Honda Livo 110 ২৪,০০০ কিঃমিঃ ইউজার রিভিউ (লিখেছেন- মঞ্জুরুল ফাহিম)

হোন্ডা লিভো,
সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি ফাহিম । আমার মোটরসাইকেল এর নাম হোন্ডা লিভো। আমি ৩ বছর আগে মোটরসাইকেলটি কিনেছি। হোন্ডা লিভো ১১০ সিসির বাইকটা কেনা হয়েছিলো মূলত শখের বসে। আমি যখন মনে মনে নির্ধারণ করি যে একটা বাইক কিনবো তখন থেকেই আমার সাধ্যের মধ্যে পছন্দের তালিকায় সবার উপরে ছিলো হোন্ডা লিভো ১১০ সিসি। কারণ এই বাইকটির বিষয়ে আমি কিছু বন্ধুদের থেকে ভাল পরামর্শ পেয়েছি এবং আমি বাইক কেনার সময় হোন্ডা লিভোকেই প্রাধান্য দিয়েছি।
এই বাইকটি ব্যবহার করে প্রায় ২৩৭৭০ কিলোমিটার রাইড করেছি।আমার চাহিদা ছিলো যে কম বাজেটের মধ্যে সুন্দর লুকিং যুক্ত একটি মোটরসাইকেল। বাজেটের দিক থেকে বিবেচনা করলে আমি বলবো যে এই বাইকের আমার বাজেটের মধ্যে সেরা ডিজাইন রয়েছে।বাইকটির নীল রংটা আমার খুব পছন্দের। আমার কাছে এই বাইকটি সব বাইকের থেকে আলাদা অনুভুতি, পারফর্মেন্স, ব্রেকিং সিস্টেম এবং কম সময়ে হাই স্পীডে তোলা – এগুলো খুব বিষয় খুব ভাল লেগেছে।বাইকটি ব্যবহার করে মনে হয়েছে এটি অনেক টেকসই হবে। এর তেলের ট্রাংকারটা দেখতে অনেক আকর্ষণীয় এবং বিল্ড কোয়ালিটি বেশ মজবুত। আমি দীর্ঘ যাতায়াতে কোন সমস্যা বুঝতে পারিনি। আমি সর্বোচ্চ ৯০ গতিতে তুলেছি, তবে আরো বেশি গতিতে তোলা সম্ভব। আমার এই মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন খুব শক্তিশালী। এই মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন শক্তিশালী হওয়ায় যে কোন সময় দুই জন সিটে বসে আরামের সাথে চালাতে পারি। এর ইঞ্জিনের শব্দটা খুব সুন্দর। এর ইঞ্জিনটা ওভার হিট হয় না। এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভাল। একটি মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স ভাল হলে সব কিছুই ভাল লাগে। এই মোটরসাইকেলটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি আমি এটি চালিয়ে অনেক বেশি আরাম অনুভব করি। এর সিটিং পজিশন অনেক সুন্দর।
সিটটা নরম হওয়ায় চালিয়ে বেশ আরাম অনুভব করা যায়।এবার মোটরসাইকেলটির কন্ট্রোল বিষয় নিয়ে কিছু বলবো। মাটির রাস্তাতে চালালেও আমার বাইকে বসে আমি তেমন ঝাঁকুনি অনুভব করি না। এ থেকে আমি বুঝতে পারি এই মোটরসাইকেল এর সাসপেনশন গুলো খুব ভাল। মোটরসাইকেলটির ব্রেকিং সিস্টেম অনেক ভাল। এর সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক রয়েছে। তাই আমি যে কোন পরিস্থিতিতে সঠিক ভাবে মোটরসাইকেল কন্ট্রোল করতে পারি। এর চাকার গ্রিপ গুলো অনেক ভাল। গ্রিপ ভাল হওয়ার কারণে চাকা স্লিপ করে না। এই মোটরসাইকেল এর লুকিং গ্লাস দুটো দেখতে সুন্দর। এটির মাধ্যমে আমি পিছনের দৃশ্য পরিষ্কার দেখতে পাই। এই মোটরসাইকেলের তেল খরচ মোটামুটি কম। মোটরসাইকেলটি কিনার সময় শোরুম থেকে বলেছিল ১ লিটার তেলে ৬০ কিমি চলতে পারবো। আমি এখন ঠিক এমন মাইলেজই পাই। এমন মাইলেজ পেয়েও আমি খুব সন্তুষ্ট আছি। তাই মাইলেজ নিয়ে কোন প্রকারের কোন অভিযোগ নেই।
ভাল দিকঃ
– বাইকের ডিজাইন ও ফিচারস খুব সুন্দর।গ্রাফিক্স ডিজাইনগুলো সুন্দর।
– এর ইঞ্জিনের পারফরমেন্স অনেক ভালো এবং এটি অনেক শক্তিশালী।
– লং ট্যুর দিয়েও আমি ভাল ফিডব্যাক পেয়েছি।
– বাইকটি ডিস্ক ভার্শনের হওয়ায় ভাল কন্ট্রোল করা যায়।
– সিটের সাথে হ্যান্ডেলবারের কম্বিনেশন খুব ভাল।
– তেল খরচ কম।
– দাম কম। বিল্ড কোয়ালিটি মজবুত। দীর্ঘ যাতায়াতে ভাল অনুভূতি পাই। সিটিং পজিশন ভাল।
মন্দ দিকঃ
– হেড লাইটে আলো কম হয়, একটি LED বাল্ব লাগিয়ে নিলে ভাল হয়।
– কিছু কিছু পার্টস পাওয়া যায় না।
– শীতের সকালে স্টার্ট নিতে সমস্যা করে, যদিও কার্বুরেটর
মোটরসাইকেলটি পছন্দের কারণ কি?
আমার কাছে এই বাইকটি পছন্দের মূল কারণ হচ্ছে সাধ্যের মধ্যে দাম এবং সুন্দর লুকিং, যেটি আমার মত যুবক রাইডারদের জন্য আকর্ষনীয়। এই সকল বিষয় বাইকটি কেনার জন্য আমাকে খুবই প্রভাবিত করেছে। মাইলেজ সিটিঃ ৫০ কিঃমিঃ, মাইলেজ হাইওয়েঃ ৬০ কিঃমিঃ।
পরিশেষে বলতে চাই, হোন্ডা লিভো মোটরসাইকেল এর দাম, পারফরমেন্স ও মাইলেজ বিবেচনা করে আপনারা সকলেই নিশ্চিন্তে এই মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। এই মোটরসাইকেলটি সব দিক থেকেই বেশ ভাল। মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করে আমি অনেক ভাল অনুভূতি পাচ্ছি। ইঞ্জিন ভাল রাখতে হলে সব সময় ইঞ্জিনে ভেজাল মূক্ত অয়েল ব্যবহার করতে হবে। সবাইকে ধন্যবাদ।
শেষ করার একটি অনুরোধ করতে চাই সকলের কাছে, সবসময় ভাল মানের হেলমেট পড়ে বাইক রাইড করুন এবং সাথে পিলিয়ন থাকলে তার সেফটিও নিশ্চিত করুন।

Related Posts

error: Content is protected !!