মোটরসাইকেলের চেইন এবং স্প্রোকেট মেইনটেন্যান্স টিপস

বাইকের চাকা ঘুরাতে যে পার্টসগুলো প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করে, সে সব পার্টসের মধ্যে চেইন ও স্প্রোকেট অন্যতম। তাই বাইক প্রেমীদের জন্য আজকের লেখাটি সাজানো হয়েছে চেইন এবং স্প্রোকেটের যত্ন কে ঘিরে।

আজকের লেখা টা পড়লে জানতে পারবেন: 

১) চেইন এবং স্প্রোকেট নষ্ট হলে বাইকের কি কি সমস্যা হতে পারে।

২) চেইন ও স্প্রোকেটের প্রপার যত্ন নিতে যা যা প্রয়োজন ও প্রাপ্তি স্থান।

৩) চেইন এবং স্প্রোকেট যত্নের পদ্ধতি।

 

১) চেইন এবং স্প্রোকেট নষ্ট হলে বাইকের কি কি সমস্যা হতে পারে

• চেইন ও স্প্রোকেট খারাপ হয়ে গেলে চলন্ত অবস্থায় চেইন পরে বা ছিঁড়ে যেতে পারে, এতে বড় রকমের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

• চেইনের সমস্যা হলে গিয়ার শিফট করার সময় সমস্যা হয়।

• চেইনের দূর্বলতার জন্য বাইক চালানোর সময় অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হতে পারে।

• চেইন স্প্রোকেট দূর্বল হলে বাইকের ইনস্ট্যান্ট থ্রোটল কমে যায়।

• চেইন এবং স্প্রোকেট দূর্বল হলে মাঝে মাঝেই স্প্রোকেটের দাঁতগুলো চেইন মিস করে। এতে করে থ্রোটল অনুযায়ী বাইক রেসপন্স করতে পারে না।

• চেইন বার বার লুজ হয়ে যায়। এমন কি অতিরিক্ত লুজ হয়ে গেলে, চেইন ফেঁসে যেতে পারে। এতে করে বাইকের চাকা পুরো লক হয়ে বড় দুর্ঘটনা হতে পারে।

• চেইন বা স্প্রোকেট খারাপ হলে বাইক চালানোর সময় নয়েজ আসে। এটা বিরক্তির কারণ হতে পারে।

• বাইকের গতি কমে যায়। বাইকের টপ স্পীড গেইন করা যায় না।

• চেইন দূর্বল হলে ঊর্ধ্বগামী রাস্তায় বাইক চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়।

• চেইন এবং স্প্রোকেটের সমস্যা হলে বাইকের পাওয়ার কমে যায়।

• চেন লুজ হয়ে গেলে বাইকের সুইংআর্ম ক্ষতি গ্রস্ত হয়।

 

২) চেইন ও স্প্রোকেটের প্রপার যত্ন নিতে যা যা প্রয়োজন ও প্রাপ্তি স্থান

চেইন ও স্প্রোকেট প্রপার যত্ন নিতে বেশ কিছু জিনিস দরকার হয়। সেগুলো হলো:

• কেরোসিন তেল/পেট্রোল

• ওয়েল ক্যান

• নরমাল ব্রাশ

• চেইন ক্লিনিং ব্রাশ

• টুল কীট সেট

• মাইক্রো ফাইবার কাপড়

• চেইন ক্লিনিং লুব

• WD 40

• চেইন লুব

• ইঞ্জিন ওয়েল ইত্যাদি

প্রাপ্তি স্থান: এই সব গুলো প্রোডাক্ট পেয়ে যাবেন vovopip.com

৩) চেইন এবং স্প্রোকেট যত্নের পদ্ধতি

১ম পদক্ষেপ: বাইকটি ডাবল স্ট্যান্ড করে নিতে হবে অথবা এমন জায়গায় রাখতে হবে যেন পিছনের চাকা ঘূর্ণায়মান থাকে। যেসব বাইকে ডবল স্ট্যান্ড নেই সেগুলোর জন্য আফটার মার্কেট সাপোর্ট স্ট্যান্ড বা প্যাড-ডক ব্যবহার করা যেতে পারে।

২য় পদক্ষেপ: একটি ওয়েল ক্যানে কেরোসিন তেল বা পেট্রোল ভরে নিতে হবে। এরপর বাইকের পিছনের চাকাকে ঘূর্ণায়মান রেখে ওয়েল ক্যানটি দিয়ে ভালো ভাবে চেইন ও স্প্রোকেট ভিজিয়ে নিতে হবে।

৩য় পদক্ষেপ: একটি নরমাল ব্রাশের সাহায্যে চেইন ও স্প্রোকেটে তেল (কেরোসিন তেল/পেট্রোল) মাখিয়ে নিতে হবে এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।

৪র্থ পদক্ষেপ: তারপর চেইন ক্লিনিং ব্রাশ দিয়ে ভালো ভাবে চেইনে লেগে থাকা ময়লা গুলো পরিষ্কার করতে হবে। চেইন পরিষ্কার হয়ে গেলে একটি সাধারণ ব্রাশের সাহায্যে পিছনের ও সামনের চেইন স্পোকেট পরিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে ওয়েল ক্যান দিয়ে অল্প করে ওয়েল স্প্রে করা যেতে পারে।

৫ম পদক্ষেপ: সামনের স্প্রোকেট পরিষ্কার করার সময় স্প্রোকেটের চেম্বারটি অবশ্যই পরিষ্কার করে নিবেন। সেক্ষেত্রে টুল কীট সেট এর সাহায্যে স্প্রোকেট কাভারটি খুলে নিতে হবে।

৬ষ্ঠ পদক্ষেপ: এ পর্যায়ে চেইন এবং স্প্রোকেটটি একটি মাইক্রোফাইবার কাপড়ের সাহায্যে মুছে নিতে হবে। চেইন ও স্প্রোকেট মোটামুটি পরিস্কার হওয়ার পরে চেইন ক্লিনিং স্প্রে দিয়ে ভালো ভাবে চেইনটি আরেকবার পরিস্কার করে নিতে হবে। এতে করে কোনো রকম তেল চিটচিটে ভাব বা ময়লা চেনে থাকবে না। এ সময় খেয়াল রাখতে হবে যে চেন বা স্পোকেট মরিচা ধরেছে কিনা! যদি কোথাও মরিচা ধরে যায় তাহলে WD-40 ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে জং গুলো রিমুভ হয়ে যাবে।

৭ম পদক্ষেপ: সব শেষে চেইনে ভালো মানের চেইন লুব দিয়ে লুব করতে হবে। এক্ষেত্রে ইঞ্জিন ওয়েল বা গিয়ার অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে একটি ওয়েল ক্যানের সাহায্যে চেইনে ইঞ্জিন ওয়েল বা গিয়ার অয়েল দিতে হবে প্রপার ডিস্ট্রিবিউশনের জন্য। তবে চেইন লুব ব্যবহার করা উত্তম।

মনে রাখবেন একটি বাইক থেকে প্রপার আউটপুট পাওয়ার জন্য চেইন এবং স্প্রোকেট এর ভালো থাকা খুবই প্রয়োজন।

মন্তব্য করুন