ইঞ্জিনের স্ট্রোক রেশিও বা সিলিন্ডার প্যাটার্ন এবং এদের বৈশিষ্ট্য

গত পোস্টে আমরা ইঞ্জিনের সিসি কি জিনিস তা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আজ আমরা জানবো ইঞ্জিনের সিসি সেইম রেখে সিলিন্ডার বোর এবং স্ট্রোক কম বেশি করে কিভাবে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ইঞ্জিন বানানো যায়, তার উপর। আরো জানবো সেইম সিসি, বাট দুইটা আলাদা বাইক কেন ভিন্ন ভিন্ন টর্ক এটিচিউড শো করে।যেমনঃ জিক্সার কেন FZs V1 চেয়ে বেশি টর্ক দেয়, প্লাটিনা কম্ফরটেক কেন এত্ত হিউজ মাইলেজ দেয়?
সিসি নির্ভর করতেসে দুইটা রাশির উপর।(সিঙ্গেল সিলিন্ডার)
১। সিলিন্ডার বোর বা সিলিন্ডার ব্যাস।
২। সিলিন্ডার স্ট্রোক বা সিলিন্ডার দৈর্ঘ্য
তাই দেখা যাচ্ছে, সিসি একি রেখে জাস্ট সিলিন্ডার বোর বাড়িয়ে,স্ট্রোক কমিয়ে এক রকম ইঞ্জিন বানানো যায় আবার বোর কমিয়ে স্ট্রোক বাড়িয়ে আরেক রকম সিলিন্ডার প্যাটার্নের ইঞ্জিন বানানো যায়,আবার বোর এবং স্ট্রোক প্রায় সমান সমান রেখে আরেক রকম ইঞ্জিন বানানো যায়। এবং প্রত্যেক প্যাটার্নের ইঞ্জিন বৈশিষ্ট অনেক ডিফারেন্ট একটি আরেকটা থেকে।

এইরকম কিছু চেঞ্জ এনে সেইম একটা নির্দিষ্ট সিসি সেগমেন্টে বোর এবং স্ট্রোক রেসিও করে ৩ টাইপ ইঞ্জিন বানানো জায়ঃ-
১। ওভার স্কয়ার ইঞ্জিন
২। স্কয়ার ইঞ্জিন
৩। আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিন

আজ এই ৩ প্রকার ইঞ্জিনের কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরবো। নিচের GIF Video এবং ছবিটি এক পলক দেখে নিন।

bore and stroke ratio

 

Bore and Stoke Ratio Animation

সিসি নিয়ে গত পোস্টটি পড়ে নিলে আজকের টপিকটি বুজতে সুবিধা হবে।

উল্লেখ্য, এখানে শুধুমাত্র সিলিন্ডার প্যাটার্ন এর কারনে কি কি বৈশিষ্ট্য(মাইলেজ,টর্ক বিষয়ক ইত্যাদি) হয় সেইগুলা আলোচনা হয়েছে। এই বৈশিষ্ট গুলো চেঞ্জ করার আরো অনেক গুলা নিয়ামক রয়েছে। আজকে টপিক্স অনলি ইঞ্জিন প্যাটার্ন তাই বাকি গুলাকে একই কন্ডিশান বিবেচনা করে আলোচনা করা হয়েছে।

ওভার স্কয়ার ইঞ্জিন:

যেই ইঞ্জিনের সিলিন্ডার বোর সাইজ তার স্ট্রোকের চেয়ে বেশি হয়,সেই টাইপের ইঞ্জিনকে ওভার স্কয়ার ইঞ্জিন বলে। অর্থাৎ এইসব ইঞ্জিনের সিলিন্ডার মোটা থাকে এবং সিলিন্ডার লম্বায় ছোট থাকে এবং পিস্টন মোটা থাকে স্কয়ার বা আন্ডার স্কোয়ার ইঞ্জিন থেকে।( যেহেতু সিলিন্ডার বোর এবং পিস্টন ডায়া সমান)

১৫০ সিসি সেগমেন্টে এই টাইপ ইঞ্জিনের অন্যতম উদাহরণ হলো Honda CBR 150 Indian & Thai (63.5mm x 47.2mm) ভার্সন ,সুজুকি GSX এবং TVS Apache RTR ১৬০ (62.0 x 52.9 mm) সিসি ।

এছাড়া ১২৫ সিসিতে হোন্ডা Cg-125(Bore 56.5 x Stroke=49.5mm), Tvs Stryker, Phoneix(57.0 x 48.8 mm), ,

১০০-110 সিসিতে Tvs Metro PLus(53 x 48 mm), , Hero Splendour plus (50mm X 49.5mm), Passion pro(50.0 x 49.5 mm)

সুবিধাঃ

1. এই টাইপের ইঞ্জিন থেকে অনেক বেশি BHP বের করা যায়। হাই rpm এ অনেক পাওয়ারফুল হয়।

২। rpm খুব কুইক ঊঠানো যায় আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিন থেকে।
এর কারন, স্ট্রোক ছোট বিধায় এর পিস্টন কে অল্প দূরত্ত উঠা-নামা করতে হয়। তাই এর কানেক্টিং রড ছোট হয়। তাই এর কানেক্টিং রডের ঘুর্নন ব্যাসার্ধ ছোট হয়। এই কারনে ইজি ঘুরতে পারে আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিন থেকেও । তাই rpm খুব ধ্রুত রেইজ করে। (gif file টা দেখবেন)

৩। এর স্ট্রোক ছোট, তাই পিস্টন অল্প দূরত্ত উঠা-নামা করে। তাই, ইনহেরেন্টলি,এই ইঞ্জিনের ভাইব্রেশন অনেক কম হয় স্কয়ার বা আন্ডার-স্কয়ার ইঞ্জিনের তুলনায়। তাই, এর ক্র্যাঙ্ক শ্যাফটের কাউন্টার ওয়েট ডিসাইন ইজি এন্ড সিমপল হয়। এবং লোব সাইজ ছোট হয়। এবং এই টাইপের ইঞ্জিনে সাধারনত “কাউন্টার ব্যালেন্সার গিয়ার শ্যাফট” লাগানোর প্রয়োজন পড়ে নাহ ভাইব্রেশন কমানোর জন্যে কারন পিস্টন কে শর্ট দূরত্ত অতিক্রম করা লাগে বিধায় “সেকেন্ডারি ইমব্যালেন্স ভাইব্রেশন” খুব কম আসে।

৪। স্ট্রোক ছোট, তাই একটা ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিনের একটি পুর্ন সাইকেল শেষ করতে কম দূরত্ত আপ ডাউন করতে হয় পিস্টনকে। যত কম দুরত্ত পিস্টন কে অতিক্রম করতে হবে,তত সে কম ফ্রিকশান ফেইস করতে হবে। তাই ওভার স্কয়ার ইঞ্জিনের পিস্টন আন্ডার স্কয়ার থেকে বেশি ডিউরেবল হয়।

৫। একি কারনে ফ্রিকশান কম ফেইস করতে হয় বিধায় ফ্রিকশান জনিত তাপ কম তৈরি হয়। তাই তূলনামুলক ভাবে ইঞ্জিন কম গরম হয় আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিন থেকে।

৬। এর ম্যাক্স টর্ক হাই আরপিএম রেঞ্জে পাওয়া যায়। তাই হাই স্পিডে অভারটেকিং করতে এই টাইপ ইঞ্জিনে বেশি কনফিডেন্ট পাওয়া যায়। তাই লং টুর এবং হাই স্পিড টুরের জন্যে এই টাইপের ইঞ্জিন খুবি চমৎকার। (সিবিয়ার থাই দিয়ে যারা হাই স্পীড বাস অভারটেক করেছেন তাঁরা জানেন কাহিনী)
৭। টপ স্পীড বেশি দেয়। (সিবিয়ার থাই আর সুজুকি জিএসেক্স এর টপ স্পিড এর কথা সবারই জানা :p )

অসুবিধাঃ

১। মাইলেজ তূলনামুলোক কম আন্ডার স্কয়ার বা স্কয়ার ইঞ্জিন থেকে। এটাই সবচেয়ে বড় নেগাটিভ দিক।
(তাই ওভার স্কয়ার CBR Thai তে মাইলেজ কম ৩২-৩৫ km/L দিলেও স্কয়ার ইঞ্জিন CBR Indonesian প্রায় ৪২-৪৮ km/l দেয়)

২। বেশি সিসি(১৫০ বা এরো বেশি) ওভার স্কয়ার ইঞ্জিনের আরেকটি সমস্যা হলো উচ্চ অকটেন নাম্বারের(Higher Ron Valued Octane or Gasoline) গ্যাসলিন(অকটেন অর পেট্রল) প্রয়োজন হয়। সিলিন্ডার উইডথ বেশি হয়ার কারনে এই ইঞ্জিনের অকটেন জনিত “নকিং প্রব্লেম” দেখা দেয়। যেটা না হয়ার জন্যে মোটামুটি উচ্চ RON ভ্যালুর অকেটেন প্রয়োজন পড়ে। তাই,তেলে ভেজাল জনিত কারনে যদি অকেটেনের RON ভ্যালু কমে যায় (Bellow 86) ,তাই নকিং জনিত
কারনে ভাইব্রেশন হবে এবং ইঞ্জিনের ক্ষতি হবে। তাই এই টাইপের ইঞ্জিনের জন্যে ভালো মানের ফুয়েল দরকার যার উচ্চ ROn value বা অকটেন নাম্বার রয়েছে।
তবে,লো সিসি( Under 150cc) ওভার স্কয়ার ইঞ্জিনে এই ধরনের প্রব্লেম হয় নাহ।

৩। এর ম্যাক্স টর্ক টা একটু বেশি rpm এ পাওয়া যায়। এবং লো rpm টর্ক অনেক কম থাকে আন্ডার স্কয়ার বা স্কয়ার ইনজিন থেকে । তাই,এক্সিলারেশন লো rpm এ কম পাওয়া যায়। তা সিটি রাইডিং, যেখানে লো আরপিএমে বেশি এক্সিলারেশন দরকার,সেখানে এই বাইক চালাইয়া মজা কম।
(এইজন্যে CBR Thai and Indian ভার্শনে লো এন্ড আরপিএমে এক্সিলেরশন কম। বাট cbr indonesian স্কয়ার ইঞ্জিন দেখে এইটায় আবার লো এন্ডে টর্ক ভালো আসে। )

 

আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিনঃ
যেই ইঞ্জিনের সিলিন্ডারের বোর তার স্ট্রোকের চেয়ে ছোট হয় অর্থাৎ সিলিন্ডার লম্বা এবং তার তুলনায় সিলিন্ডার চিকন হয় তাকে আন্ডার স্কয়ার ইনজিন বলে। মাইলেজ এবং লো আরপিএমে টর্ক বেশি থাকার কারনে বর্তমানে কমিউটার বাইক সেগমেন্টে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো এই ধরনের ইঞ্জিন।

150-165 cc সেগমেন্টে আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিনের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো Suzuki Gixxer(বোর ‎56.0 mm × স্ট্রোক 62.9 mm) । এছাড়া Pulsar 150 AS ( 56.0 mm x 60.7mm) রয়েছে।

সদ্য আসা Pulsar 160 NS (58 mm x 60.7 mm) এবং Honda CB Hornet (57.3 x 63.09mm) Under Square Engine প্যাটার্নে বানানো হয়েছে।

১২৫ সিসি সেগমেন্টে এমন বাইক রয়েছে Honda CB Shine (52 mm x 58 mm), Hero Glamour (52 mm x 58 mm), Yamaha Saluto( 52.4 x 57.9 mm.), Suzuki SLingshot.( 53.5 x 55.2 mm)

১০০-১১০ সিসি সেগমেন্টে রয়েছে Bajaj Discover 100 (47 mmx54 mm) , Platina comfortech (47.0 x 58.8 mm), HOnda Livo (50.0×55.6 mm), Dream Neo(50.0×55.6 mm), Suzuki Hayate (51.0mm x 55.3mm)

সুবিধাঃ

১। চমৎকার মাইলেজ !!! মূলত এই জন্যেই এখন বাইক ম্যানুফ্যাকচারাররা এই প্যাটার্নের ইঞ্জিনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে কারন ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ সহ আসে পাশের দেশ গুলাতে সবাই হাই মাইলেজ বাইক চায়।
(এইজন্যে FZS V-1 থেকে জিক্সারে মাইলেজ বেশি পাওয়া যায়, Platina cofortech এইজন্যে হিউজ মাইলেজ দেয়)

২। লো rpm রেঞ্জে বেশি টর্ক এবং ম্যাক্স টর্কটা তূলনামুলক কম আরপিএমে পাওয়া যায় ওভার স্কয়ার ইঞ্জিন থেকে। এইজন্যে সিটি রাইডের জন্যে এই টাইপের ইঞ্জিন চমৎকার পার্ফরমেন্স দেয়। লোয়ার আরপিএম রেঞ্জে অনেক বেশি এক্সিলেরেশন পাওয়া যায় যেটা ওভার স্কয়ার ইঞ্জিনে পাওয়া যায় নাহ বেশি একটা।
(এইজন্যে জিক্সারে fzs v1 এর চেয়ে অনেক বেশি এক্সিলারেশন পাওয়া যায়)

এর কারন হলো, স্ট্রোক লম্বা হওয়ার কারনে পিস্টনকে অনেক লম্বা জায়গা ঊঠা-নামা করতে হয়। তাই এইসব ইঞ্জিনের কানেক্টিং রড লেন্থ লম্বা থাকে।(gif ফাইল টি দেখবেন) লম্বা কানেক্টিং রড বেশি ঘুর্নন ফোর্স তৈরি করতে পারে,জেটা আসলে টর্ক। এর কারন এক্সাম্পল দিয়ে বললে দাড়ায়,একটা টাইট স্ক্রু খুলতে গেলে ছোট রেন্স এর চেয়ে লম্বা ডান্ডার রেন্স দিয়ে ইজিলি খোলা যায়। কারন লম্বা দৈর্ঘের রেন্স বেশি টর্ক তৈরি করতে পারে। কারন টর্ক হলো ফোর্স এবং ফোর্স থেকে বস্তুর দূরত্তের গুনফল। তাই দূরত্ত বাড়লে(রেন্স লম্বা হলে) টর্ক বেশ হবে।
সেইম কাহিনি আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিনের ক্ষেত্রেও । কানেক্তিং রড লম্বা হওয়ার দরুন টর্ক তা বেশি আসে।

৩। কুইক স্পীড উঠে লো আরপিএমে এক্সিলারেশন বেশি হওয়ার কারনে।(জিক্সারের দিকে তাকান)

৪। সিলিন্ডার ব্যাস ছোট হওয়ার কারনে তূলনা মুলক লো অকটেন নাম্বারের ফুয়েল দিয়েও বাইক রান করানো যায় এবং নকিং প্রব্লেম কম হয় ওভার স্কয়ার ইঞ্জিন থেকে। তাই এইসব টাইপের ইঞ্জিনের জন্যে হাই Ron Valued Octane না হলেও চলে।

অসুবিধাঃ

১। আরপিএম এর সাথে গিয়ার সামঞ্জস্য না থাকেল অনেক খট খট শব্দ করে। স্পীডের সাথে ম্যাচ করে একদম পার্ফেক্টলি গিয়ার এবং আরপিএম হতে হবে। নইলে কানেক্টিং রড থেকে খট খট সাউন্ড আসে। যেমন লোডেড অবস্থায়(যেমন হাই গিয়ারে বা বেশ ওজন থাকলে) স্পীড অনুযায়ী গিয়ার যদি না থাকে (যেমন ধরুন ১৫০ সিসি বাইকে ৩৫kph স্পিডে ৫ম গিয়ার দিলে) অথবা এমন যদি হয় যে লো স্পিডে প্রয়জন মত গিয়ার দিলেন ঠিকি বাট থটল বেশি দিয়ে রাখলেন তখন কানেক্টিং রড থেকে খট খট সাউন্ড আসে। ওভার স্কয়ার ইজিনেও আশে,বাট অনেক কম আসে এবং উপোরক্ত ব্যাপারগুলা করলেও খট খট সাউণ্ড সহজে আসে নাহ,এক্সেসিভ ভাবে করলে তখন আসে।
এর কারন হলো, কানেক্তিং রড লম্বা থাকায় আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিনের পিস্টন যখন কমপ্রেশন স্ট্রোকে BDC থেকে TDC তে আসে তখন উপর্যুক্ত কন্ডিসানে এলে কানেক্টিং রড কাঁপতে থাকে। কানেক্টিং রড ইঞ্জিনের BHP অনুযায়ী যদি বেশি বড় হয় তখন এই কাঁপুনি আরো বেড়ে যায়,তাই সাউণ্ড আরো বাড়ে। (বাজাজ Discover 100 ,platina Comfortec এ এই প্রব্লেম তীব্র আকারে দেখা যায়)।
তাই কানেক্টিং রড বিয়ারিং তূলনামূলক কম ডিউরেবল হয় বাকি দুই টাইপের ইঞ্জিনের চেয়ে।

২। এই টাইপ ইঞ্জিনের পিস্টন কে বেশি আপ-ডাউন করতে হয় ওভার স্কয়ার ইঞ্জিনের চেয়েও কারনে এই ইঞ্জিনে স্ট্রোক লম্বা থাকে। যত বেশি দূরত্ত আপ-ডাউন হবে,পিস্টনকে তত বেশি ঘর্ষন ফেইস করতে হবে সিলিন্ডারের সাথে,তাই ক্ষয়ও বেশ হবে। তাই ইঞ্জিনের লাইফ সাইকেলে আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিনের পিস্টন ওভার স্কয়ার বা স্কয়ার ইঞ্জিনের চেয়ে কম ডিউরেবল হবে পিস্টন এবং সিলিন্ডার ।

৩। একি কারনে ঘর্ষন বেশি হওয়ার দরুন ঘর্ষন জনিত তাপ বেশি তৈরি হবে ,তাই এই টাইপের ইঞ্জিন অনেকক্ষণ এক্ টানা চললে ওভার হীট হওয়ার প্রবণতা বেশি হবে স্কয়ার বা ওভার স্কয়ার ইঞ্জিনের চেয়েও। এইজন্যে লং টুরে এই টাইপের ইঞ্জিন একটু ওভার হীট বেশি হয় অন্য দুই টাইপের ইঞ্জিনের চেয়ে।

৪। ভেজাল ফুয়েল(কেরসিন বা ডিজেল মিস্রিত ফুয়েল) ইঞ্জিনের দিলে যেকোনো টাইপের ইঞ্জিন প্রব্লেম করে। বাট আন্ডার স্কয়ার ইঞ্জিন একটু বেশিই করে।

৫। এই টাইপের ইঞ্জিনের কানেক্টিনং রড লম্বা হওয়ার দরুন বেশি এটাকে বেশি পরিধি নিয়ে ঘুরতে হয়। তাই এই টাইপের ইঞ্জিনের rpm কুইক উঠতে চায় নাই এবং টপ RPM একটু কম হয় ওভার স্কয়ার ইঞ্জিনের চেয়ে।

৬। টপ স্পীড তুলনামুলক কম থাকে এই টাইপের ইঞ্জিনের(অন্য দুই টাইপের সাপেক্ষে)

৭। পিস্টন কে বেশি দূরত্ত আপ ডাউন করতে হয় বিধায় এর প্রাইমারি ইমব্যালেন্স ভাইব্রেশন দূর করতে ক্র্যাঙ্ক লোব ডিজাইন খুব ক্রিটিক্যালি করতে হয় এবং সাইজ বড় হয় লোব।
আর এই লম্বা স্ট্রোকের কারনে এর “সেকেন্ডারি ইমব্যালেন্স” জনিত ভাইব্রেশন খুব বেশি হয়। তাই সেটা দূর করতে ইঞ্জিনিয়াররা এই টাইপের বেশি সিসি ইঞ্জিনে “কাউন্টার ব্যালেন্সার শ্যাফট গিয়ার” ইউজ করতে দেখা যায়।

(যেমন স্কয়ার ইঞ্জিন ট্রিগারে ব্যালেন্সার শ্যাফট না থাকলেও আন্ডার
স্কয়ার ইঞ্জিন হর্নেটে কাউন্টার ব্যালেন্সার শ্যাফট ইউজ করা হইসে। সেইম কারনে জিক্সারেও ব্যালেন্সার শ্যাফট ইউজ করা হইসে।)

৮। ম্যাক্স টর্ক আরপিএম পর্যন্ত ভালো চমৎকার এক্সিলারেশন দেয়। বাট, এরপর অনেক কমে যায় অন্য দুই টাইপের ইঞ্জিনের চেয়ে।

 

স্কয়ার ইঞ্জিনঃ

পিস্টন বোর এবং স্ট্রোক সমান বা প্রায় সমান থাকে। এর প্রস এবং কন্স নিয়ে আর লেখলাম নাহ কারন বুঝতেই পারছেন যে এর টর্ক bhp আউটপুট সকল আরপিএম রেঞ্জে ব্যালেন্সড থাকে এবং মাইলেজ ভালো আসে। এর বৈশিষ্ট্য আসলে আন্ডার স্কয়ার আর ওভার স্কয়ার এর মাঝা মাঝি। এতক্ষন অন্য দুইটা ইঞ্জিনের জেই প্রস এনড কন্স বল্লাম, স্কয়ার ইঞ্জিন হলো সেই সমস্ত বৈশিষ্ট্যের মাঝামাঝি। সব দিকে থেকে ওয়েল ব্যালেন্সড এই ইঞ্জিন। এই টাইপের ইঞ্জিন ম্যাক্সিমাম মানুষের পছন্দ।

Yamaha R15 (58.0 mm × 58.7 mm) এর চমৎকার একটা উদাহরণ। এই হাই পার্ফরমেন্স বাইকে দেখা যায় যে লো এন্ড থেকে হাই এন্ড সকল আরপিএম রেঞ্জে চমৎকার টর্ক এবং বিএইচপি প্রোভাইড করে। HOnda CBR Indonesian (57.3mm x 57.8mm.) আরেকটি চমৎকার উদাহরণ, সিবিয়ার থাইল্যান্ড এবং ইন্ডিয়ান টা যেখানে লো আরপিএম রেঞ্জে টর্ক কম দেয় এবং মাইলেজ কম দেয়,সেখানে ইন্দোনেসিয়ান টা লো এন্ডেও ভালো টর্ক দেয়।
FZS, Fazer (57.3 x 57.9 mm), Honda Trigger(57.3x 57.8 mm), Hunk(57.3x 57.8 mm), Lifan Kpr (58.5×58.8) এইগুলা স্কয়ার ইঞ্জিনের উদাহরণ।

আজ এই পর্যন্তই। ভালো থাকবেন।

#বাইকার্স_আর_ব্রাদার্স_

 

লিখেছেনঃ সাহেদ আহসান আবীর [মডারেটর – ফুয়েল ইঞ্জেকশন ক্লাব বিডি-এফসিবি]

 

Related Posts

error: Content is protected !!