২০১৭ সালে দেশে রেকর্ড পরিমাণ মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে। বাজারে থাকা ১৫টি ব্র্যান্ড এ সময় ৩ লাখ ৮৭ হাজার মোটরসাইকেল বিক্রি করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৪৪ শতাংশ বেশি। এই খাতের কোম্পানিগুলো বলছে, এত বেশি বিক্রি আর কখনোই হয়নি। ভবিষ্যতে বিক্রি আরও বাড়বে।
মোটরসাইকেল বিক্রি এত বাড়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দাম কমা ও মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, যানজট এড়িয়ে চলার জন্য দেশের বিভিন্ন শহরে বাহন হিসেবে মোটরসাইকেল দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। গ্রামেও একটু সচ্ছল পরিবারগুলো মোটরসাইকেল কিনছে।
মোটরসাইকেল বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে দেশে ১ লাখ ৮০ হাজার মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছিল। গত পাঁচ বছরের মধ্যে ওই বছরই সবচেয়ে কম বিক্রি হয়। এর কারণ ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিবন্ধনের কড়াকড়ি। এরপর বিক্রি দ্রুত বেড়েছে। উদ্যোক্তা জানিয়েছে, বাংলাদেশে এখন মোটরসাইকেলের বাজারের আকার চার থেকে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। এই বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১১০ সিসি (ঘন সেন্টিমিটার) ইঞ্জিন ক্ষমতার মোটরসাইকেল, মোট মূল্যের দিক দিয়ে বাজারে যার অংশীদারত্ব প্রায় ৫০ শতাংশ। দাম তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় এবং কম তেলে বেশি পথ চলার সুবিধার কারণে এই শ্রেণির মোটরসাইকেল ক্রেতাদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। এই হিসাবে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ১৫০ সিসি ইঞ্জিন ক্ষমতার মোটরসাইকেল। এটির বাজার অংশীদারত্ব প্রায় ৩৩ শতাংশ। অন্যদিকে ১২৫ থেকে ১৩৫ সিসি ক্ষমতার মোটরসাইকেলের বাজার অংশীদারত্ব প্রায় ১৭ শতাংশ।
দেশে বাজাজ, টিভিএস, হিরো, হোন্ডা, ইয়ামাহা, সুজুকি, মাহিন্দ্রা ও কিছু চায়না ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল আমদানি করেন আমদানিকারকেরা। অন্যদিকে রানারসহ আরও দুটি স্থানীয় ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল দেশে তৈরি হয়। মোট বাজারের ৯০ শতাংশ আমদানিকারকদের দখলে, বাকিটা দেশীয় উৎপাদকদের দখলে। আমদানি করা মোটরসাইকেলের বেশির ভাগ আসে ভারত ও চীন থেকে। দেশীয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো ইঞ্জিন বাইরে থেকে আমদানি করে বাকি সব উপকরণ দেশে তৈরি করে।
দেশের বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ভারতীয় ব্র্যান্ড বাজাজের মোটরসাইকেল। ডিসকভার, পালসারের মতো পুরোনো জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের সঙ্গে বাজাজ সম্প্রতি বাজারে এনেছে অ্যাভেঞ্জার ও ভি নামের দুটি নতুন ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি ১ লাখ ৩৪ হাজার ইউনিট মোটরসাইকেল বিক্রি করেছে।
বিক্রির হিসাবে বাজারে এখন দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারতের আরেকটি ব্র্যান্ড টিভিএস। এই ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল বাংলাদেশে আমদানি করে সনি-র্যাংগস গ্রুপ। টিভিএস জানিয়েছে, ২০১৭ সালে তারা প্রায় ৮০ হাজার মোটরসাইকেল বিক্রি করেছে, যা আগের বছরে ছিল ৪৩ হাজার।
দেশে ২০১৪ সাল থেকে হিরো ব্র্যান্ড নামে মোটরসাইকেল বাজারজাত করছে ভারতের হিরো মোটোকর্প। বাংলাদেশে তাদের পরিবেশক নিটল-নিলয় গ্রুপ। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি ‘হিরো হোন্ডা’ নামে মোটরসাইকেল বাজারজাত করত। প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে দেশে হিরো ব্র্যান্ডের প্রায় ৫০ হাজার মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৭৫ শতাংশ বেশি।
মোটরসাইকেলের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড জাপানের হোন্ডাও গত বছর ভালো ব্যবসা করেছে। হোন্ডা বাংলাদেশের আর্থিক বিভাগের প্রধান আশিকুর রহমান বলেন, ২০১৭ সালে হোন্ডা ২৮ হাজার ১৭০টি মোটরসাইকেল বিক্রি করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৭৩ শতাংশ বেশি।
জাপানের আরেকটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ইয়ামাহার মোটরসাইকেল বিক্রিও ২০১৭ সালে রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। গত বছর ইয়ামাহার ১৬ হাজারের বেশি মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে, ২০১৬ সালে ছিল ৩ হাজার। ২০১৭ সালে সুজুকি মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে ১৬ হাজার ৭০০টি, যা আগের বছর ছিল ১৩ হাজার।
বাজারের বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বেশ ভালোভাবে টিকে আছে দেশীয় ব্র্যান্ড রানার। বিশেষ করে কম সিসির মোটরসাইকেলের বাজারে তাদের দখল বেশি। রানার জানিয়েছে, তারা ২০১৭ সালে ৩২ হাজার ৭০০ মোটরসাইকেল বিক্রি করেছে, যা ২০১৬ সালে ছিল ২৬ হাজার। রানারের জনসংযোগ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক ওয়াহিদ মুরাদ বলেন, সেবার মান রানার মোটরসাইকেলের বিক্রি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
সূত্রঃ প্রথম আলো
- শেল এডভান্স কিনে মালয়েশিয়া মটোজিপি টিকেট জেতার সুযোগ - আগস্ট ১৪, ২০২৩
- Bike Lock Combo: চুরি অসম্ভব? বাইকের ব্যাটারী ১০০% নিরাপদ? - জুলাই ২৪, ২০২৩
- ক্যাশব্যাক ও EMI অফারে বাইক কেনার সুযোগ দিছে টিভিএস সেলস পয়েন্ট - জুলাই ১৯, ২০২৩