক হাতে পাওয়ার সুযোগ মেলেনি কখনো। বয়স যখন ২৩ বছর তখন সর্বপ্রথম বাইক ড্রাইভিং শেখার সুযোগ মেলে। আমার বাইক চালনার প্রাথমিক হাতেখরি হয় বাজাজ প্লাটিনা ১০০ সিসি দিয়ে। পরবর্তীতে আমার কাজিনের বাজাজ পালসার ২০১২ মডেলের বাইকটি চালাই এবং তখন থেকেই বাজাজ পালসার এর উপর একটা আকর্ষন সৃষ্টি হয়। বাজাজ পালসারের সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিক হচ্ছে এটির আউটলুক। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১৪ই মে আমি বাজাজ পালসার ২০১৭ এডিশন লেজার ব্লাক কালারের বাইকটি বরিশাল Park Bangla Motors থেকে ক্রয় করি। তখন আমার বাইকের মূল্য নিয়েছিলো ১,৭৭,৫০০ টাকা।

Bajaj Pulsar 2017 Fuel Tank

বাইকটি সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হবে এর লুকিং সম্পর্কে আগের এডিশনগুলো থেকে বেশ কিছু পরিবর্তন সাধিত হয়েছে ২০১৭ মডেলের প্রথমেই চোখে পরে এর কালারের নতুনত্ব এছাড়াও বেশ কিছু পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এর ইঞ্জিন এ এর ইঞ্জিনের হর্স পাওয়ার আগের চেয়ে ১ বি এইচ পি কমানো হয়েছে এবং টর্ক ১ এন এম বাড়ানো হয়েছে ইঞ্জিনের রং ও পরিবর্তন হয়েছে। সেই সাথে এএইচও (অটোমেটিক হেডলাইট অন) ফিচার যোগ করা হয়েছে ভারতের আইন অনুযায়ী বাইকটি কেনার পরে ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ব্রেক ইন পিড়িয়ড এর নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করেছি নির্ধারিত সময়ে ইঞ্জিল অয়েল পরিবর্তন করেছি পালসার এর জন্য নির্ধারিত গ্রেড Mobil Super 4T 20W-50 এর ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করেছি এ পর্যন্ত ৩০০০ কিলোমিটার চালিয়েছি বাইকটি এখন পর্যন্ত প্রতি লিটারে আনুমানিক ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার মাইলেজ পাচ্ছি

Bajaj Pulsar 2017 Tail Light

বাজাজ পালসার ১৫০ ২০১৭ এডিশনের ভালো বৈশিষ্ট্যঃ

১. প্রথমেই বলবো এর এক্সেলারেশন এর কথা। আগের মডেলের পালসার এর তুলনায় এর এক্সেলারেশন অনেক স্মুথ। আগের মডেলের তুলনায় ১ এন এম টর্ক বেশী থাকায় এক্সেলারেশন আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গেছে।

২. এই এডিশনের বাইকের সাউন্ড আগের তুলনায় স্মুথ লাগতেছে, ওভার স্পীডে চালালেও সাউন্ড নস্ট হয় না।

৩. দুটো চাকাই টিউবলেস থাকায় ব্রেকিং সিস্টেম ও কন্ট্রোল ভালো, এছাড়াও টিউবলেস টায়ারে লিক হওয়ার ঝুকি কম।

৪. ১৫০ সিসি সেগমেন্ট হওয়া স্বত্বেও মাইলেজও তুলনামূলক ভালো।

৫. বাইকের ইঞ্জিন বিএসফোর স্ট্যান্ডার্ডে আপগ্রেট করা হয়েছে।

৬. নতুন ইঞ্জিন আগের চেয়ে পরিবেশ কম দূষন করবে।

৭. বাইকের চাকায় রঙিন ডিক্যাল দেওয়া হয়েছে যা বাইকটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

৮. স্পীডোমিটারে নতুল গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়েছে। যেটা অনেকটাই আকর্ষনীয় আগের মডেলের তুলনায়।

৯. কন্ট্রোলও বেশ ভালো।

Bajaj Pulsar 2017 speedometer

বাজাজ পালসার ১৫০ ২০১৭ এডিশনের খারাপ বৈশিষ্ট্যঃ

১. বাইকে অটোমেটিক হেডলাইট অন ফিচার যুক্ত হওয়ার ব্যাটারী সল্প সময়ে ডাউন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমার বাইকের ব্যাটারী অলরেডি ডাউন হয়ে গেছে।

২. ব্যাটারি মান বেশী একটা ভালো নয়, এর চেয়ে আগের মডেলের ব্যাটারীর মান ভালো ছিলো।

৩. বাইকের হর্স পাওয়ার কমে যাওয়াতে টপ স্পীড ও আগের মডেলের বাইকের তুলনায় কমে গেছে, যদিও আমি সিঙ্গেল অবস্থায় টপ স্পীড ১১৩ পেয়েছি।

৪. খারাপ রাস্তায় বাইক চালালে অতিরিক্ত শব্দ করে।

৫. বাইকের হেডলাইটের আলো তুলনামূলক কম।

৬. হেডলাইট সবসময় জ্বলে থাকায় হর্ন এর সাউন্ড কম, যেটা আমার কাছে ভালো লাগেনি।

Bajaj Pulsar DTSi 2017 user review

পরিশেষে বলা যায়, সবদিক বিবেচনা করে আমি বলবো বাজাজ পালসার ১৫০ ২০১৭ এডিশন সাধ্যের মধ্যে বেশ ভালো একটা বাইক। আউটলুকের দিক দিয়ে সর্বদাই এটা সেরা একটা বাইক। ২০১৭ মডলের স্পীডোমিটার সকলের নজর কেড়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। আমার বাজাজ পালসার ১৫০ ২০১৭ এডিশন এর সাথে ৩০০০ কিলোমিটারে আমি যতোটুকু অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি, উপরে তার ততটুকুই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কোনো ভুলত্রুটি হলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। সাবধানে বাইক চালান এবং সর্বদা হেলমেট ব্যবহার করুন।

লিখেছেনঃ মাহমুদ আল রনি