বর্তমানে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রানহানির দিক থেকে এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম এবং বিশ্বে ১৩ তম। “নিরাপদ সড়ক চাই” এটি কোন নতুন চাওয়া পাওয়া নয় জাতির বরং দেশের প্রতিটি সাধারণ মানুষের মনের অন্তঃস্থলের একটি চাওয়া। আইন শৃঙ্খলার যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়া, সাধারন মানুষের অসচেতনতা কিংবা নানা কারণে কোন ভাবেই যেন দমানো যাচ্ছে না এই সড়ক দূর্ঘটনা। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্তে এই সড়ক দূর্ঘটনায় ঝরে যাচ্ছে অনেক তাজা প্রাণ।
গত বছরের জুলাই মাসে বাস চাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে ঢাকাসহ সারা দেশে শুরু হয়েছিল আন্দোলন এবং গত বারও বাইকররা মানববন্ধন করেছিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে।
এরপর চলতি মার্চ মাসে রাজধানীর নর্দ্দা এলাকায় বাসের চাপায় নিহত হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী যেদিন থেকে শুরু হয়েছিল ট্রাফিক সপ্তাহ।
২০১৭ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা দেশে সর্বমোট ৪ হাজার ৯৭৯ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ৭ হাজার ৩৯৭ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যার মধ্যে সব থেকে বেশি দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মোটরসাইকেল এবং ওই বছরে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৪৭৫ টি।
বাস-ট্রাকের মত ভারী যানবাহনের দ্বারা দূর্ঘটনার পরিমাণ বেশি হলেও বাংলাদেশে পুলিশ যেন সে বিষয়ে কিছুটা গাফেল এবং তাদের প্রধান টার্গেট মোটরসাইকেল।
ট্রাফিক সপ্তাহের প্রথম তিন দিনেই ৪৭১৯টি বাস বা মিনিমাসের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ৯৩৩৩। গত ৩১ শে জানুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহেও সেই একই রকম তথ্য। পরিসংখ্যান বলছে, মোটরসাইকেল-এর বিরুদ্ধে করা মামলার সংখ্যা বাসের বিরুদ্ধে করা মামলার প্রায় দ্বিগুণ। আর গত বছরের ১৪ই আগস্ট ট্রাফিক সপ্তাহে মোটরসাইকেল এর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৮৬৩টি। যা বাস বা মিনিবাসের বিরুদ্ধে করা মামলার তিনগুণেরও বেশি।
নিরাপদ সড়ক এবং পুলিশের দ্বারা মোটরসাইকেলিস্টদের হয়রানী ইত্যাদি বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সোশাল মিডিয়াগুলোতে বেশ লেখালিখি এবং আলোচনা শুরু হয় সাধারন বাইকারদের মধ্যে। এরপর আজ ২৯ই মার্চ ২০১৯ রোজ শুক্রবার মানিক মিয়া এভিনিউতে একত্রিত হয় বেশ কিছু মোটরসাইকেলিস্ট যাদের উদ্দ্যেশ্য ছিল একটি শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন। কিন্তু পুলিশ এবং সংসদের পারমিশন না থাকায় পরিবর্তন করা হয় মানববন্ধনের স্থান। এরপর প্রায় ১০০-১৫০ বাইকার সুশৃঙ্খল সারিবদ্ধভাবে পৌছায় প্রেস ক্লাবের সামনে এবং একটি শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন শেষ করে।
মানববন্ধনে সিনিয়র মোটরসাইকেলিস্টটরা বলেন, ‘দক্ষ বাইকার হলেই, সড়ক নিরাপদ হবে। বাইকাররা যদি সচেতন হয়, ফুটপথে গাড়ি না চালায়, মাথায় হেলমেট রাখে তাহলে মানুষের মধ্যে দ্রুত সচেতনতা সৃষ্টি হবে। পথে পথে মামলার নামে বাইকারদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। নিরাপদ সড়ক এখন সময়ের দাবি। আমরা সাধারণ চালকরা সচেতন হলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত হবে।’
পথচারী চলবে রাজপথে, বাইক চলবে রাস্তায়, সবার জন্য আইন সমান, তাহলে শুধু কেন মোটরসাইকেল থামান, বাইকার হোক সচেতন, আইন মানবে জনগণ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
নিরাপদ সড়ক গড়তে সবার এগিয়ে আসতে হবে। এবং বাস ট্রাকের মত ভারী যানবাহনগুলোকে কড়া আইনের আয়তায় আনা বেশ জরুরী। অন্যদিকে সাধারণ বাইকাররা যাতে অকারণে ভূক্তভোগী না হয় সেদিকে সরকারের বিশেষ মহল যাতে দৃষ্টি দেয় সেই আশাই ব্যক্ত করি।
- শেল এডভান্স কিনে মালয়েশিয়া মটোজিপি টিকেট জেতার সুযোগ - আগস্ট ১৪, ২০২৩
- Bike Lock Combo: চুরি অসম্ভব? বাইকের ব্যাটারী ১০০% নিরাপদ? - জুলাই ২৪, ২০২৩
- ক্যাশব্যাক ও EMI অফারে বাইক কেনার সুযোগ দিছে টিভিএস সেলস পয়েন্ট - জুলাই ১৯, ২০২৩
You must be logged in to post a comment.