বাইক কেনার সাথে সাথে যে দুটো জিনিস বাইকের সাথে আমরা পাই তা হচ্ছে টায়ার। এই অতিশয় ভদ্র দেখতে গোলাকৃতির বস্তু দুটি দেখতে নিরীহ হলেও আসলে সম্পুর্ন বাইকে এরাই সবচাইতে গুরুত্বপুর্ন জিনিস। কারন এদের একটু এইদিক ওই দিক হলেই আপনাকে আমাকে আসমান থেকে এই দুনিয়া দেখতে হতে পাড়ে। তাই টায়ার কেনার আগে বুঝে নেয়া দরকার আসলে এই টায়ারের কি অবস্থা, বা আরো কিছু খুটিনাটি বিষয়। আর এই খুটিনাটির মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপুর্ন বিষয় হচ্ছে, আপনার বাইকের টায়ারের “হায়াত” মানে “মেয়াদ” কত? এটা জানা জরুরি কারন কেনার সময় এটা ঠিক না থাকলে আপনি “আবুল” হবেন, এবং আপনার নিজের “হায়াত” নাই হয়ে যেতে পাড়ে। আসুন যেনে নেই “মেয়াদের” সাতকাহন।
মেয়াদ কোডঃ
পড়ার আগেই এটাচ করা ছবি থেকে ১ নম্বর ছবিটি একটু দেখেন। প্রত্যেক টায়ারে এইরকম কোড দেয়া থাকে (লাল মার্ক করা যায়গাটার মতো)। ছন্দে ছন্দে যদি বলি…… “আসেন এই টায়ারের নিকট, দেখেন এই মার্ক করা লেখা গুলো”, এখানে “১৪” দ্বারা বুঝানো হয়েছে বছরের কত তম সপ্তাহে এই টায়ার প্রস্তুত করা হয়েছে এবং “১৩” দ্বারা কত সালে তা বুঝানো হয়েছে। তাই ছবির টায়ারটির কোড ব্যাখ্যা করলে বুঝা যায়, এটি ২০১৩ সালের ১৪ তম সপ্তাহে বানানো হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, এই কোড যদি ৩ ডিজিটের হয় তবে ধরে নিবেন ২০০০ শতকের আগে মানে ১৯ শতকে বানানো।
টায়ারের জীবনঃ
জ্বি, প্রত্যেক জিনিষ ক্ষয় হয়। তাই টায়ারের একটি জিবনকাল আছে। একটি টায়ার কন্ট্রোল এনভাইরনমেন্টে সর্বোনিম্ন ৬ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছর অব্দি ঠিক থাকে। যেহেতু ৪৫ বছর অনেক বেশি লম্বা সময়, তাই ৬ বছরই আসলে সবার কাছে গ্রহনযোগ্য। তাই টায়ার কেনার সময় বানানোর মেয়াদ থেকে কত বছর হয়েছে তা গুনে নিবেন। এবং ৬ বছরের মধ্যে হলে ভালো।
টায়ারের ক্ষয়ঃ
আনকোন্ট্রল্ড এনভাইরন্মেন্টে, মানে টায়ার যখন ব্যাবহার হচ্ছে, বা গ্যারেজে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরে আছে, তখন টায়ারের জীবন আস্তে আস্তে শেষ হতে থাকে। অরক্ষিত অবস্থায় টায়ার গ্যারেজে পরে থাকলে টায়ারের ফাটল দেখা দিবে বা রাস্তায় চলতে চলতে টায়ার ক্ষয়প্রাপ্ত হবে। যখনই বুঝবেন যে এইরকম হচ্ছে তখন টায়ার মারা যাচ্ছে ধরে নিবে। এখন কথা হচ্ছে, ফাটল না হয় বুঝলাম, কিন্তু ক্ষয়ের লেভেল বুঝবো কিভাবে? বিষয়টা খুব সিমপল। ২নং ছবিতে দেখবেন যে, টায়ারের ট্রেড প্যাটার্নের খাজে খাজে ছোট ছোট কিছু বিট দেখা যাচ্ছে, এগুলাকে “টায়ার ট্রেড ইন্ডিকেটর” বলে। মানে, ট্রেড গুলা যখন ক্ষয় হয়ে এই বিড গুলা সহ ক্ষয় হতে থাকে তখন ধরে নিবেন যে, আপনার টায়ার এখন রিস্কে। এছাড়া মনে রাখবেন যে, ট্রেডের খাজ গুলা যেন ২মিলি মিটারের চেয়ে বেশি ক্ষয়প্রাপ্ত না হয়। আর হলেই বদলে ফেলেন।
সর্বশেষঃ
একটা ব্যাপার মাথায় রাখা খুব দরকার, রাস্তার কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে যে, আপনার টায়ার কতদিন বাচবে। তাই সব সময় এই টায়ার গুলোনের উপর চোখ রাখা দরকার। কারন, টায়ারের “হায়াত” বিবেচনা করার কোন নির্দিষ্ট সময় বা প্যাটার্ন নেই। কারন রাস্তায় প্রায়ই দেখবেন ক্ষয় হতে হতে টিউব বেড় হবার মতো অবস্থার পরেও মানুষ সমানে বাইক চালাচ্ছে। তাই এখানে যা আলোচনা হইয়েছে তা স্মার্ট ও সাবধানী মানুষদের জন্য। তাহলে আজকে এই পর্যন্তই। আগামিতে আরো কিছু টায়ারের কোড নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। তাই আপাতত এটাচ করা ৩ নং ছবিটি আপনারা দেখতে পাড়েন, যা এই মধ্যবর্তি সময়ে আপনাদের চরম হতাশ বা বিনোদিত করতে পাড়ে।
লিখেছেনঃ সাইফএডমিন, এফসিবিবাইকার্স আর ব্রাদার্স
Latest posts by একজন দেশি-বাইকার (see all)
- শেল এডভান্স কিনে মালয়েশিয়া মটোজিপি টিকেট জেতার সুযোগ - আগস্ট ১৪, ২০২৩
- Bike Lock Combo: চুরি অসম্ভব? বাইকের ব্যাটারী ১০০% নিরাপদ? - জুলাই ২৪, ২০২৩
- ক্যাশব্যাক ও EMI অফারে বাইক কেনার সুযোগ দিছে টিভিএস সেলস পয়েন্ট - জুলাই ১৯, ২০২৩
You must be logged in to post a comment.