Yamaha FZs V2 (DD) ১৫ হাজার কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ (লিখেছেন- সবুজ)

আমি একজন সরকারি কর্মচারী এবং তার পাশাপাশি আমি ঘোরাঘুরি করতে পছন্দ করি। এই কারনে আমার একটি ভাল বাইক দরকার ছিল যা আমাকে সবদিক থেকে ভাল পারফরমেন্স দিতে পারে। এই কথা ভেবে আমি প্রায় ১বছর আগে YAHAMA FZS V2(DD) বাইকটি কিনেছিলাম। বাইক চালানো আমার একটি শখ, এই কারণে আমার ভাল মাইলেজ এবং টেকসই বাইক প্রয়োজন ছিল। অন্যান্য ব্যবহারকারীদের মতে FZS V2(DD)তে আমার সমস্ত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার মত ফিচার রয়েছে। গত ১৫,০০০ কিলোমিটার ধরে আমি এই বিষয়গুলো অনুভব করছি। যদিও কিছু জিনিস আমার কাছে ভালো লাগে নি, তবে সামগ্রিকভাবে এই বাইকটি খুব ভালো। আজ আমি আপনাদের সকলের সাথে আমার বাইকটার কিছু ভালো ও খারাপ দিক শেয়ার করব।

 

১) ডিজাইনটি যেকোন ধরণের রাইডারের জন্য পারফেক্ট মনে হয় এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে এটি পছন্দ করি।

 

২) সিটিং পজিশন স্প্লিট হওয়ার জন্য রাইড করে অনেক আরাম মনে হয় এবং লং রাইড করেও কোন ক্লান্তি আসে না। আমি একদিনে ১০০ কিমি রাইড  করেছি এবং খুব আরমের সাথেই রাইড করেছি।

 

৩) ভাল রাস্তা কিংবা খারাপ রাস্তায় এই বাইকের সাথে পথ চলা কোন ব্যাপার নয়, সর্বদা সাসপেনশনগুলি পুরোপুরি কাজ করে বলে আমি মনে করি। আমি আমার স্ত্রীর সাথে রাইড করি এবং সে কখনও কোন ঝামেলা বা খারাপ ধরনের ঝাকুনি ইত্যাদি অনুভব করে না।

 

৪) ইয়ামাহা বাইকের সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হল তাদের আধুনিক প্রযুক্তির ইঞ্জিন। আমি এই বাইকের ইঞ্জিন থেকে ভালো পারফরমেন্সের পাশাপাশি অনেক ভালো মাইলেজও পাচ্ছি। শহরের মধ্যে পাচ্ছি লিটারে ৪০+ কিঃমিঃ এবং হাইওয়েতে পাচ্ছি ৪৯ কিঃমিঃ মাইলেজ নিয়ে আমি নিশ্চিন্ত।

 

৫) আপ রাইট হ্যান্ডেলবারের ফলে বাইকটি চালিয়ে অনেক আরাম এবং শুধু শহরের মধ্যেই না লং রাইডে রাইড করলে মনে হবে যে বাইকের কন্ট্রোল আপনার হাতের মুঠোয় এবং অনেক আরামদায়ক।

 

৬) সামনে এবং পেছনে উভয় দিকেই মোটা টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে যার কারণে বৃষ্টি কিংবা যে কোন রাস্তায় খুব ভালো গ্রিপিং পাওয়া যায়।

 

৭) এই সেগমেন্টে অন্যান্য ব্রান্ডের বাইক এর দাম বিবেচনা করলে এই বাইকের দাম অনুযায়ী আরেকটু আপডেট ফিচারস করলে ভালো হত।

 

৮) রং কোয়ালিটি নিম্ন মানের, (শাড়ি গার্ড)
গিয়ার শিফটিং স্পেস কম।

 

৯) মিটার কনসোল দাম অনুযায়ী আরও আপডেট হওয়া উচিত ছিলো।

 

১০) ইয়ামাহা এই বাইকের সাথে ডুয়াল হর্ন সরবরাহ করলের আরও ভাল হত।

 

১১) বাইকের বিল্ড কোয়ালিটিটাও দাম অনুযায়ী আপডেট করা দরকার। কারণ আমি ডিস্ক প্লেটে হালকা মরিচা দেখতে পেয়েছি।

 

১২) একসাথে 40 থেকে 50 কিলোমিটার চালানোর পর মনে হয় সাউন্ড অটোমেটিক চেঞ্জ হয়ে যায়।

 

১৩) বাইকের রেডি পিক আপ কম। বাইকটির এক্সেলেরেশন এই সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের থেকে কম হওয়ায় হাইওয়েতে রাইডের সময় বড় বড় বাস ট্রাক ওভারটেক করতে একটু সমস্যা হয়।

 

১৪)বাইকের ক্লাচ প্লেটের খুবই সমস্যা। খুব তারাতারি ক্লাচ প্লেট পরিবর্তন করতে হয়েছে আমার। অন্য কারো কাছে হয়েছে কিনা তা জানি না তবে আমার কাছে ক্লাচের সমস্যা মনে হয়েছে।

 

১৫) ১২০০০ কিমি রাইড করার পর টাইমিং চেইনে সমস্যা হয়েছে । আমি টাইমিং চেইন পরিবর্তন করেছি। অন্য ব্যবহারকারীদের কি অবস্থা জানি না তবে আমার কাছে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।

 

সব মিলিয়ে এই বাইকটি অবশ্যই ব্র্যান্ড ভ্যালু, ফিচার এবং তাদের পারফরম্যান্সের কারনে একটি মাস্টার পিস, আমি এই বাইকটি আমি নিয়ে সন্তুষ্ট, তবে উল্লিখিত কয়েকটি বিষয় যদি সমাধান করা যায় তবে বাইকটি আরো ভালো পারফরম্যান্স দিবে। কেউ যদি ১৫০ সিসি বাইক কেনার জন্য মন স্থীর করে থাকে তবে এই বাইকটি নিশ্চিতভাবেই ভালো পছন্দ হতে পারে, সবাইকে ধন্যবাদ।
লিখেছেন- সবুজ 

Related Posts

error: Content is protected !!