মিনারেলের পর সিনথেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতে কি কি বিষয় মনে রাখতে হবে

বাংলাদেশের বাজারে মিনারেল এবং ফুল্লি সিনথেটিক ইঞ্জিন অয়েল নিয়ে অনেক কথাই প্রচলিত আছে । পক্ষে বিপক্ষে আছে অনেক মতামত । বেশিরভাগ বাইক ইউজার বাইকের সিসির সাথে ইঞ্জিন অয়েলের সম্পর্ক খুজে বেড়ায় । অনেকেই মনে করে কম সিসির বাইকের জন্য হয়তো ফুল্লি সিনথেটিক ইঞ্জিন অয়েল নয় । এটা একেবারেই ভুল ধারনা । সম্পর্ক আছে স্ট্রোক ভিত্তিক বাইকের ক্ষেত্রে যেমন, আপনার বাইকটি ফোর স্ট্রোক না টু স্ট্রোক । স্ট্রোক ভেদে ইঞ্জিন অয়েল আলাদা থাকে কিন্তু সিসি ভেদে নয়। আপনি চাইলেই যে কোন বাইকেই সিনথেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে অবস্যই আপনার বাইকের OEM (Original Equipment Manufacturer) এর মানে যা আপনার বাইকের ইঞ্জিনের সাথে যেটা রেকমেন্ডেড গ্রেড। বাইক কেনার সময় সবাইকেই একটা বই দেয় যেটাকে বলে সার্ভিস বই বা ম্যানুয়াল বই।
.
এখানে বলে রাখা ভাল, একজন বাইকার হিসাবে অবস্যই আপনার ব্যক্তিগত রুচিকে সম্মান এবং সাধুবাদ জানাই তবে সেটা চেষ্টা করবেন কারো মিথ্যে কথায় বা মনগড়া মতামতে নিয়ে নয় । আপনার নিজ থেকে যাচাই বাছাই করার একাধিক সোর্স রয়েছে সেটা কাজে লাগান । এখন চাইলেই যে কোন তথ্য আপনি আপনার মোবাইল থেকেই নিতে পারেন, তারপর নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত নিন ।
.
যেহেতু বাংলাদেশে মিনারেলের বাজার বেশি তাই চাইলেই রাতারাতি এটাকে পরিবর্তন করে ফেলা সম্ভব নয় । বাংলাদেশের বাজারে সিনথেটিক এখনো শিশু । তাই এখানে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে যা একজন বাইকার হিসেবে আপনাকে অবস্যই জানা দরকার । আমাদের দেশের বেশিরভাগ বাইকার জানে না তাদের বাইক এর সাথে কি ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড OEM করা আছে, কারন তারা ম্যানুয়াল বইটি পড়েইনা । অনেকেই শুধু মাত্র বাইক মিস্ত্রির উপর নির্ভশীল থাকেন । যা আপনার বাইকের জন্য সাংঘাতিক ক্ষতিকর । অনেকেই মনে করেন মিনারেল থেকে ফুল্লি সিনথেটিকে এলেই হাজার হাজার কিলো মাইলেজ ! আসলেই কি তাই, ফুল্লি সিন্থেটিক অয়েল কি শুধু মাইলেজ বাড়ায় নাকি আরো কিছু আছে? তবে এটাও সত্যি ফুল্লি সিনথেটিকে অবস্যই মিনারেলের চেয়ে বেশি মাইলেজ দিবে তবে ধীরে ধীরে।
.
মিনারেল থেকে ফুল্লি সিনথেটিক মজা নিতে গেলে আপনাকে অবস্যই কিছু ধাপ অনুসরন করতে হবে । কারন মিনারেলের এবং সিনথেটিকে জন্মগত কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। যা চাইলেই প্রথম ড্রেইন থেকেই মজা নেয়া সম্ভব নয় । মনে করুন আপনার বাইকের OEM আছে 20W-40 । কিন্তু আপনি এখন ব্যবহার করছেন 20W-50 এবং ১০০০ কিমি পর পর ড্রেইন দিচ্ছেন । এর মানে দাঁড়ায় আপনি আপনার বাইকের মেনুয়াল ফলো করেননি। বাইকের জন্য রেকমেন্ডেড অয়েল আপনি ব্রেক করে ফেলেছেন। তাহলে এক্ষেত্রে সিনথেটিকে আসতে চাইলে অবস্যই ভাল ফলাফলের জন্য আপনাকে ব্রেক করা গ্রেডই ব্যবহার করতে হবে । যখন ফুল্লি সিনথেটিক ব্যবহার করা শুরু করলেন তখন প্রথম ড্রেইন ১৫০০ কিঃমিঃ তে দিন, দ্বিতীয়টি দিন ১৮০০ কিঃমিঃ তে এবং তৃতীয় ড্রেনটি দিন ২০০০ কিঃমিঃ তে । চতুর্থ ড্রেইন থেকে পাবেন আসল মজা মাইলেজ তুলুন প্রায় ২৫০০ থেকে ৩০০০ কিঃমিঃ পর্যন্ত । এভাবেই ফুল্লি সিনথেটিক দিয়ে বাইকের মাইলেজ তোলার নিয়ম। ফুল্লি সিনথেটিক ব্যবহার শুরু করেই ২০০০ থেকে ২৫০০ কিংবা ৩০০০ থেকে ৩৫০০ কিঃমিঃ তে যাওয়ার চিন্তা করাটা অবস্যই যুক্তি সঙ্গত হবে না।

আবার অনেকেই ভাবে, বাইকে প্রথম থেকে ফুল্লি সিন্থেটিক ব্যবহার করা যায়না। আসলে বেপারটি কিন্তু সেরকম না। কস্ট মিনিমাইজ করার জন্য এটা করা হয়। কারন প্রথম দিকে কুইক ড্রেইন দিতে হয়। আর খরচেরও একটা বেপার থাকে।
ফুল্লি সিন্থেটিক মানে শুধু কিন্তু মাইলেজ নয়, ইঞ্জিনের লংজিবিটি বৃদ্ধি, স্মুথ রাইড, সাথে পরিবেশের উপকার।

 

লিখেছেনঃ ইমরান নাজির

 

Related Posts

error: Content is protected !!